ছবি: সংগৃহীত।
গ্যাস ও হজমের ওষুধ আর পাঠানো হচ্ছে না বিমল গুরুঙ্গের কাছে। কারণ, ‘কার্যসিদ্ধি’র জন্য গুরুঙ্গ আপাতত একবেলা উপোস করছেন বলে কট্টরপন্থী মোর্চা নেতা-কর্মীদের কয়েক জন জানিয়েছেন। ওই কর্মীদের কাছ থেকেই বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপা শিবিরে খবরে পৌঁছেছে যে, এখন মাছ-মাংস খাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন আত্মগোপনকারী মোর্চা সভাপতি। পুলিশও নজরদারির সময়ে গুরুঙ্গের খাদ্য তালিকা পাল্টানোর ব্যাপারে কিছু কথোপকথন শুনেছে। সেই সুবাদেই পুলিশ জেনেছে, দার্জিলিঙের যে দোকান থেকে গুরুঙ্গের জন্য নিয়মিত গ্যাস ও হজমের ওষুধ যেত, তা প্রায় এক সপ্তাহ ধরে যাচ্ছে না।
সিআইডি-র এক শীর্ষ কর্তা জানান, গুরুঙ্গের সাম্প্রতিক জীবনযাপন সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে। সরাসরি না হলেও গুরুঙ্গের সঙ্গে যাঁদের পরোক্ষে যোগাযোগ রয়েছে, তাঁদের থেকেই ওই সব সূত্র মিলেছে বলে তাঁদের দাবি।
মোর্চার অন্দরের খবর, অতীতেও গুরুঙ্গ টানা সাত দিন একবেলা উপোস করেছেন। দার্জিলিঙের জামুনিতে বিপদনাশক যজ্ঞের আয়োজনের সময়ে রোজই সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত না খেয়ে থাকতেন গুরুঙ্গ। ২০১৩ সালের সেই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিনয় শিবিরের কয়েক জন জানান, তখন গুরুঙ্গ দাবি করেছিলেন, সাত দিন উপোস করে যাগযজ্ঞ করলে বিপদ কেটে যাবে। ওই সময়ে তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক খাদের কিনারায় চলে যাওয়ায় প্রচুর ধরপাকড় হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ছিলেন জিটিএ-র বর্তমান কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গও। বিনয় অবশ্য এখন তা নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘জঙ্গলে বসে তুকতাক করে পাহাড় অচল করা যাবে না। মানুষ গোর্খাল্যান্ড চান। তা বলে শান্তি, উন্নয়ন শিকেয় তুলে দেওয়াটা পছন্দ করবেন না পাহাড়বাসী। সেটা বোঝা উচিত।’’
তবে উপোস করে কখনও অভীষ্ট লাভ হতে পারে না বলে দাবি করেছেন জ্যোতিষচর্চাকারীরা। কলকাতার মা তারা জ্যোতিষী ও তান্ত্রিক সমাজের উত্তরবঙ্গের অন্যতম সদস্য বিদ্যুৎ দাশগুপ্ত তথা দেবঋষি শাস্ত্রী বলেন, ‘‘উপোসটা একেবারেই শরীরশুদ্ধির ব্যাপার। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে করলে এতে শরীরের অনেক সময় ভাল হতে পারে। কিন্তু, কোনও কর্মসিদ্ধির জন্য উপোস করে লাভ নেই।’’ তাঁর সংযোজন, তা ছাড়া পাহাড়ের জ্যোতিষবিদদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি, অদূর ভবিষ্যতে ফের ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কোনও যোগ এখনও গুরুঙ্গের রাশিচক্রে তাঁরা দেখছেন না।’’
পুলিশ-সিআইডি অবশ্য জ্যোতিষচর্চা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না। বরং, এখন গুরুঙ্গ ঠিক কোথায়, তা নিশ্চিত করতে ঘাম ঝরাচ্ছেন। দিল্লি লাগোয়া এলাকায় ঘাঁটি গেড়ে থাকা রোশন গিরির সঙ্গে গুরুঙ্গ নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলে পুলিশ নিশ্চিত। সেই সুবাদে পুলিশের ধারণা, সিকিম থেকে ক্রমশ নেপালের দিকে সরছেন। সেখান থেকে কোনও মতে দিল্লি পৌঁছনোই লক্ষ্য গুরুঙ্গের। তাই সিআইডি-র একটি টিম দিল্লিতে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy