Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

স্কুল চত্বরকে তামাকমুক্ত করতে কড়া স্কুলশিক্ষা দফতর

এই গা-ছাড়া ভাবের জন্যই প্রতিবেশী দেশ ভুটান যা করে দেখাতে পারে, এ রাজ্যের স্কুলগুলো তা পারে না। নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও পেরিয়ে যায় ছ’মাস।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুপ্রিয় তরফদার
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৮ ০২:২৫
Share: Save:

তামাক সেবন বিরোধী অভিযানে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার স্কুলগুলোর ক্ষেত্রে কড়া হচ্ছে স্কুলশিক্ষা দফতর। যদিও এই অভিযান নতুন নয়। জন পরিবহণে বা এমন জায়গায় যেখানে অনেক মানুষের জমায়েত হয়, অফিসে বা রাস্তায় প্রকাশ্যে ধূমপানে জরিমানার নিদান ছিলই। স্কুলের একশো মিটারের মধ্যেও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি বা সেবন করা আইনত দণ্ডনীয়। যদিও সবটাই খাতায় কলমে। সেই ব্যর্থতা নিয়েই কেটে গেল আরও একটি তামাক সেবন বিরোধী দিবস।

এই গা-ছাড়া ভাবের জন্যই প্রতিবেশী দেশ ভুটান যা করে দেখাতে পারে, এ রাজ্যের স্কুলগুলো তা পারে না। নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও পেরিয়ে যায় ছ’মাস। স্কুল চত্বরকে তামাকমুক্ত করতে শিক্ষকদের নিয়ে কর্মশালা হয়। তবুও পরিস্থিতি বদলায় না।

দেখেশুনে বিরক্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তারা। নির্দেশ ভঙ্গকারী স্কুলের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে জেলা স্কুলশিক্ষা দফতর। আগামী জুন থেকেই শো-কজ প্রক্রিয়া চালু হবে। উপযুক্ত কারণ না দেখাতে পারলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের স্বার্থের কথা শিক্ষকেরা ভাববেন না, সেটা মেনে নেওয়া হবে না। তাই শো-কজ ছাড়া উপায় নেই।’’

দফতর সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় প্রাথমিক স্কুল ৩,৭০০টির বেশি। মাধ‍্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুল ১,০৯৩টি। প্রতিটি স্কুলকেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কোনও শিক্ষক এবং কর্মী স্কুলে ধূমপান বা তামাক সেবন করতে পারবেন না। স্কুল চত্বরের ১০০ মিটার এলাকা তামাক-বর্জিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। ওই চত্বরে কোনও দোকান থেকে যাতে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি না করা হয়, তা দেখার দায়িত্বও স্কুল কর্তৃপক্ষের। প্রশাসনের সহযোগিতাও নেওয়া যাবে। গেটের বাইরে সাইনবোর্ড বা ফেস্টুনে তামাক বিরোধী বার্তা দিতে হবে।

এ নিয়ে কর্মশালাও হয়। গত এপ্রিলে প্রাথমিক জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরে স্কুল পরিদর্শকদের নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠকে নিয়মগুলো মানা হচ্ছে কি না দেখতে সমীক্ষার উপরে জোর দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি বিকাশ ভবনে স্কুলশিক্ষা দফতরের কমিশনার, সচিব-সহ উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে সমস্ত জেলার স্কুল পরিদর্শকদের বৈঠক হয়। নির্দেশ না মানলে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার কথা উঠে এসেছিল সেখানেই।

দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘পরিদর্শনের কাজ চলছে। যে চিত্র উঠে এসেছে তা মোটেও ভাল নয়। তাই শো-কজের পথেই যেতে হচ্ছে।’’ যদিও শিক্ষকদের একাংশের মতে, শুধু স্কুলের গেটে বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে কাজ হবে না। স্কুলের ১০০ মিটার চৌহদ্দির সর্বত্র তামাক-বর্জিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত না করা থাকলে, পথচলতি মানুষ কী ভাবে জানবেন সেই নিষেধাজ্ঞা! কলকাতা পুর এলাকায় যে ভাবে ১০০ মিটার এলাকা নীল-সাদা রঙে চিহ্নিত করা হয়েছে, এখানেও কি তেমন কিছু করা উচিত? এক
কর্তা বলেন, ‘‘তা নিয়ে পরে আলোচনা হবে। আগে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা মানা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে দৃষ্টি রাখা হবে|’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School education department Smoking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE