Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ভোটের আগেই ২৫১৫ কিমি গ্রামীণ রাস্তা সম্প্রসারণে হাত

পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর, এ রাজ্যে ২৫১৫ কিমি রাস্তার দরপত্র চাওয়ার কাজ হবে জানুয়ারিতেই। লোকসভা ভোটের সময় গ্রামে গ্রামে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলবে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:০৯
Share: Save:

লোকসভা ভোটের মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাজি হতে চলেছে গ্রামের ৫০ হাজার কিলোমিটার পাকা রাস্তার সম্প্রসারণ। ওই একই প্রকল্প নিয়ে এ রাজ্যে আড়াই হাজার কিমি রাস্তা সম্প্রসারণে নামছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এবং কৃতিত্ব তিনি শুধু দিল্লিকে দিতে নারাজ। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা-দুই এর অধীনে রাজ্যে রাজ্যে গ্রামের পাকা রাস্তা সম্প্রসারণের যে ৪৭ হাজার কোটির প্রকল্প হতে চলেছে, তার অর্ধেক টাকা দেবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিও।

পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সম্প্রসারণের এত বড় প্রকল্প আগে কখনও হয়নি। রাজ্যের জন্য আড়াই হাজার কিমি রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ আমরা আনতে পেরেছি। কিন্তু যেহেতু কেন্দ্র-রাজ্য অর্ধেক টাকা ভাগাভাগি করে দেব, ফলে প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর অবদানও সমান সমান হওয়া উচিত।’’

পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর, এ রাজ্যে ২৫১৫ কিমি রাস্তার দরপত্র চাওয়ার কাজ হবে জানুয়ারিতেই। লোকসভা ভোটের সময় গ্রামে গ্রামে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলবে। এ জন্য প্রায় ৩০০০ কোটি টাকা খরচ হবে। কিন্তু সম্প্রসারণের জন্য জমি মিলবে কোথা থেকে, তা নিয়ে চিন্তায় দফতরের কর্তারা। প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় জমির দায়িত্ব রাজ্যের। এই প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণেরও ব্যবস্থা নেই। রায়তি জমি দানের মাধ্যমে পাওয়া গেলে বা সরকারি জমিতেই এই রাস্তা তৈরি হয়। ফলে জমি নিয়ে অশান্তির আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না পঞ্চায়েত কর্তারা। যদিও পঞ্চায়েত মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘১৮ বছর ধরে হাজার হাজার কিমি রাস্তা যখন বিনা অধিগ্রহণে হয়েছে তখন সম্প্রসারণের রাস্তার জমিও মিলবে। প্রয়োজনে জমিদাতাদের বোঝাতে হবে।’’

গ্রামে পাকা রাস্তা তৈরির প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা শুরু হয়েছিল ১৮ বছর আগে। ওই প্রকল্পে মোরাম বা মাটির রাস্তা পাকা তৈরির কাজে হাত দেওয়া হয়। ৩.৭৫ মিটার চওড়া পিচের রাস্তা বদলে দিয়েছে গ্রামের চিত্র, এমন দাবি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের। সারা দেশে প্রায় ২ কোটি ২৫ লক্ষ কিমি এবং রাজ্যে ৩৫ হাজার কিমি পাকা রাস্তার কাজ এই ১৮ বছরে হয়েছে। ফলে পাকা রাস্তাকে ঘিরে গ্রামের ভিতরেও তৈরি হয়েছে বাজার-হাট, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল ইত্যাদি। গ্রামোন্নয়ন কর্তারা জানান, পাকা রাস্তার সূত্রেই তৈরি হওয়া গ্রামীণ আর্থিক কাঠামো এখন এতটাই শক্তিশালী যে সামান্য ৩.৭৫ মিটার চওড়া আর যথেষ্ঠ নয়। আরও চওড়া রাস্তার দাবি উঠেছে।

সেই চাহিদা পূরণেই কেন্দ্রীয় সরকার এ বার নিয়ে আসছে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা(দুই)। এই প্রকল্পে ১০ বছরের পুরনো সড়ক যোজনার রাস্তাগুলি আরও চওড়া করা হবে। অর্থাৎ ৩.৭৫ মিটারের বদলে রাস্তা হবে ৫.৫ মিটার চওড়া। যা মধ্যবর্তী স্তরের রাস্তা হিসাবে ধরা যায়। দু’লেনের রাস্তা নিদেনপক্ষে সাড়ে সাত মিটার চওড়া হয়। এখন সম্প্রসারণের জন্য হাতে নেওয়া রাস্তাগুলি হবে সাড়ে পাঁচ মিটার। এ ছাড়া বিটুমিন ম্যাকাডাম বা পরপর দু’টি স্তরে পাথর বিছিয়ে তার উপরে পিচ ঢালার কাজ হবে। এই পদ্ধতিতেই রাজ্যের পূর্ত বিভাগ রাজ্য সড়ক বা জেলা সড়কগুলি তৈরি করে থাকে। এখন পঞ্চায়েতের কাজেও সেই প্রযুক্তি মেনেই রাস্তা তৈরি হবে। পাশাপাশি একবার রাস্তা তৈরির বরাত পেলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের পাঁচ বছরের টানা মেরামতের কাজও করতে হবে। সে জন্য এ রাজ্যে প্রতি কিমি রাস্তা তৈরিতে এক কোটি ৩০ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে বলে মনে করছেন পঞ্চায়েত কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rural Road Panchayat Subrata Mukherjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE