চেনা নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ছবি। পুরুষ সহকর্মীর মশকরা। পাশে বসা লোকটির মোবাইলে ভিডিও। বন্ধুর পিঠ চাপড়ানি। সিনেমার দু’টো টিকিট। বার কাম রেস্তোরাঁয় ডিনারে নিমন্ত্রণ বসের। কর্মস্থলে আপাত নিরীহ এমন সব কথা, ছোঁয়া, ইশারার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে সম্মতির লক্ষ্মণরেখা ছাড়িয়ে যাওয়া আগ্রাসন। যা টের পান মহিলা কর্মীরা। মরিয়া হয়ে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তোলেন।
কাকে বলে কর্মস্থলে যৌন হেনস্থা?
২০১৩ সালে পাশ হওয়া কর্মস্থলে মহিলাদের যৌন হেনস্থা সংক্রান্ত নতুন আইন বলছে:
• বাঞ্ছিত যৌন আচরণ তথা আগ্রাসন
• যৌনেচ্ছায় শারীরিক ছোঁয়া
• যৌন সুযোগ দিতে অনুরোধ বা দাবি
• যৌনগন্ধী মন্তব্য
• পর্নোগ্রাফি দেখানো
• যৌন হাবভাব, শারীরিক হোক বা মৌখিক
হেনস্থার শিকার হলে কী করবেন?
প্রথমেই অফিসের অভ্যন্তরীণ সংস্থার কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানান। ‘বিশাখা গাইডলাইন’ অনুযায়ী মহিলারা কাজ করেন এমন সংস্থায় এই ধরনের অভিযোগ নেওয়া ও খতিয়ে দেখার জন্য অভ্যন্তরীণ কমিটি গড়ার স্পষ্ট নির্দেশ আছে।
অফিস কী করবে?
অভ্যন্তরীণ কমিটি অভিযোগের তদন্ত করবে। প্রয়োজনে অভিযুক্ত, অভিযোগকারিণী এবং সহকর্মীদের ডেকে কথা বলতে পারে। অপরাধ প্রমাণ হলে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ‘সার্ভিস রুল’ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তেমন গুরুতর কিছু হলে সেই কর্মীকে তাড়িয়েও দেওয়া হতে পারে। এ ব্যাপারে সচেতন ও সতর্ক করতে কর্মীদের নিয়ে নিয়মিত আলোচনা, কর্মশালা ইত্যাদি আয়োজন করা সংস্থার দায়িত্ব।
থানা-পুলিশ হতে পারে?
চাইলেই পুলিশে যেতে পারেন হেনস্থার মুখে পড়া কর্মী। সংস্থার অভ্যন্তরীণ কমিটিও বুঝলে পুলিশে লিখিত অভিযোগ করতে পারে। পুলিশ তদন্ত করে দেখবে, অভিযোগের সারবত্তা আছে কি না। প্রাথমিক প্রমাণ পেলে হেনস্থা সংক্রান্ত নতুন আইন ছাড়াও ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারায় যৌন নির্যাতন, ৫০৬ ধারায় ভয় দেখানো বা ৩৭৬ ধারায় ধর্ষণের মামলা রুজু করা হতে পারে। যৌন নির্যাতন প্রমাণ হলে পাঁচ বছর পর্যন্ত, ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণ হলে অন্তত সাত বছর জেল। পরিচারিকা বা ইটখোলার কাজের মতো অসংগঠিত ক্ষেত্রে মহিলাদের সুবিচার পাওয়াটা তুলনায় কঠিন। তবে সাহস করে পা বাড়াতেই একটু করে দরজাটা খুলছে, এও সত্যি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy