Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘জয় গণতন্ত্রে’র, স্বস্তি মমতার

ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ৩৪% আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল জিতেছিল। মনোনয়ন দিতে বাধা দিয়ে, সন্ত্রাস চালিয়ে ওই আসনগুলি শাসক দল দখল করেছে বলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল বিরোধীরা।

সহাস্য: কলকাতা পুলিশের ‘জয় হে’ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

সহাস্য: কলকাতা পুলিশের ‘জয় হে’ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৪৭
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার আসন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ‘গণতন্ত্রের জয়’ হল বলে মনে করছে শাসক দল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘এই রায় মানুষের জয়, গণতন্ত্রের জয়। আমরা ৮৪% জেলা পরিষদে জিতেছি। পরিকল্পনা করে কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিজেপি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক স্বার্থে রাজ্যের বিরুদ্ধে কুৎসা, অপপ্রচার, চক্রান্ত করেছিল, বাংলাকে অসম্মান করেছিল। আজকের রায় তা প্রমাণ করে দিল!’’

ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ৩৪% আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল জিতেছিল। মনোনয়ন দিতে বাধা দিয়ে, সন্ত্রাস চালিয়ে ওই আসনগুলি শাসক দল দখল করেছে বলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল বিরোধীরা। পঞ্চায়েত ভোটে বিপুল জয় পেলেও এই বিতর্কের জেরে ‘অস্বস্তি’তে ছিল তৃণমূল। গত ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন তুলেছিলেন, সিকিম, উত্তরাখণ্ডের মতো রাজ্যেও তো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসন জয় হয়। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের ফলে তাদের পঞ্চায়েত বিজয় ‘বৈধতা’ পেল বলে মনে করে স্বস্তির হাওয়া শাসক শিবিরে।

নবান্ন থেকে বেরোনোর সময়ে শুক্রবার মমতা বলেন, ‘‘দেশের কোথায় কী ভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোট হয়েছে, তার হলফনামা সর্বোচ্চ আদালতেও জমা দেওয়া হয়েছিল।’’ মনোনয়ন দিতে না পারার নেপথ্যে গ্রামবাসীদের ভূমিকা থাকে বলে মন্তব্য করেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বেলপাহাড়িতে আমরা ক্ষমতায় থেকেও প্রার্থী দিতে পারিনি। কারণ মোড়লরা তা দিতে দেয়নি।’’ তাঁদের প্রার্থী দিতে না পারার বিষয়ওটিও আদালতে হলফনামা দিয়ে জানানো হয়েছিল বলে মমতা জানান। পাশাপাশিই তাঁর অভিযোগ, অনেক বিষয়েই সংবাদমাধ্যম আগে ‘বিচার’ করে ফেলছে! পঞ্চায়েত-রায়কে সামনে রেখে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ বন্ধ করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: ‘জয় গণতন্ত্রে’র, স্বস্তি মমতার

পঞ্চায়েত মামলায় তৃণমূলের তরফে আইনজীবী ছিলেন দলীয় সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েত মামলা চলাকালীন অনেকেই সমালোচনা করেছিলেন। প্রত্যেকের জন্যই এই রায় যোগ্য জবাব। যা আদালতে বলেছিলাম, তাই আদালত মেনে নিয়েছে।’’ আদালতের রায়ের পরে পুরুলিয়ার বলরামপুরে যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘কোর্টে আমরা জিতেছি। ভোট হলেও জিতব। মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। এই জয় গণতন্ত্রের জয়।’’ একই সুরে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিরোধী বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস নানা অছিলায় মানুষের অধিকার, উন্নয়নকে স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল। মামলার জন্য গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের দেরি হল। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যের উন্নয়নকে পাখির চোখ করেই আমরা এগোব।’’

আরও পড়ুন: বৈধতা পেলেই কি ন্যায্য, বলছে বিরোধীরা​

শীর্ষ আদালতের এই রায় বিরোধীদের কাছে ‘বিরাশি সিক্কার চড়’ বলে মন্তব্য করেছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। রাজনৈতিক লড়াইয়ে জিততে না পারা বিরোধীরা আদালতেও পরাস্ত হওয়ায় এ বার তাদের ‘কান ধরে ওঠবোস’ করা উচিত বলে কটাক্ষ করেছেন কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE