বিমান বসুকে চিঠি দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র।—ফাইল চিত্র।
একত্রে পথে নামার কথা চলছে বেশ কিছু দিন। এরই মধ্যে রাজ্যের তিন বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে গেল। অথচ বাম ও কংগ্রেসের একসঙ্গে পথে নামা এখনও হল না! আর সময় নষ্ট না করে এই বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আর্জি জানিয়ে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুকে চিঠি দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। বিমানবাবু আজ, শনিবারই বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকলেন।
মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর জন্মের দেড়শো বছর উপলক্ষে সোমেনবাবুদের আমন্ত্রণে একটি প্রদর্শনীতে গিয়েছিলেন বিমানবাবু-সহ গোটা বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। সে দিনই প্রদেশ কংগ্রেসের দফতর বিধান ভবনে দু’পক্ষের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। যৌথ মঞ্চ গড়ে কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় নামার কথা সে দিনই বলেছিলেন সোমেনবাবু। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের সঙ্গেও তাঁর ফোনে একাধিক বার কথা হয়েছিল। আবার বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক যৌথ মঞ্চ গড়ারই প্রস্তাব দিয়ে সোমেনবাবু ও বিমানবাবুকে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু সাত মণ তেল পুড়িয়েও কলকাতার রাস্তায় এখনও একটা যৌথ মিছিল হয়নি! এরই মধ্যে উপনির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঠিক হয়ে যাওয়ায় কংগ্রেস এবং বাম শরিক— দু’দিক থেকেই চাপ বাড়ল আলিমুদ্দিনের উপরে।
মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের ফল থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা তাঁর শুক্রবারের চিঠিতে বলেছেন সোমেনবাবু। তাঁর মতে, কংগ্রেস, এনসিপি ও অন্য কিছু দল মিলে মহারাষ্ট্রে বিশ্বাসযোগ্য জোট তৈরি করেই বিজেপির অর্থ ও প্রশাসনিক শক্তির সঙ্গে টক্কর দিয়েছে। ওই মডেলের ভিত্তিতেই বাংলায় বাম ও কংগ্রেসের জোটের পক্ষে সওয়াল করেছেন সোমেনবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘পারস্পরিক বিশ্বাস হবে জোটের ভিত্তি। জোটের খুঁটিনাটি কাগজপত্র আমরা তৈরি করব ঠিকই কিন্তু মানুষের বিশ্বাস অর্জনই হবে আমাদের জোটের অভিমুখ’। বিমানবাবুর কাছে তাঁর আর্জি, ‘কালিয়াগঞ্জ, করিমপুর ও খড়গপুর সদর বিধানসভা কেন্দ্রে ২৫ নভেম্বর উপনির্বাচনে দিন ঘোষণা হয়েছে। এখনই সিদ্ধান্ত না নিলে এই বার্তা রাজ্যের প্রতিটি গ্রাম-শহরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। তাই আর সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না’।
উপনির্বাচনে কালিয়াগঞ্জ ও খড়গপুর সদর কংগ্রেসকে ছেড়ে করিমপুরে সিপিএম লড়বে, এমন সমঝোতা প্রাথমিক ভাবে হয়েই রয়েছে। তবে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের মতো কেউ কেউ মনে করছেন, খড়গপুরে এখন কংগ্রেসের সাংগঠনিক অস্তিত্ব প্রায় কিছুই নেই। এর মধ্যে সোমেনবাবু, মান্নান, কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী, শুভঙ্কর সরকারেরা নানা উপলক্ষে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীকেও যৌথ কর্মসূচির কথা বলেছেন। সুজনবাবুর বক্তব্য, ‘‘লোকসভা ভোটে এখানে তৃণমূল ধাক্কা খেয়েছে। তৃণমূলের বিকল্প হিসেবে যে বিজেপিকে অনেকে ভাবছিলেন, দুই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন ও বিভিন্ন উপনির্বাচনে তারাও মানুষের ক্ষোভ টের পেয়েছে। এই অবস্থায় আমাদের সম্মিলিত ভাবেই বিকল্প গড়ার রাস্তায় যাওয়া উচিত।’’
ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়ও বলছেন, ‘‘অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে দ্রুত। বারবার সেই ভোটের সময়ে সমঝোতা করলে মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy