Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দেওয়াল নিয়ে একমত হয়েও ধন্দে বাংলা

রাস্তা, বাড়ির মতো জনসাধারণের ব্যবহারের কোনও জায়গায় কোনও রাজনৈতিক দল যথেচ্ছ দেওয়াল লিখতে বা প্রচারের জন্য পোস্টার, ব্যানার, হোর্ডিং লাগাতে পারবে না। লোকসভা ভোটের মুখে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট তামিলনাড়ু সরকারকে এই নির্দেশ দেওয়ার পরে এ রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলি দাবি করছে যে ভোট-প্রচারে ‘নিয়ম’ মেনেই তারা জনসাধারণের জায়গা ব্যবহার করে।

মুখ ঢেকে যায়: রাজনৈতিক হোর্ডিং বি বা দী বাগ এলাকায়। নিজস্ব চিত্র

মুখ ঢেকে যায়: রাজনৈতিক হোর্ডিং বি বা দী বাগ এলাকায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯ ০৩:২৪
Share: Save:

রাস্তা, বাড়ির মতো জনসাধারণের ব্যবহারের কোনও জায়গায় কোনও রাজনৈতিক দল যথেচ্ছ দেওয়াল লিখতে বা প্রচারের জন্য পোস্টার, ব্যানার, হোর্ডিং লাগাতে পারবে না। লোকসভা ভোটের মুখে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট তামিলনাড়ু সরকারকে এই নির্দেশ দেওয়ার পরে এ রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলি দাবি করছে যে ভোট-প্রচারে ‘নিয়ম’ মেনেই তারা জনসাধারণের জায়গা ব্যবহার করে। তবে নিয়ম এড়িয়ে কিছু ঘটলে, তা নজরে রেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য প্রশাসনিক সংস্থাকে দায়িত্ব নিতে হবে বলে তাদের অভিমত।

এমনিতে কলকাতা পুরসভা এলাকায় ব্যক্তিগত হোর্ডিং, যেমন কোনও অনুষ্ঠান বা কোনও প্রচারমূলক বিজ্ঞাপন দেওয়ার সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। তার জন্য ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’ও নেয় পুরসভা। অনুষ্ঠান বা নির্দিষ্ট কর্মসূচি হয়ে যাওয়ার পরে দিন সাতেক সময় দেওয়া হয়। তারপরও সেগুলি খোলা না হলে, তা পুরসভার কর্মীরাই খুলে দেন।

তবে রাজনৈতিক হোর্ডিং নিয়ে কী করতে হবে, তা জানা নেই কলকাতা পুর-প্রশাসনের। নির্দিষ্ট সময় অন্তর রাজনৈতিক হোর্ডিং, ব্যানার খোলা হলেও সেটা অনেকটাই ‘স্বেচ্ছাসেবক’-এর কাজের মতো হয় বলে জানিয়েছেন পুরকর্তারা। কারণ, রাজনৈতিক হোর্ডিং, ব্যানার লাগানোর ক্ষেত্রে পুর-প্রশাসনের কাছ থেকে কোনওরকম অনুমতি নিতে হয় না সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে। তাই তা খোলার ক্ষেত্রেও কোনও বাধ্যবাধকতা নেই পুর প্রশাসনের।

শীর্ষ আদালতের এ দিনের নির্দেশ ঠিক কী প্রেক্ষিতে, তা এখনও স্পষ্ট নয় রাজ্যের রাজনৈতিক নেতাদের কাছে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘সুপ্রিম কোর্ট কী প্রেক্ষিতে কী নির্দেশ দিয়েছে, তা না দেখে বলতে পারব না। তবে দেওয়াল লিখন, হোর্ডিং, পোস্টার, দলের পতাকা লাগানো— এগুলি তো ভোট-প্রচারেরই অঙ্গ।’’ আর কারও বাড়ির দেওয়ালে ভোট-প্রচারে সংশ্লিষ্ট বাড়ির অনুমতি নেওয়া হয় বলে পার্থবাবুর মন্তব্য। বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘দেওয়ালে লেখা বা পোস্টার দেওয়া সংক্রান্ত নির্দিষ্ট আইন আছে। ভোটের সময় এ বিষয়ে নজরদারি করে নির্বাচন কমিশন। সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলির নিশ্চয়ই ওই নিয়ম মানা উচিত। কিন্তু সরকারকেও খেয়াল রাখতে হবে নিয়ম মানা হচ্ছে কি না।’’

বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মতে, ‘‘আমরা এ রাজ্যের নির্দিষ্ট আইন মেনে দেওয়াল লিখি। তবে সকলেই তা মানছে কি না, নির্বাচন কমিশনের দেখা উচিত। সুপ্রিম কোর্ট হয়তো এই নিয়মের কথাই বোঝাতে চেয়েছে।’’

দেওয়াল লিখন এবং পোস্টারে দৃশ্যদূষণ হয় বলে স্বীকার করে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘সব রাজ্যের বৈশিষ্ট্য এক নয়। এ রাজ্যে কমিউনিস্টরা দেওয়ালে লেখা এবং পোস্টার মারার সংস্কৃতি আমদানি করেছিল। তবে দেওয়াল লিখন এবং পোস্টারের বিরুদ্ধে কোনও বিশেষ জায়গা থেকে নির্দেশ এলে এবং সব দল তা মানলে আমাদেরও মানতে আপত্তি হবে না। হোর্ডিং দিয়ে প্রচারের কাজ হয়ে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE