আলোচনায় বাংলাদেশের মন্ত্রী ও অন্যান্যরা।—নিজস্ব চিত্র।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের টাকায় উন্নয়নের নিরিখে ইতিমধ্যেই হাওড়া জেলার মধ্যে প্রথম স্থানে চামরাইল গ্রাম পঞ্চায়েত। কী ভাবে তা সম্ভব হল, কী কী কাজের ভিত্তিতে এই সাফল্য, তা দেখে গেলেন বাংলাদেশের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী খোন্দকর মোশারফ হোসেন। রবিবার ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্রের বালি জগাছা ব্লকের ওই পঞ্চায়েতের কাজকর্ম এবং গ্রামপঞ্চায়েত ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে এক আলোচনায় যোগ দেন মন্ত্রী-সহ বাংলাদেশের পাঁচ সদস্যের একটি দল।
এ দিন সকালে চামরাইল গ্রামপঞ্চায়েতে পৌঁছয় দলটি। সাফল্যের খতিয়ানের পাশাপাশি ত্রিস্তরীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন এ রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকেরা। বাংলাদেশের প্রতিনিধিরাও সেখানকার পঞ্চায়েত ব্যবস্থা সম্পর্কে এ রাজ্যের আধিকারিকদের অবগত করেন।
এ দিন বাংলাদেশের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জানান, কী ভাবে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে রাস্তা, শৌচালয় তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। তাঁর দাবি, তিন লক্ষ একুশ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়কের জন্য এ পর্যন্ত এক ইঞ্চি জমিও দখল করতে হয়নি সরকারকে। খোন্দকর মোশারফ বলেন, ‘‘যখন যেখানে জমি দরকার হয়েছে, সেখানে গ্রামসভার মাধ্যমে আলোচনাতেই স্বেচ্ছায় জমি দিয়েছেন মানুষ।’’
তবে পঞ্চায়েত ব্যবস্থাপনায় মহিলাদের অংশগ্রহণে পশ্চিমবঙ্গের থেকে বাংলাদেশ যে এখনও অনেকটাই পিছিয়ে, তা এ দিন স্বীকার করে নেন মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘চামরাইল গ্রাম পঞ্চায়েতে ২০ জন সদস্য মহিলা। সেখানে বাংলাদেশের একটি পঞ্চায়েতে তিন জনের বেশি মহিলা সদস্য নেই। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে উন্নয়নের কাজ করছেন এবং মহিলাদের সামিল করছেন তা অনবদ্য।’’
চামরাইলে এ দিনের এই সফরকে সরকারি সফর বলতে অবশ্য নারাজ মন্ত্রী খোন্দকর মোশারফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ব ব্যাঙ্কের তরফে বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছি। পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করব। তার আগে এই চামরাইল সফর সৌজন্য সাক্ষাৎ।’’
বালি জগাছা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুভাষ রায় জানান, বিশ্ব ব্যাঙ্কের টাকায় উন্নয়নের নিরিখে ২০১১-১২ সালে প্রথম স্থান পেয়েছিল চামরাইল। সুভাষবাবুর দাবি, ‘‘কাজের সেই ধারা আমরা বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। রাস্তা, স্থায়ী শৌচালয়, পানীয় জলের পাশাপাশি সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ২০১৫-১৬ সালে হাওড়া জেলার মধ্যে চামরাইল পঞ্চায়েতকে প্রথম ঘোষণা করেছে হাওড়া জেলা পরিষদ।’’
রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন দফতরের বিশেষ সচিব সৌম্য পুরকাইত বলেন, ‘‘কেরল থেকে ফেরার পথে পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন বাংলাদেশের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী। উন্নত গ্রাম পঞ্চায়েত দেখতে চেয়েছিলেন তিনি। এর পরে তিনি পঞ্চায়েতমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন।’’ মন্ত্রী খোন্দকর মোশারফ হোসেন এ দিন জানান, পঞ্চায়েত ব্যবস্থার উন্নয়নে দু’দেশের মত বিনিময়ের জন্য পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিদের বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy