Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Bhangar

জট কাটল ভাঙড়ে, ‘পাওয়ার গ্রিড’ নয়, হবে সাবস্টেশন

ভাঙড় সংহতি কমিটির আহ্বায়ক দিবাকর ভট্টাচার্য এবং অনুরাধা দেবের তরফ থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সরকারের সন্ত্রাস ও রাজনৈতিক কেরিয়ারের লালসার কাছে জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ কমিটির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব আত্মসমর্পণ করে ভাঙড়ের গ্রামবাসীর প্রতি চরম বিশ্বসঘাতকতা করেছে।’

বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য অধিগৃহীত জমি। ফাইল চিত্র।

বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য অধিগৃহীত জমি। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৮ ২১:১৮
Share: Save:

পাওয়ার গ্রিড নিয়ে প্রায় দু’বছর ধরে ভাঙড়ে চলা অচলাবস্থা অবশেষে কাটল। আগামী মঙ্গলবার থেকেই ভাঙড়ে বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু হতে চলেছে। শুধু তা-ই নয়, গ্রামবাসীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

শনিবার আলিপুরে নব প্রশাসনিক ভবনে জমি কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রশাসনিক কর্তারা। দীর্ঘ আলোচনার পর দু’পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়। জমি কমিটির নেতা অলীক চক্রবর্তী বলেন, “দীর্ঘ আন্দোলনের পর আমাদের জয় হল। দাবি মেনে নিয়েছে সরকার। এখানে কোনও পাওয়ার গ্রিড তৈরি হবে না, তার বদলে হবে আঞ্চলিক সাব-স্টেশন। নিহত এবং ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবেন।” জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাওয়ের স্বাক্ষরিত চুক্তিপত্রের প্রথমেই বলা হয়েছে, ‘পরিবর্তিত প্রকল্পে এটি গ্রিড নয়, কেবলমাত্র একটি আঞ্চলিক সাবস্টেশন হিসেবে তৈরি হবে।’

ভাঙড় আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত একটা অংশ অবশ্য এই চুক্তিকে সদর্থক ভাবে নিচ্ছেন না। ভাঙড় সংহতি কমিটির আহ্বায়ক দিবাকর ভট্টাচার্য এবং অনুরাধা দেবের তরফ থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সরকারের সন্ত্রাস ও রাজনৈতিক কেরিয়ারের লালসার কাছে জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ কমিটির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব আত্মসমর্পণ করে ভাঙড়ের গ্রামবাসীর প্রতি চরম বিশ্বসঘাতকতা করেছে।’

শহরের রাস্তায় তখন আন্দোলন। ফাইল চিত্র।

জমি কমিটির নেতা অলীক চক্রবর্তী জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরই প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছিল। আগেই সমাধান সূত্র বেরনোর একটা ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। এ দিন ছিল চূড়ান্ত বৈঠক। অলীক চক্রবর্তী ছাড়াও এসেছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীরা। প্রশাসনের তরফে ছিলেন জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও, পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ–সহ শীর্ষকর্তারা। দু’পক্ষই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ায় উদ্যোগী হয়।

আরও পড়ুন: অমিত শাহ-র হাসি চওড়া করল জঙ্গলমহল

জমি কমিটির তরফে ভাঙড়ের ‘পাওয়ার গ্রিড’–এর বদলে ‘আঞ্চলিক সাবস্টেশন’ এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের আর্থিক সাহায্যের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি গ্রামবাসীদের উপর থেকে মামলা তুলে নেওয়ারও শর্ত দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়াও গ্রামবাসীরা প্রশাসনের কাছে এলাকার নিকাশি, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংস্কার, পাকা রাস্তা নির্মাণের দাবি জানান। অলীকের দাবি, সব সমস্যাই মন দিয়ে শুনেছেন প্রশাসনিক কর্তারা। শেষ পর্যন্ত দাবি মেনেও নিলেন।

আরও পড়ুন: ‘রুটি’ নিয়ে রাজনীতি, উত্তাল হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়

গত বছরের ১৭ জানুয়ারি থেকে ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড প্রকল্প বন্ধের দাবিতে আন্দোলন চলেছে। বাসিন্দারা দফায় দফায় অবরোধ–বিক্ষোভে করেন। জনতা–পুলিশের খণ্ডযুদ্ধে রক্তাক্ত হয়েছে ভাঙড়ের মাটি। প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। সেই আন্দোলনের একটি পর্যায় এই চুক্তির মাধ্যমে শেষ হল, মনে করছেন ভাঙড়ের মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE