রাজীব কুমার। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে আইনজীবীদের ধর্মঘট চলছে। তাই তিনি আদালতে গিয়ে সুরাহা চাইতে পারছেন না। এই যুক্তি দিয়ে রাজীব কুমার আজ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন। তাঁর আর্জি, আইনজীবীদের ধর্মঘট ওঠার পরে যেন তাঁকে সাত দিনের সময় দেওয়া হয়।
কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারের এই পদক্ষেপ দেখে আজ রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কি তার মানে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারির আশঙ্কাই করছেন? নির্বাচন কমিশন তাঁকে রাজ্য পুলিশের সিআইডি-র এডিজি পদ থেকে বদলি করে দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠিয়েছে। এ বার বুথফেরত সমীক্ষা যে ভাবে কেন্দ্রে ও পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভাল ফলের ইঙ্গিত দিয়েছে, তার ফলে সারদা-তদন্ত নিয়েও চাপ বাড়বে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
গ্রেফতারি থেকে রক্ষাকবচ তুলে নিলেও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ রাজীব কুমারকে সাত দিনের সুরাহা দিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, এই সাত দিনের মধ্যে রাজীব আদালতে গিয়ে আগাম জামিনের জন্য আর্জি জানাতে পারেন। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট-সহ অন্য আদালতে এখন ধর্মঘট চলছে। আজ বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার অবকাশকালীন বেঞ্চে রাজীবের হয়ে আইনজীবী আস্থা শর্মা আর্জি জানিয়ে বলেন, কলকাতায় আইনজীবীদের ধর্মঘটের জন্য রাজীবকে আরও সময় দেওয়া হোক। কিন্তু বিচারপতিরা যুক্তি দেন, রাজীব কুমারের মামলায় রায় দিয়েছে তিন বিচারপতির বেঞ্চ। সেই রায়ে কোনও সংশোধন প্রয়োজন হলে তিন বিচারপতিকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাই বিচারপতিরা রাজীবের আইনজীবীকে সুপ্রিম কোর্টের সেক্রেটারি জেনারেলের কাছে ওই বেঞ্চ গঠনের জন্য আবেদন জানাতে বলেন। বিকেলেই এই আবেদন জমা করা হয়েছে।
রাজীব কুমারের পক্ষে আশার খবর হল, গত ২ মে সুপ্রিম কোর্টেরই বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চ অন্য একটি মামলায় অভিযুক্তকে কলকাতায় আইনজীবীদের ধর্মঘটের জন্য বাড়তি সময় দিয়েছে। ওই বেঞ্চ জানিয়েছে, আইনজীবীদের ধর্মঘট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা যাবে না। ধর্মঘট শেষ হলে অভিযুক্ত আগাম জামিনের আর্জি জানানোর সময় পাবেন।
রাজ্য সরকারের অন্যতম আইনজীবী বিশ্বজিৎ দেব বলেন, ‘‘রাজীব কুমারকে এই সুযোগ দেওয়া না হলে স্বাভাবিক ন্যায় মিলবে না। সংবিধানের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হবে। সুপ্রিম কোর্টেই এ আর আন্তুলে মামলাতে বলা হয়েছে, আগাম জামিন চাওয়ার সুযোগ দিতে হবে। তা ছাড়া আইনজীবীদের ধর্মঘটের কারণে সুপ্রিম কোর্ট এই ধরনের সুরাহা আগেই দিয়েছে।’’
সিবিআই এখনও পর্যন্ত রাজীবের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করলেও সিবিআইয়ের একটি সূত্র দাবি করছে, সাত দিনের সময়সীমা শেষ হলেই তাঁরা রাজীবের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারেন। তাঁকে গ্রেফতার করার মতো যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ সিবিআইয়ের হাতে রয়েছে। সারদার সুদীপ্ত সেনের অধীন এক কর্মীর সঙ্গে রাজীবের অন্তত পাঁচ বার ফোনে কথোপকথনের রেকর্ডও তাঁরা পেয়েছেন। সারদার অভিযুক্তদের ‘কল ডিটেল রেকর্ডস’-এই রাজীব কুমার কারচুপি করেছিলেন বলে সিবিআইয়ের অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy