রাজারহাটের নবীনচন্দ্র প্রাথমিক স্কুলে ভোটের কাজে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার রামনগর প্রাথমিক স্কুলের পার্শ্বশিক্ষক মনিরুল ইসলাম। তাঁর চোয়াল ভাঙে, মাথা ফাটে। ভাঙা চোয়ালে এখনও ‘ট্র্যাকশন’ দেওয়া। এহেন মনিরুলকে ক্ষতিপূরণ দিতে চলেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সব ঠিক থাকলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে।
যদি তা হয়, তা হলে মনিরুলই হবেন পঞ্চায়েত ভোটে আক্রান্ত প্রথম ভোটকর্মী, যিনি ক্ষতিপূরণ পেলেন। এ দিন মনিরুলের অবশ্য প্রতিক্রিয়া, ‘‘টাকাটা দেবে কি না, আদৌ জানি না! ডিএম অফিস আগে তিনটে কাগজ (চিকিৎসা সংক্রান্ত খরচের নথি) জমা নিয়েছে। এখন বিডিও অফিস মারফত ডিএম অফিস ফের কাগজপত্র জমা নিয়েছে।’’
মনিরুলের পরিবার সূত্রে খবর, মঙ্গলবার তাঁদের চাঁপাতলার বাড়িতে গিয়েছিলেন দেগঙ্গার বিডিও অনিন্দ্য ভট্টাচার্য। বিডিওর বক্তব্য, ‘‘কত দাবি তা জানাতে মনিরুল ইসলামকে বলা হয়েছিল। তিনি আমাদের তা পাঠিয়েছেন। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছি।’’
সূত্রের খবর, চিকিৎসার খরচ সংক্রান্ত সব নথি আক্রান্ত শিক্ষকের কাছে নেই। সেই কারণে বিলের সঙ্গে যাবতীয় খরচের একটা আলাদা হিসেবও কমিশনে পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন। এই দুই নথির ভিত্তিতে চিকিৎসার খরচ বাবদ প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকা পেতে পারেন মনিরুল।
পঞ্চায়েত ভোটে এ বারই প্রথম আক্রান্ত ভোটকর্মীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু একাধিক ভোটকর্মীর আক্রান্ত হওয়ার খবর সংবাদমাধ্যমে উঠে এলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আনুষ্ঠানিক ভাবে অভিযোগ দায়ের হয়নি। সেই কারণেই মনিরুল বাদে আর প্রায় কারওরই ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি বলে কমিশন সূত্রের দাবি। কিন্তু ভোটকর্মীরা অভিযোগ করেননি কেন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষকের বক্তব্য, ‘‘ভয়ে। সবাই তো চাকরি করেন!’’
মনিরুলের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়টি এগোনোর পরে ফের নাড়াচাড়া শুরু হয়েছে রাজকুমার রায়ের মৃত্যুর প্রসঙ্গ নিয়ে। ১৪ মে ভোটের পরের দিন রেললাইনের পাশ থেকে উদ্ধার হয় উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির রহটপুর হাইস্কুলের শিক্ষক রাজকুমার রায়ের দেহ। তাঁর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কমিশন সূত্রের ব্যাখ্যা, রাজকুমারের মৃত্যুর সিআই়ডি তদন্ত চলছে। তাই এই বিষয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। শিক্ষক সংগঠন আবুটার সভাপতি তরুণ নস্করের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘মৃত্যুর কারণ নিয়ে তদন্ত চলতে পারে। কিন্তু মৃত্যু তো হয়েছে। তবে ক্ষতিপূরণ নয় কেন!’’ অন্য দিকে, তদন্তের গতি ‘শ্লথ’ বলে অভিযোগ রাজকুমারের আত্মীয় নরদীপ রায়ের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy