পুরভোটে দলের ফল আশানুরূপ না হওয়ায় বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বে রদবদলের দাবি এখন জোরালো। রাজ্য সভাপতির পদ থেকে রাহুল সিংহকে অব্যাহতি দিয়ে অন্য কাউকে দায়িত্বে এনে বিধানসভা ভোটে লড়ার দাবি উঠছে দলের অন্দরেই। কিন্তু এর মধ্যেই বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ ইঙ্গিত দিলেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মেয়াদ ফুরোলেও রাজ্য সভাপতির পদের জন্য এখন নির্বাচন হচ্ছে না। যার অর্থ, বিধানসভা ভোটের আগে রাহুলবাবুকে সরানোর পক্ষপাতী নন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বড় অংশ।
এর আগেও বহু বার সিদ্ধার্থনাথ বলেছেন, এ রাজ্যে বিধানসভা ভোট পর্যন্ত তিনি এবং রাহুলবাবু স্ব-স্ব পদেই থাকবেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁদের, বিশেষত রাহুলবাবুর অপসারণ নিয়ে জল্পনা অব্যাহত। এই প্রেক্ষিতে শুক্রবার প্রশ্নের জবাবে সিদ্ধার্থনাথ বলেন, ‘‘সাধারণত যে বছর কোনও রাজ্যে ভোট থাকে, সে বছর সেখানে আমাদের সাংগঠনিক নির্বাচন হয় না। এটা কোনও কড়া নিয়ম নয়। কিন্তু এটাই রেওয়াজ।’’ সিদ্ধার্থনাথ জানান, কোনও রাজ্যে সাংগঠনিক নির্বাচন হওয়ার আগে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে নির্দেশিকা আসে। সেখানে বলা থাকে, কোন মাস থেকে কোন মাসের মধ্যে সংগঠনের সব স্তরে নির্বাচন সেরে কমিটি গড়ে ফেলতে হবে। কোন নির্দিষ্ট দিনে রাজ্য সভাপতি নির্বাচন হবে, তা-ও বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু এ বছর এখনও এ রকম কোনও কেন্দ্রীয় নির্দেশিকাও কাছে আসেনি।
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ ও আরএসএসের কেন্দ্রীয়নেতৃত্বের কাছে বহু দিন ধরেই রাহুলবাবু সম্পর্কে নানা ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন রাজ্যের বিভিন্ন নেতা। পুরভোটে বিজেপি ধাক্কা খাওয়ার পর রাহুল-বিরোধীরা ভেবেছিলেন, এ বার ওই অভিযোগগুলি গুরুত্ব পাবে। তা ছাড়া, রাজ্য সভাপতি হিসেবে রাহুলবাবুর মেয়াদ শেষ হচ্ছে এ বছরেই। ফলে সেপ্টেম্বরে সাংগঠনিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাহুলবাবুর বিদায় অনিবার্য বলেই ধরে নিয়েছিলেন তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতারা। কিন্তু সাংগঠনিক নির্বাচনই যদি না হয়, তা হলে তাঁদের আশা পূরণ হওয়া কঠিন।
রাহুল-বিরোধী শিবিরের নেতারা অবশ্য হাল ছাড়ছেন না। তাঁদের যুক্তি, বিধানসভা ভোটের জন্য সাংগঠনিক নির্বাচন স্থগিত থাকতে পারে। কিন্তু নতুন কাউকে রাজ্য সভাপতি পদে অ্যাডহক বসিয়ে পরে সাংগঠনিক নির্বাচন সারতে অসুবিধা কোথায়? এই দাবিতে দলের কাছে দরবারও অব্যাহত রাখছেন তাঁরা। রাহুলবাবুর পর রাজ্য সভাপতি হওয়ার দৌড়ে আছেন চিকিৎসক নেতা সুভাষ সরকার, দলের সাংসদ চন্দন মিত্র, আরএসএস থেকে সংগঠনের দায়িত্বে আসা দিলীপ ঘোষ এবং প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়। মহিলা মুখ খোঁজা হলে দেবশ্রী চৌধুরীর নাম নিয়ে চর্চা হতে পারে বলেও খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy