খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ডেঙ্গি-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু কলকাতা ও জেলায় ডেঙ্গি ও জ্বরে প্রাণহানির বিরাম নেই। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কলকাতায় এক, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তিন এবং শিলিগুড়িতে এক জন ডেঙ্গি এবং জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিন জন মহিলা এবং দু’জন পুরুষ।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ লেদার কমপ্লেক্স এলাকার বাসিন্দা সাকিলা বিবি (৫৫) বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মারা যান। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গির উল্লেখ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বেহালা-পর্ণশ্রীর বিদ্যাসাগর কলোনির এক বাসিন্দা ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন। মিতা চৌধুরী (৫৪) নামে ওই মহিলা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাঁর রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডেঙ্গি-আক্রান্ত এক প্রৌঢ় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শুক্রবার মারা যান। তাঁর নাম গৌতম সরকার। দিন চারেক আগে তিনি ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁরও রক্তে ডেঙ্গি-জীবাণু পাওয়া গিয়েছিল।
জ্বরে মৃত্যুর ঘটনা থামছে না দেগঙ্গাতেও। বৃহস্পতিবার রাতে ফের এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে সেখানে। জাহানারা বিবি নামে বেড়াচাঁপা-১ পঞ্চায়েতের পশ্চিম চ্যাংদানার ওই মহিলাকে তাঁর পরিবারের লোকজন সোমবার বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। ওষুধপত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে যান জাহানারা। পরের দিন ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলে আবার কিছু ওষুধপত্র দিয়ে তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন সেখানকার চিকিৎসক। বৃহস্পতিবার কামারহাটি সাগর দত্ত হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই মৃত্যু হয় জাহানারার।
ভাইরাল জ্বরে আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে শিলিগুড়িতে। শ্রবণ যাদব (৪৯) নামে ওই ব্যক্তি শুক্রবার সকালে খালপাড়ার একটি নার্সিংহোমে মারা যান। শিলিগুড়ির তিন নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত গুরুঙ্গবস্তির ওই বাসিন্দা পুরসভার বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মী ছিলেন।
পারিবারিক সূত্রের খবর, জ্বর হওয়ায় শ্রবণকে বুধবার শিলিগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকেরা জানান, ডেঙ্গি হয়েছে। প্লেটলেট কমতে থাকায় বৃহস্পতিবার তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে নিয়ে যেতে বলা হয়। কিন্তু বাড়ির লোকেরা তাঁকে খালপাড়ার নার্সিংহোমে ভর্তি করিয়ে দেন। সেখানে তিন ইউনিট প্লেটলেটও দেওয়া হয় তাঁকে। জ্বরের সঙ্গে যকৃতে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এ দিন তিনি মারা যান। ভাইরাল জ্বর এবং ‘মাল্টি অর্গান ফেলিওর’-এর জেরে মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানান। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য জানান, ঠিক কী কারণে শ্রবণ মারা গেলেন, তা দেখা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী এ দিন বলেন, ‘‘বিভিন্ন জেলার হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর রিপোর্ট এসেছে। পর্যবেক্ষণ চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy