Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সাগরমেলায় জলে প্লাস্টিক আটকাতে শক্ত জাল

‘ফ্লোটিং বুম’ ব্যবহার করে সাগরে তীর্থযাত্রীদের জন্য বিপদ-সঙ্কেত বা বার্তা দেওয়া হত। এ বার সেই বুমের সঙ্গেই থাকবে জাল।

গঙ্গাসাগরে প্লাস্টিক জঞ্জাল আটকাতে সমুদ্রে ‘ফ্লোটিং বুম’-এর (চিহ্নিত) সাহায্যে জালের ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। নিজস্ব চিত্র

গঙ্গাসাগরে প্লাস্টিক জঞ্জাল আটকাতে সমুদ্রে ‘ফ্লোটিং বুম’-এর (চিহ্নিত) সাহায্যে জালের ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। নিজস্ব চিত্র

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২০ ১১:০০
Share: Save:

বাহাত্তর ঘণ্টা পরে গঙ্গাসাগর মেলার ঢাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে কাঠি পড়বে। মেলাকে প্লাস্টিক-মুক্ত করতে ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ করেছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অধীন গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ এবং জেলা প্রশাসন। সেই ব্যবস্থাপনায় এ বার যুক্ত হল ‘ফ্লোটিং বুম’ এবং তার সঙ্গে লাগানো ‘নেট’ বা শক্ত দড়ির জাল। ওই ভাসমান বুম জলের উপরিতল থেকে জালকে ভাসিয়ে রাখবে। আর সাগরে ভেসে যাওয়া আবর্জনা আটকাবে সেই জাল।

‘ফ্লোটিং বুম’ ব্যবহার করে সাগরে তীর্থযাত্রীদের জন্য বিপদ-সঙ্কেত বা বার্তা দেওয়া হত। এ বার সেই বুমের সঙ্গেই থাকবে জাল। সাগরের জলে বর্জ্য পড়লে জোয়ারের সময় তা যাতে ওই জালে গিয়ে আটকে যায়, সেই জন্যই এই বন্দোবস্ত বলে জানাচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তারা। জালে আটকে যাওয়া আবর্জনা নির্দিষ্ট সময় অন্তর তুলে সাগরের জল পরিষ্কার রাখতে চান তাঁরা। কপিল মুনির আশ্রমের সামনের সৈকতে এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে থাকবে এই জাল। এমন পদক্ষেপ গঙ্গাসাগর মেলায় এই প্রথম বলে জানাচ্ছেন পর্ষদ এবং জেলা প্রশাসনের কর্তারা। ওই ফ্লোটিং বুমের গায়ে বিপদবার্তার সঙ্গেই থাকবে দূষণ রোধের কথাও। বুমের ৩০টির বেশি নোঙরের ব্যবস্থাও থাকবে। মেলা সাঙ্গ হলেই বুমের সঙ্গে ওই জালের ব্যবস্থা গুটিয়ে ফেলা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা।

গঙ্গাসাগর মেলায় কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। এই ধরনের মেলাকে প্লাস্টিক-মুক্ত করা কি আদৌ সম্ভব? এই প্রশ্নের জবাবে এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, ‘‘সবাই মিলে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সাফল্য নিয়ে আমরা আশাবাদী।’’ সাগরদ্বীপ, আট নম্বর লট এবং নামখানা পয়েন্টের স্থানীয় দোকান, ডালা, রেস্তরাঁয় ‘প্লাস্টিক বদল এবং বিতরণ কর্মসূচি’ নিয়েছে প্রশাসন। প্লাস্টিকের পরিবর্তে ওই সব দোকান, রেস্তরাঁয় দেওয়া হবে পাট বা বাঁশপাতার ব্যাগ বা ঠোঙা। তার সঙ্গে থাকবে মাটিতে দিলে দ্রুত মিশে যায়, এমন পচনশীল জিনিস দিয়ে তৈরি চায়ের কাপ, গ্লাস, চামচ, স্ট্র-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী।

আরও পড়ুন: এনআরবি-বিএএ নিয়ে যুব সিপিএম দিল্লি অভিযানেও

এই কর্মসূচি আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নিয়েছে প্রশাসন। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের কাজে লাগাচ্ছে তারা। তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের পথে ১০টি কিয়স্কের ব্যবস্থাও থাকছে। সেখানে ভর্তুকিতে প্লাস্টিকহীন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পাওয়া যাবে আগামী বুধবার থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। সেই সঙ্গে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র ঠেকাতে ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবী থাকবেন সাগরদ্বীপ, কাকদ্বীপের জেটিঘাটে ঢোকার রাস্তায় এবং নামখানায়। কারও হাতে প্লাস্টিক দেখলে স্বেচ্ছাসেবীরা তা নিয়ে নেবেন। পরিবর্তে প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেবেন সংশ্লিষ্ট তীর্থযাত্রীর হাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Floating Boom Gangasagar Mela Plastic Pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE