Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Rajib Banerjee

দলের আতসকাচে রাজীব, তবু অটল নিজের বক্তব্যে

দুর্নীতিতে দলের ‘রাঘববোয়ালরা’ জড়িত বলে রাজীবের বক্তব্যে দলের শীর্ষনেতৃত্ব যথেষ্ট ক্ষুব্ধ বলে সূত্রের খবর।

বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২০ ০৫:৫৭
Share: Save:

দুর্নীতির প্রশ্নে তৃণমূলে ‘রাঘববোয়ালদের’ নিশানা করা থেকে সরতে নারাজ বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। দিনকয়েক আগে তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হাওড়ার দলীয় পর্যবেক্ষক ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, কিছু বলার থাকলে দলের ভিতরে নেতৃত্বকে বলা উচিত। বাইরে নয়। সেই নিষেধ-বাণী কার্যত নস্যাৎ করে রাজীব মঙ্গলবার ফের বলেছেন, ‘‘যা বলার বলেছি। আমি ওই বক্তব্য থেকে তিনি সরছি না।’’

এ দিন বালিতে বনমহোৎসবের অনুষ্ঠানে রাজীবের সঙ্গেই ছিলেন ফিরহাদও। তিনি অবশ্য বক্তৃতায় ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘‘আমরা যাঁরা প্রবীণ হয়ে গিয়েছি, তাঁরা আগামী দিনে যাঁদের দিকে তাকিয়ে রয়েছি, তাঁদেরই এক জন রাজীব।’’ রাজীবও মঞ্চে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর লড়াইয়ের কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘কোথাও কোনও দুর্নীতি রেয়াত করা হবে না। যেমন, প্রয়োজনে গাছ কাটা, বন্যপ্রাণী হত্যা, পাচার রুখতে ছদ্মবেশে জঙ্গলে হানা দেব।’’

এ দিকে দুর্নীতিতে দলের ‘রাঘববোয়ালরা’ জড়িত বলে রাজীবের বক্তব্যে দলের শীর্ষনেতৃত্ব যথেষ্ট ক্ষুব্ধ বলে সূত্রের খবর। দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে, বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ কিছুদিন আগে রাজীবকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলার পরে মন্ত্রী ১৫ দিনের মধ্যে মামলা করার যে হুমকি দিয়েছিলেন, তার কী হল? রাজীবের ঘনিষ্ঠ মহল থেকে অবশ্য ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে, বিজেপি সভাপতি পরে মন্ত্রীর কাছে ভুল স্বীকার করেছেন। কিন্তু অনেকেরই প্রশ্ন দুর্নীতির অভিযোগ এবং মামলার হুমকি যখন প্রকাশ্যে এসেছে তখন ব্যক্তিগত ভাবে ভুল স্বীকার করা না করায় কী আসে যায়?

রাজীব অন্য কোনও রাজনৈতিক পদক্ষেপের কথা ভাবছেন কিনা, বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন এবং জল্পনা শুরু হয়েছে তা নিয়েও। যদিও মন্ত্রীর দাবি, তিনি তৃণমূলের সৈনিক এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ছেন। পর্যবেক্ষকদের অনেকে অবশ্য মনে করেন, ভোটের আগে এই ধরনের বিতর্ক বাড়িয়ে তুলতে চাইবেন না তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে রাজীবের এই সব কার্যকলাপ দল যে ভাল চোখে দেখছে না সেটা তাঁকে স্পষ্ট বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তাঁর কার্যকলাপের উপরে নজর রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর সঙ্গে কথা বলেছেন রাজীব। এ দিন ফিরহাদের সঙ্গে তিনি আলাদা বৈঠক করেন। যদিও এ সব নিয়ে কিছুই বলতে চাননি ফিরহাদ। তাঁর কথায়, ‘‘দলের ভিতরে কী হচ্ছে, বাইরে সেই সব নিয়ে আলোচনা করব না।’’ অন্য দিকে হাওড়ার আর এক মন্ত্রী রাজীব-বিরোধী বলে পরিচিত অরূপ রায়কেও দলীয় নেতৃত্ব আপাতত চুপ করে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

বস্তুত অরূপবাবুকে লক্ষ্য করেই রাজীব প্রথম তিরটি ছোঁড়েন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajib Banerjee TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE