ঋত্বিক সাহু ও তিমিরবরণ দাস
মাধ্যমিকে স্থান ছিল ১৩ নম্বরে। সর্বভারতীয় ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা ‘নিট’-ও র্যাঙ্ক এসেছিল ১৩। উচ্চ মাধ্যমিকে সেই তেরোর গেরো কাটিয়ে উঠলেন ঋত্বিক সাহু। এ বারের উচ্চ মাধ্যমিকে মেধা তালিকায় দু’নম্বরে রয়েছেন তমলুক হ্যামিল্টন হাইস্কুলের এই কৃতী ছাত্র। প্রাপ্ত
নম্বর ৪৯৩।
হার না মানা জেদই ঋত্বিকের উত্থানের কারণ বলে মানছেন স্কুলের শিক্ষকেরা। হ্যামিল্টন হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোবিন্দপ্রসাদ শাসমল বলেন, ‘‘মাধ্যমিকে প্রথম দশে আসতে না পারায় আমরাও হতাশ হয়েছিলাম। কিন্তু তার পরে ঋত্বিক যে ভাবে পড়েছে, তাতে আর আশাহত হওয়ার জায়গা ছিল না।’’ ঋত্বিকও বলছেন, ‘‘মাধ্যমিকে বাংলা ও ইতিহাসে কম নম্বর পাওয়ায় প্রথম দশে থাকতে পারিনি। আক্ষেপ মিটল।’’
তমলুকের পদুমবসানে বাড়ি ঋত্বিকের। বাবা বিদ্যুৎকুমার সাহু বল্লুক হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। মা শাশ্বতীদেবী গৃহকর্ত্রী। বিদ্যুৎবাবু নিজেও রসায়নে স্নাতকোত্তরে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। ঋত্বিকেরও প্রিয় বিষয় রসায়ন। তবে লক্ষ্য ‘কার্ডিয়াক সার্জেন’ হওয়া। পড়ার ফাঁকে ক্রিকেট খেলেন বিরাট কোহলির ভক্ত ঋত্বিক।
শাশ্বত রায়
উচ্চ মাধ্যমিকে জোড়া তৃতীয়ের অন্যতম বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের তিমিরবরণ দাস অবশ্য স্কুলে কখনও প্রথম হননি। মাধ্যমিকেও মেধা তালিকায় ছিলেন না। তবে উচ্চ মাধ্যমিকে বাঁধাধরা রুটিনে না পড়েই ৪৯০ পেয়েছেন বর্ধমান শহরের ইছালাবাদের সুকান্তনগরের বাসিন্দা তিমিরবরণ। যুবরাজ সিংহের ভক্ত এই কৃতী ছাত্র মানছেন, “তৃতীয় হব সত্যিই ভাবিনি।’’ তাঁর বাবা প্রদীপবাবু অঙ্কের শিক্ষক। মা তাপসীদেবীও প্রাথমিক স্কুলে পড়ান। প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘ছেলে অত রুটিন মেনে পড়েনি। মাঝরাতে ছাদে উঠে খেলত, গিটার বাজাত।’’ চিকিৎসক হয়ে জেনেটিক্স নিয়ে গবেষণাই তিমিরবরণের লক্ষ্য।
৪৯০ পেয়ে আরেক তৃতীয় মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবনের ছাত্র শাশ্বত রায় আবার ক্রিকেট পাগল। তাঁর বাড়ি মেদিনীপুরের অরবিন্দনগরে। বাবা সৌমেন রায় মেউদিপুর হাইস্কুলের শিক্ষক, মা লিপিকা রায় গৃহকর্ত্রী। শাশ্বত বলছেন, ‘‘পরীক্ষা ভাল হয়েছিল। জানতাম ফল ভাল হবে।” মাধ্যমিকে ৬৭০ পেয়েছিলেন শাশ্বত। প্রিয় বিষয় পদার্থবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করে বিজ্ঞানী হতে চান তিনি।
(তথ্য: আনন্দ মণ্ডল, সৌমেন দত্ত ও বরুণ দে)
—নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy