আদালত চত্বরে ধৃত মহম্মদ সেলিম শেখ। বালুরঘাটে অমিত মোহান্তর তোলা ছবি।
রানাঘাট কাণ্ডে জড়িত দুষ্কৃতীরা বাংলাদেশ থেকে পাসপোর্ট করেই এ রাজ্যে এসেছিল বলে জানতে পেরেছে সিআইডি। ফেব্রুয়ারির শেষে এ রাজ্যে ঢুকে পরপর বেশ কয়েকটি জায়গায় তারা ডাকাতি করে। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের একটি রোগ নির্ণয় কেন্দ্রেও তারা ডাকাতি করে। তারপরে মালদহ ও হাওড়ার উলুবেড়িয়াতেও তারা ডাকাতি করেছে বলে সিআইডি জানতে পেরেছে। তার পরে তারা রানাঘাটে পৌঁছয়। রানাঘাট কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে মুম্বই থেকে ধৃত মহম্মদ সেলিম শেখকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তথ্য পেয়েছে সিআইডি। তাকে জেরা করে পুরো দলটিকে চিহ্নিতও করা গিয়েছে বলে সিআইডি-র দাবি।
মঙ্গলবার সিআইডি-র এক ইনস্পেক্টরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্তকারী দল মহম্মদ সেলিম শেখকে কলকাতা থেকে নিয়ে এসে স্থানীয় সিজেএম কোর্টে হাজির করায়। বিচারক সঞ্জয় চৌধুরী তদন্তকারীদের আবেদন মঞ্জুর করে ধৃতকে ১৪ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন। এর পর তাকে নিয়ে সিআইডি-র দলটি কলকাতায় রওনা হয়ে যায়।
বালুরঘাটের ওই ডাকাতির তদন্ত করছে সিআইডি-ই। ধৃতদের জেরা করে তারা জেনেছে, রানাঘাটের একটি মিশনারি স্কুলে ঢুকে ডাকাতি করে সেখানকার বৃদ্ধা সন্ন্যাসিনীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তরাই গত ৮ মার্চ রাতে বালুরঘাটের ওই রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে হানা দিয়ে নৈশপ্রহরীদের বেঁধে রেখে লুঠপাট করে। বালুরঘাট থানার আইসি বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ওই কেন্দ্রের সিসিটিভি ফুটেজে কয়েকজন দুষ্কৃতীর ছবি ধরা পড়লেও তাদের শনাক্ত করা যায়নি।
এর পর রানাঘাট কাণ্ডে অভিযুক্তদের অন্যতম মহম্মদ সেলিম শেখকে গ্রেফতারের পরই বালুরঘাটের ডাকাতিতেও দলটি জড়িত বলে সিআইডি জানতে পারে। তখন বালুরঘাট থানার পুলিশ ওই সিসিটিভি-র ফুটেজ কলকাতায় পাঠায়। সেখানে সেই ছবি মিলিয়ে সিআইডি বুঝতে পারে, এই মহম্মদ সেলিম শেখই দু’টি ঘটনাতে যুক্ত।
মহম্মদ সেলিম শেখ এবং হাবরা থেকে ধৃত গোপাল সরকারকে জেরা করে সিআইডি জেনেছে, বালুরঘাটে পুরসভা ও একটি বেসরকারি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত মাতৃসদনের নীচে ওই রোগ নির্ণয় কেন্দ্রটিতে ডাকাতিতে মোট সাত থেকে আট জন দুষ্কৃতী জড়িত। পুরো দলটিই দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে দিয়ে পাসপোর্ট নিয়ে ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ বালুরঘাটে আসে। বালুরঘাটে ডাকাতির পরে তারা মালদহ, উলুবেড়িয়ায় ডাকাতি করে হাবরা যায়। এর পরে ১৩ মার্চ রানাঘাট কাণ্ডের পরে ওই দলটির বেশিরভাগই আবার সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ পালিয়ে যায় বলে সিআইডি-র সন্দেহ।
ধৃত গোপাল সরকারের মেসোমশাই মিলন সরকারই এই দলটির মূল পান্ডা বলে সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। মিলন হাবরায় থাকত। সেখান থেকে সে যে ভাবে নির্দেশ দিয়েছে, সে ভাবেই দলটি সে ভাবেই পরপর দুষ্কর্ম ঘটিয়েছে। দুষ্কৃতী দলের অধিকাংশই মাদকাসক্ত বলেও জানিয়েছে সিআইডি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy