Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ডাক্তারের গাফিলতি, ক্ষতিপূরণ ছ’লক্ষ

রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ২০১২ সালের ২২ জুন পূর্ব মেদিনীপুরের দুর্গাচকের তরুণ অর্পণ দাস খেলতে গিয়ে পড়ে গিয়ে বাঁ পায়ে আঘাত পান। ওই দিনেই তাঁকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। অর্পণের বাবা দিলীপ দাস বলেন, ‘‘নার্সিংহোমে এক্স-রে এবং প্লাস্টার করে ছেড়ে দেওয়া হয়। দেড় মাস পরে প্লাস্টার খুলতেই বাঁ পায়ে শুরু হয় অসহ্য যন্ত্রণা। ওষুধ খেলে আর পায়ে গরম জল ঢাললে সব ঠিক হয়ে যাবে বলে জানান ডাক্তারবাবু।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৩৬
Share: Save:

খেলতে গিয়ে চোট লেগেছিল পায়ে। নার্সিংহোমে এক্স-রে হল। প্লাস্টার হল। ওষুধ দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হল বাড়িতে। দেড় মাস পরে প্লাস্টার খুলতেই অসহ্য যন্ত্রণা। পরীক্ষায় জানা গেল, হাঁটুতে টিউমার আছে। সেটা দেখেননি বা দেখেও দেখেননি নার্সিংহোমের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক!

চিকিৎসায় এই গাফিলতির দায়ে পূর্ব মেদিনীপুরের এক চিকিৎসককে ছ’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিল রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।

রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ২০১২ সালের ২২ জুন পূর্ব মেদিনীপুরের দুর্গাচকের তরুণ অর্পণ দাস খেলতে গিয়ে পড়ে গিয়ে বাঁ পায়ে আঘাত পান। ওই দিনেই তাঁকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। অর্পণের বাবা দিলীপ দাস বলেন, ‘‘নার্সিংহোমে এক্স-রে এবং প্লাস্টার করে ছেড়ে দেওয়া হয়। দেড় মাস পরে প্লাস্টার খুলতেই বাঁ পায়ে শুরু হয় অসহ্য যন্ত্রণা। ওষুধ খেলে আর পায়ে গরম জল ঢাললে সব ঠিক হয়ে যাবে বলে জানান ডাক্তারবাবু।’’

আরও খবর: অনাদায়ি ঋণ কমাতে ফৌজদারি মামলাও

তার পরেও ব্যথা না-কমায় অর্পণকে হলদিয়ার এক অর্থোপেডিক সার্জেনের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষানিরীক্ষায় জানা যায়, তাঁর হাঁটুর হাড়ে টিউমার আছে। ওই সার্জেন দ্রুত অস্ত্রোপচারের জন্য অর্পণকে কলকাতায় পাঠান। মাস চারেক পরে মধ্য কলকাতার একটি নার্সিংহোমে অর্পণের বাঁ পায়ে অস্ত্রোপচার হয়। তবে তিনি এখনও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি।

অর্পণের বাবা দিনমজুর এবং মা পুরসভার সাফাইকর্মী। দিলীপবাবুর অভিযোগ, ‘‘চিকিৎসক সিদ্ধার্থ নস্কর আমার ছেলের পায়ের টিউমারের কথা ঘুণাক্ষরেও বলেননি। ওঁর গাফিলতিতেই ছেলের এই হাল।’’ ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ায় অভিযোগ দায়ের করেছেন দিলীপবাবু।

২০১৩ সালের জুলাইয়ে মামলা দায়ের করা হয় রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে। সম্প্রতি ওই আদালতের বিচারক ঈশানচন্দ্র দাস ও তারাপদ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁদের রায়ে বলেন, ‘‘ঠিক সময়ে যে ওই তরুণের টিউমারের চিকিৎসা হয়নি, তাতে চিকিৎসকের গাফিলতি রয়েছে। এটা পরিষ্কার।’’ রায় ঘোষণার দেড় মাসের মধ্যে চিকিৎসককে ক্ষতিপূরণ বাবদ ছ’লক্ষ টাকা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন দুই বিচারক। চিকিৎসক সিদ্ধার্থ নস্কর অবশ্য বলেন, ‘‘আমার চিকিৎসায় গাফিলতি ছিল না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Compensation Negligence Treatment Consumer Forum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE