মধ্যমণি: নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বুধবার কৃতীদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
সভার আয়োজন করা হয়েছিল মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, আইসিএসই এবং সিবিএসই বোর্ডের কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য। সেই সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাছে পেয়ে ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত নানা আবেদন জানালেন কৃতীরা। উচ্চ মাধ্যমিকের অন্যতম প্রথম রাজর্ষি বর্মণ জানালেন, তাঁর স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক বদলি হয়ে যাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী যেন এই বদলি রদ করে দেন। উচ্চ মাধ্যমিকে মেয়েদের মধ্যে প্রথম সংযুক্তা বসুর আবেদন, তাঁর পারিবারিক অবস্থা ভাল নয়। মুখ্যমন্ত্রী যদি একটু দেখেন।
অন্যান্য বছরের মতো মুখ্যমন্ত্রী বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ওই কৃতী-সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন। কোচবিহার জেনকিন্স স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক শঙ্কর দত্তকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর বদলি ঠেকাতে আন্দোলন নেমেছে পড়ুয়ারা। এ বার উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা-তালিকায় প্রথম দশে ঠাঁই পেয়েছেন ওই স্কুলের রাজর্ষি-সহ পাঁচ জন। শিক্ষক শঙ্করবাবুর বদলি রদ করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একযোগে আবেদন জানান তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী এ দিনের সভায় প্রত্যেক টেবিলে ঘুরে ঘুরে কৃতীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তখনই রাজর্ষি, সংযুক্তারা নিজেদের মনের কথা বলার সুযোগ পান। এমনকি লিখিত আবেদনও তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বিষয়গুলি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
গত বছর থেকেই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের বোর্ডের কৃতীরা প্রচুর নম্বর পাচ্ছেন। আগে মূলত সর্বভারতীয় বোর্ডের পড়ুয়ারাই এত নম্বর পেতেন। প্রশ্ন উঠছিল, এ রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের প্রাপ্ত নম্বরের হার এমন উজ্জ্বল হয় না কেন? কম নম্বর নিয়ে তাঁরা উচ্চশিক্ষা বা অন্যান্য প্রতিযোগিতা ক্ষেত্রে সর্বভারতীয় বোর্ডের পড়ুয়াদের সঙ্গে এঁটে উঠবেন কী ভাবে? নম্বরের ক্ষেত্রে সেই বিভেদ ক্রমশ দূর হতে থাকায় এ দিন সন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যের বোর্ডের ছেলেমেয়েরাও ৯৮ শতাংশ, ৯৯ শতাংশ, এমনকি ১০০ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। ফলে এত দিন যে-ফারাক ছিল, সেটা এখন নেই।’’ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, পৃথিবীতে এ রাজ্যের পড়ুয়ারাই সব থেকে মেধাবী।
পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে ব্যায়াম করার পরামর্শও দিয়েছেন মমতা। বলেন, ‘‘সারা ক্ষণ ঘাড় গুঁজে না-পড়ে মাঝেমধ্যে ঘাড়ের ব্যায়াম করতে হবে। ঘাড় কিন্তু সোজা করে চলতে হবে। এত অল্প বয়সে ঘাড় বেঁকে গেলে পরে সমস্যা হবে। মাঝেমধ্যে ঘাড়ের ব্যায়াম করে নিয়ো। এখন তোমাদের ডায়েটিংয়ের বয়স নয়। খাওয়াদাওয়া ভাল করে করবে।’’
নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করারও পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পড়ুয়াদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘হাঁটাচলা করলে ব্রেনটা খোলে। আমি যখন হাঁটি, তখন আমার মাথাটাও কিন্তু হাঁটে। তুমি হাঁটবে না, তোমার মাথাও হাঁটবে না।’’
মেধাবী পড়ুয়াদের মাথা গরম না-করারও পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘বেশি মাথা গরম করবে না। আমাদের ব্রেনে অনেক সেল আছে। মাথা গরম করলে সেগুলো ড্যামেজ হয়।’’ কোনও ছাত্র বা ছাত্রী পড়াশোনা করতে চাইছেন, কিন্তু ভর্তি হতে পারছেন না— এমনটা যাতে না-হয়, সেই বিষয়টি খেয়াল রাখার জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন ছাত্রছাত্রীদের যে-সব বই উপহার দেওয়া হয়, তার অধিকাংশই মুখ্যমন্ত্রীর। তা ছাড়া দেওয়া হয়েছে অন্য লেখকদের বই, ল্যাপটপ, ঘড়ি এবং অন্যান্য উপহারসামগ্রী।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy