Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Rajeev Banerjee

পুলিশি ধাঁচে বিশেষ বাহিনী বন সুরক্ষায়

গ্রামাঞ্চলে চর বা ‘সোর্স নেটওয়ার্ক’ দৃঢ় করার উপরেও জোর দিয়েছেন বনকর্তারা।

বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:২০
Share: Save:

উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে কাঠ পাচার চক্রের কথা বারবার উঠে এসেছে। গত কয়েক বছরে একাধিক গন্ডার চোরাশিকার হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বনের সুরক্ষায় উত্তরবঙ্গে কার্যত পুলিশের ধাঁচে চলতে চাইছে বন দফতর। প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) বিনোদকুমার যাদব জানান, ২৪ ঘণ্টা ওয়্যারলেস কন্ট্রোল রুমের পাশাপাশি তড়িঘড়ি অভিযানের জন্য বিশেষ বাহিনীও (র্যাপিড রেসপন্স টিম) তৈরি হচ্ছে। কোনও খবর পেলেই চটজলদি অভিযান চালাবে এই বাহিনী। বন সুরক্ষায় দীর্ঘদিন আগে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের একটি ব্যাটেলিয়নকে নিয়োগ করা হয়েছিল। সেই বাহিনীকেও এই ধরনের অভিযানে তাদের কাজে লাগানো হবে।

গ্রামাঞ্চলে চর বা ‘সোর্স নেটওয়ার্ক’ দৃঢ় করার উপরেও জোর দিয়েছেন বনকর্তারা। বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, যে সব গ্রামবাসী বন দফতরকে অপরাধ ও অপরাধী সম্পর্কে খবর দেবেন তাঁদের নাম-পরিচয় গোপন রেখেই বড় অঙ্কের পুরস্কার দেওয়া হবে। বন দফতরের খবর, সম্প্রতি সুকনায় একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এই নতুন পরিকল্পনা ঠিক হয়েছে। উত্তরবঙ্গ অসম, নেপাল ও ভুটান লাগোয়া তাই এই অঞ্চলগুলিতে চোরাশিকার ও কাঠ পাচারের দাপট বেশি। ওই বৈঠকের পরেই একটি অভিযানে অসম থেকে আলিপুরদুয়ারে ঢোকার আগে প্রচুর চোরাই কাঠ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বনাঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত অফিসারদের বলা হয়েছে, রোজ সকালে আগের দিনের রিপোর্ট কলকাতায় সদর দফতরে পাঠাতে হবে।

প্রথমে মূলত গরুমারা, জলদাপাড়া ও বক্সার জঙ্গলেই নজরদারি বাড়বে। কারণ, ওই তিনটি জঙ্গলে বহু মূল্যবান গাছ এবং হাতি, গন্ডার, চিতাবাঘের মতো প্রাণী রয়েছে। ২০১৮ সালে এবং ২০১৯ সালে গরুমারায় গন্ডার চোরাশিকারও হয়েছে। হাতির অপমৃত্যু ঠেকাতেও পদক্ষেপ করা হচ্ছে। অন্যান্য বনাঞ্চলেও ধাপে ধাপে নজরদারি বাড়ানো হবে।

বিনোদকুমার জানান, জলদাপাড়ায় আরও ৮টি হাতি মোতায়েন করা হচ্ছে। এ নিয়ে মোট ৬৫টি হাতি জলদাপাড়ায় নিযুক্ত হবে। তোর্সা, সিসামারি, হলং নদীর ধারের ১৯টি নজরমিনারে ২৪ ঘণ্টা প্রহরী থাকবে। ১০টি সশস্ত্র পুলিশ ও বনকর্মীদের টহলদারি দল প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে তারা টহল দেবে। বক্সায় ১০টি, তোর্ষার পাশে পাঁচটি এবং গরুমারায় ৩টি নতুন বন দফতরের ক্যাম্প তৈরি হবে। চোরাশিকারি ধরতে ৩টি বেলজিয়ান ম্যালিনোয়া-সহ ৬টি স্নিফার ডগ মোতায়েন রয়েছে। বিনোদকুমার বলেন, “গন্ডার শিকারে অভিযুক্তেরা ধরা পড়েছে এবং জেলে সাজা খাটছে। কিন্তু আমরা চাই বন্যপ্রাণ সুরক্ষা থাকুক। তাই অপরাধ ঠেকানোতেই জোর দেওয়া হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Forests Special Force
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE