Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সাত্তোরের নির্যাতিতা-সহ ধৃতদের জেল হেফাজত

তৃণমূলের পার্টি অফিসে বোমা রাখা নিয়ে পুলিশি নিষ্ক্রিতার অভিযোগ করেছিলেন শনিবার। এর বদলে গ্রেফতার হতে হয়েছিল গত কালই। আর, রবিবার সেই মামলায় জামিন খারিজ হল সাত্তোরের সেই নির্যাতিতা মহিলা-সহ ধৃত ছ’জনের। আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত তাঁদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে সিউড়ির আদালত।

আদালতের পথে সাত্তোরের নির্যাতিতা। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

আদালতের পথে সাত্তোরের নির্যাতিতা। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৫ ১৬:৪৪
Share: Save:

তৃণমূলের পার্টি অফিসে বোমা রাখা নিয়ে পুলিশি নিষ্ক্রিতার অভিযোগ করেছিলেন শনিবার। এর বদলে গ্রেফতার হতে হয়েছিল গত কালই। আর, রবিবার সেই মামলায় জামিন খারিজ হল সাত্তোরের সেই নির্যাতিতা মহিলা-সহ ধৃত ছ’জনের। আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত তাঁদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে সিউড়ির আদালত।

গত কাল সাত্তোরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে বোমা-বারুদ মজুতের অভিযোগ করে বিজেপি-র স্থানীয় নেতৃত্ব। তাদের দাবি, এলাকায় সন্ত্রাস ও বোমাবাজি করার জন্যই সেখানে বোমা মজুত করা হয়েছে। বিজেপি-র দাবি, পুলিশের কাছে এ বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ করলেও তা উদ্ধারে তৎপরতা দেখায়নি পা়ড়ুই থানার পুলিশকর্মীরা। তা নিয়ে এলাকায় বিক্ষোভ-সহ পথ অবরোধ করে বিজেপি। তাতেই কাজ না হওয়ায় পুলিশের উপস্থিতিতেই দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে মজুত করা বোমাগুলি দেখায় দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা। ঘটনায় সময় বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে গ্রেফতার হন সাত্তোরের নির্যাতিতা মহিলা, তাঁর স্বামী ও শাশুড়ি-সহ মোট ছ’জন। তাঁদের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি ধারায় মামলা রুজু করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে কর্তব্যরত সরকারি কর্মীর কাজে বাধাদান, মারধরের অভিযোগ-সহ বোমা রাখা ও ছোড়ার মতো জামিনঅযোগ্য ধারাও। পুলিশের অভিযোগ, গত কাল অবরোধ ওঠাতে গেলে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকর্মীদের হেনস্থা করেন। এমনকী, পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমাও ছো়ড়া হয় বলে দাবি করা হয়।

এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ অভিযুক্তদের কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে জেলার এসপি অফিসের কোর্ট লকআপে আনা হয়। সংবাদমাধ্যমের গুটিকয়েক প্রতিনিধি ছা়ড়া আদালতে আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সিজেএম ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ঋষি কুশারীর এজলাসে এ দিন ধৃতদের জামিনের আবেদনের শুনানি হয়।

ধৃতদের আইনজীবী নির্মল মণ্ডল তাঁর আবেদনে জানান, তৃণমূলের কার্যালয়ে প্রচুর সংখ্যক বোমা উদ্ধার হয়েছে। এর প্রতিবাদ করাতেই তাঁর মক্কেলদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়াও পুলিশের বিরুদ্ধে এর আগেই নির্যাতনের অভিযোগ এনেছে সাত্তোরের ওই মহিলা। এ সবের থেকে নজর ঘোরানোর জন্য পুলিশ মিথ্যা মামলায় তাঁর মক্কেলদের ফাঁসিয়েছে বলেও আদালতে দাবি করেন ওই আইনজীবী। কিন্তু, সমস্ত যুক্তি খণ্ডন করে বিচারক ধৃতদের জামিনের আবেদন খারিজ করে ১৭ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। এ ছাড়া, এ দিন আদালতে কেস ডায়েরি না থাকায় তা নিয়েও প্রশ্ন করেন বিচারক। আগামী ৮ জুলাই তা পেশ করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

গোটা ঘটনায় এ দিন ফের সরব হয়েছেন বিজেপি-র জেলা নেতৃত্ব। দলের বীরভূম জেলা আহ্বায়ক অর্জুন সাহার কটাক্ষ, “তৃণমূল ও পুলিশের কোনও আলাদা সত্তা নেই।” তাঁর দাবি, “দলীয় কার্যালয়ে বোমা উদ্ধার না করে নির্যাতিতার পরিবারকেই ফাঁসিয়ে দেওয়া হল। সাত্তোরের নির্যাতিতার উপর প্রতিশোধ নিতেই এ কাজ করেছে পুলিশ।” বিজেপি-র সহ-সভাপতি সুভাষ সরকারের গলাতেও শোনা গেছে একই সুর। তিনি বলেন, “যাঁরা তৃণমূলের কার্যালয়ে বোমা মজুত রাখার খবর দিল পুলিশ তাঁদেরই গ্রেফতার করল। সাত্তোরের নির্যাতিতার মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্যই এই গ্রেফতারি করা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE