Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ঘণ্টাধ্বনি শুনতে পারেন রাজীব কুমারেরা, আসছে কমিশনের বিশেষ দল

ফাঁড়া এখনই কাটছে না আইপিএস অফিসার রাজীব কুমার বা তন্ময় রায়চৌধুরীদের। এই দু’জন ছাড়াও শাসকদলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আরও বেশ কয়েক জন পুলিশ অফিসারের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন কী পদক্ষেপ করে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এরই মধ্যে রাজ্য প্রশাসনের চিন্তা বাড়িয়ে নির্বাচন কমিশনের পাঠানো ২১ জন পুলিশ পর্যবেক্ষক ছাড়াও পৃথক দলে ভাগ হয়ে কমিশনের ২৫ জনের বিশেষ দল আসছে রাজ্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৬ ১৬:৩৩
Share: Save:

ফাঁড়া এখনই কাটছে না আইপিএস অফিসার রাজীব কুমার বা তন্ময় রায়চৌধুরীদের।

এই দু’জন ছাড়াও শাসকদলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আরও বেশ কয়েক জন পুলিশ অফিসারের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন কী পদক্ষেপ করে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এরই মধ্যে রাজ্য প্রশাসনের চিন্তা বাড়িয়ে নির্বাচন কমিশনের পাঠানো ২১ জন পুলিশ পর্যবেক্ষক ছাড়াও পৃথক দলে ভাগ হয়ে কমিশনের ২৫ জনের বিশেষ দল আসছে রাজ্যে। তাঁরা শুক্রবার থেকেই পাঁচটি দলে ভাগ হয়ে জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়বেন। শহর বা গঞ্জ নয়, তাঁরা ছড়িয়ে পড়বেন প্রত্যন্ত এলাকাতেও।

প্রতিটি দলের নেতৃত্ব দেবেন কোনও না কোনও রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারেরা। থাকবেন এক জন করে আইপিএস অফিসার এবং নির্বাচন কমিশনের সচিব বা উপসচিব পদমর্যাদার এক জন করে অফিসার। থাকবেন বিভিন্ন রাজ্যের অতিরিক্ত বা উপনির্বাচনী অফিসারেরাও।

পাঁচটি দলে ভাগ হয়ে প্রতিটি জেলাতে তাঁরা ঘুরবেন ১৮ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিটি দলে থাকবেন পাচঁ জন অফিসার। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, রাজ্যের যে ১২ হাজার এলাকা গোলমালপ্রবণ বলে চিহ্নিত হয়েছে তার বেশির ভাগ এলাকায় তাঁরা ঘুরবেন। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলবেন। তার ভিত্তিতে এলাকায় কোনও বিশেষ ব্যবস্থার প্রযোজন হলে তা নেওয়ার নির্দেশ দেবেন জেলা প্রশাসনকে।

কমিশনের ফুলবেঞ্চের কাছে জেলা প্রশাসন যে রিপোর্ট দিয়েছে তার সত্যতাও যাচাই করতে পারেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। একই সঙ্গে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির হালহকিকত খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। যে সব লোক ভোটে কোনও ভাবে গণ্ডগোল পাকাতে পারে তাদের ধরার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের ভূমিকার তথ্যতালাশ করা। এলাকাভিত্তিক ওই সব লোকের তালিকা ইতিমধ্যেই কমিশনের হাতে রয়েছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু, সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী যাঁরা পিছিয়ে রয়েছেন, অর্থাৎ যাঁদের ভয় দেখিয়ে ভোটদান থেকে বিরত রাখা সম্ভব সেই সব মানুষের মনে আস্থা বাড়াতে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা করার বিষয়টিও খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। এককথায়, রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের যে অভিযোগ উঠেছে তার প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্র সম্পর্কে সম্মক ওয়াকিবহাল হবেন তাঁরা। তাঁদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কমিশনকে প্রয়োজনীয় রিপোর্ট জমা দেবেন প্রতিটি জেলার এই বিশেষ দলের সদস্যরা। যদিও কমিশন ওই বিশেষ দলকে পর্যবেক্ষক হিসাবে চিহ্নিত করতে চাইছে না।

গত ১৪ মার্চ ফুলবেঞ্চ কলকাতা সফরের সময় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জৈদী স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, এই রাজ্যের বিধানসভা ভোট রক্তপাত শূন্য, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে কমিশন প্রযোজনীয় সব ব্যবস্থা করবে।

কমিশন সূত্রের খবর, ভোটারদের মনে আস্থা জাগাতে পারলে এবং ভোটপ্রক্রিয়া চলাকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেই এই রাজ্যেও অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করা সম্ভব।

কমিশন ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্যের প্রতিটি জেলার জন্য এক জন করে পুলিশ পর্যবেক্ষক আসছেন। তাঁরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর নিরন্তর নজর রাখবেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ও টহলদারির বিষয়ে প্রত্যক্ষ ভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখবেন।

২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কমিশন মাত্র চার জন পুলিশ পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছিল। এ বার তা একলাফে বেড়ে ২১ হয়েছে।

ফুলবেঞ্চের কাছে বিরোধীরা অভিযোগ করেছিলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বড় রাস্তার উপর দিয়ে ঘোরানো হচ্ছে। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকায় পাঠানো হচ্ছে না। বিষয়টিকে কমিশন যে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে তা সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়ে দেন জৈদী।

আরও পড়ুন:
আসছেন ২১ পুলিশ পর্যবেক্ষক

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

election commission assembly poll
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE