Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বানের সতর্কবার্তা দিতে গঙ্গার ঘাটে বসবে সাইরেন

গঙ্গায় জোয়ার কিংবা বান আসার আগেই বেজে উঠবে সাইরেন। একটি-দু’টি ঘাটে নয়। বেশ কয়েকটি ঘাটে একসঙ্গে এই সাইরেন বাজানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দীক্ষা ভুঁইয়া
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ০১:৩৪
Share: Save:

গঙ্গায় জোয়ার কিংবা বান আসার আগেই বেজে উঠবে সাইরেন। একটি-দু’টি ঘাটে নয়। বেশ কয়েকটি ঘাটে একসঙ্গে এই সাইরেন বাজানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সঙ্গে মাইকে ঘোষণা। পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম (পিএ সিস্টেম)-এর মাধ্যমে বান আসার আগে এ ভাবেই সাধারণ মানুষকে সতর্ক করার ব্যবস্থা নিতে চলেছে কলকাতা পুলিশ। একই সঙ্গে ঘাটে লাগানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা। তাতে ধরা পড়বে বান আসার যাবতীয় ছবি। ওই সময়ে কোথাও কেউ গঙ্গায় তলিয়ে যাচ্ছেন কি না, ধরা পড়বে তা-ও।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে উত্তর বন্দর থানা এলাকার নিমতলা শ্মশানে এসেছিলেন নিউ টাউনের একটি পরিবারের সদস্যেরা। সৎকারের পরে অস্থি বিসর্জনের জন্য পাশের ঘাটে নামার পরে আচমকা বান এসে যাওয়ায় তলিয়ে যান ন’জন। স্থানীয় লোকজন সঙ্গে সঙ্গে সাত জনকে উদ্ধার করেন। কিন্তু প্রসেনজিৎ মজুমদার এবং মিতালি চৌধুরী নামে দু’জন তলিয়ে যান। পরে প্রসেনজিতের দেহ পাওয়া গেলেও এখনও মেলেনি মিতালিদেবীর দেহ। ওই ঘটনার পরে কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। গঙ্গায় জোয়ার কিংবা বান আসছে কি না, কিংবা কখন ভাটা শুরু হবে — সে সব তথ্য গঙ্গার তীরবর্তী থানা এবং শ্মশানঘাটগুলিকে আগাম জানানোর কথা রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের। কিন্তু গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এ ধরনের কোনও সতর্কবার্তা রিভার ট্র্যাফিক পুলিশ দেয়নি। আগাম সতর্কবার্তা না থাকায় থানা কিংবা শ্মশানঘাটগুলি থেকে সাধারণ মানুষকেও সতর্ক করা যায়নি। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে রিভার ট্র্যাফিক পুলিশ জানিয়েছিল, সে দিনও স্পিডবোটে চেপে ঘাটে ঘাটে ঘুরে সতর্ক করা হয়েছিল মানুষকে। কিন্তু সৎকার করতে আসা ওই দলটি ঘাটে নামার আগে স্পিডবোটটি ওই জায়গা ছেড়ে চলে গিয়েছিল। সতর্কবার্তা তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি। এ রকম পরিস্থিতিতে তাই রিভার ট্র্যাফিক এবং স্থানীয় থানাগুলিকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঠিক হয়েছে, রিভার ট্র্যাফিক সতর্কতা পাঠানোর পরেই স্থানীয় থানা এবং শ্মশানঘাটগুলি থেকে সাইরেন বাজানো হবে এবং মাইকে ঘোষণা করে ঘাটের লোকজনকে সরে যেতে বলা হবে। এতে ফেব্রুয়ারি মাসের ওই দুর্ঘটনার মতো বিষয় এড়ানো যাবে বলেই আশা পুলিশের।

কলকাতা পুলিশের এই সিদ্ধান্তের পরেই নিমতলা শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লি এবং কাঠের চুল্লি সংলগ্ন ঘাট, বিসর্জন ঘাট, আহিরীটোলা ঘাট, কাশী মিত্র শ্মশানঘাটে পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তা বসানোর জায়গা ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করার কাজও হয়ে গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। খুব শীঘ্রই লাগানো হবে সাইরেন এবং সিসি ক্যামেরা।

তবে সাধারণ মানুষকেও ঘাটে নামার সময়ে সতর্ক থাকতে বলছেন পুলিশ কর্তারা। এক পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, বান আসার আগে গঙ্গার জল একেবারে কমে যায়। গঙ্গা খুব শান্ত হয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতি দেখলেই বুঝতে হবে, জোয়ার কিংবা বান আসছে। সাধারণ মানুষকে এটাও জানানো প্রয়োজন। তা হলে সাধারণ ভাবেই দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ganges Siren Sudden Tide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE