Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূল ছাড়তেই ভাইচুংকে পেতে চাইছে বিজেপি-সহ সিকিমের নানা দল

সিকিমের বাসিন্দা ভাইচুং তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করেছেন জেনেই তাঁর ব্যাপারে খবরাখবর নেওয়া শুরু করেছেন সিকিম ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এসডিএফ) ও বিরোধী সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চার নেতারা। এসডিএফের মুখপাত্র তথা প্রাক্তন সাংসদ ভীম দহেল বা সিকিমের ক্রান্তিকারী মোর্চার এক নেতা জানান, ভাইচুং সিকিমের রাজনীতিতে থাকলেই তাঁরা খুশি হবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৫
Share: Save:

ক্ষোভটা পুঞ্জীভূত হচ্ছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। পাহাড়ে অশান্তির পরেই পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন। দলের সঙ্গে দূরত্ব আরও বাড়ে কার্শিয়াং পুরভোটে হারের কিছু দিন পরেই শান্তা ছেত্রীকে তৃণমূল রাজ্যসভায় মনোনীত করতেই। তৃণমূলের অন্দরে ভাইচুং ভুটিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি দলের সঙ্গে সম্পর্ক আর রাখতে চান না। শেষমেশ সোমবার তাঁর টুইট-বার্তায় জো়ড়াফুলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন ‘পাহাড়ের বিছে’।

সিকিমের বাসিন্দা ভাইচুং তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করেছেন জেনেই তাঁর ব্যাপারে খবরাখবর নেওয়া শুরু করেছেন সিকিম ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এসডিএফ) ও বিরোধী সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চার নেতারা। এসডিএফের মুখপাত্র তথা প্রাক্তন সাংসদ ভীম দহেল বা সিকিমের ক্রান্তিকারী মোর্চার এক নেতা জানান, ভাইচুং সিকিমের রাজনীতিতে থাকলেই তাঁরা খুশি হবেন। দলত্যাগের খবর জানামাত্রই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরণ রিজিজু ভাইচুংকে বিজেপিতে আগাম স্বাগত জানিয়ে রেখেছেন। বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহও বলেছেন, ‘‘আসতে চাইলে ওঁর মতো দেশবরেণ্য ফুটবলারকে আমরা নিশ্চয়ই স্বাগত জানাব। ওঁকে পেলে বিজেপি ও দেশের লাভ হবে।’’ তবে কোনও রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় ভাইচুংকে পাঠানো হবে কি না, তা নিয়ে রাহুলবাবু বলেন, ‘‘দলের সংসদীয় বোর্ড এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়।’’

ফুটবল তারকা ভাইচুংকে ২০১৪ সালে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূলের প্রার্থী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে পরাস্ত হলেও তাঁকে পাহাড়ের সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রাখেন মমতা। দলের একাধিক কমিটিতে তাঁকে দায়িত্ব দেন। তার পরে ২০১৬ সালে শিলিগুড়ি বিধানসভায় প্রার্থীও করেন। হেরে যান ভাইচুং। এর পর থেকেই স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে ভাইচুঙের দূরত্ব বাড়তে থাকে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। তাঁকে দার্জিলিংয়ের কার্যকরী সভাপতি করা হয়। তাতেও সমস্যা মেটেনি।

আরও পড়ুন: তৃণমূল ছাড়লেন ভাইচুং

এর মধ্যে বিমল গুরুঙ্গদের গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে পড়শি রাজ্য সিকিমের ঠান্ডা লড়াই তৈরি হয়। সিকিমের বাসিন্দা ভাইচুং তখন স্পষ্ট বলেছিলেন, ‘‘আলাদা গোর্খাল্যান্ড হলে পাহাড়ে শান্তি আসবে।’’ তখন কেউ কেউ বুঝিয়েছিলেন, গোর্খাল্যান্ড-বিরোধী অবস্থান নিলে তাঁর সিকিমে নানা বিনিয়োগ ও কর্মকাণ্ডের উপরেও প্রভাব পড়তে পারে। তৃণমূল থেকে দূরত্ব তৈরি করলে বরং সিকিমে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হওয়ার সম্ভাবনা। হয়তো ওই রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় যাওয়ার সুযোগও মিলবে। ধীরে ধীরে দলের সঙ্গে ব্যবধান বাড়তে থাকে ভাইচুঙের। ফেব্রুয়ারির গোড়ায় শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর ছাত্র- ডাক পাননি ভাইচুং।

এখন তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে ভাইচুং নির্দিষ্ট করে কিছু বলেন কি না, তারই অপেক্ষা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE