Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূল বিরোধী, তবু ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইল রাজ্য

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আর্জি মেনে পুরভোটের জন্য দিল্লির কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কলকাতা-সহ ৯২টি পুরসভার জন্য কেন্দ্রের কাছে কত কোম্পানি আধাসেনা চাওয়া হবে জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলে তা ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন নবান্নের এক শীর্ষকর্তা। দিল্লির কাছে আধাসেনা চাওয়ার বিষয়টি বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০৩:৩৮
Share: Save:

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আর্জি মেনে পুরভোটের জন্য দিল্লির কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কলকাতা-সহ ৯২টি পুরসভার জন্য কেন্দ্রের কাছে কত কোম্পানি আধাসেনা চাওয়া হবে জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলে তা ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন নবান্নের এক শীর্ষকর্তা। দিল্লির কাছে আধাসেনা চাওয়ার বিষয়টি বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়।

এ দিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায় জানান, পুর নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে রাজ্য সরকারের কোনও আপত্তি নেই বলে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রসচিব। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তারা যোগাযোগও করেছে। সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ কমিশনকে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে চিঠিতে বলা হয়েছে।

নবান্ন আধাসেনা চাইলেও রাজ্যের শাসক দল তার বিরোধী। আগের মতো এ দিনও রাজ্যের দুই প্রবীণ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দেন পুরভোট পরিচালনার জন্য রাজ্যের পুলিশই যথেষ্ট। এ জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই। এ দিন তৃণমূলের এই দুই নেতা আলাদা আলাদা ভাবে কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। পরে সুব্রতবাবু সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা মনে করি রাজ্যের হাতে যে বাহিনী রয়েছে তা দিয়ে কলকাতা পুরসভার মতো চারটি নির্বাচন একসঙ্গে করা যাবে।” শ্লেষের সুরে পার্থবাবু বলেন, “কাদের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী লাগবে? যাদের অফিসের সামনে প্রতিদিন মারামারি হচ্ছে, তাদের লাগতে পারে! আমাদের লাগবে না, রাজ্যের মানুষের লাগবে না।” তবে বামফ্রন্ট, বিজেপি, কংগ্রেস-সহ রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলই আধাসেনা রেখে ভোটের পক্ষে। তাদের বক্তব্য, ভোটের দিন শাসক দলের নির্দেশেই কাজ করবে পুলিশ প্রশাসন। ফলে ভোট অবাধ ও স্বচ্ছ হওয়া অসম্ভব। কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে সেই সম্ভাবনা অনেকটাই কম থাকে।

প্রশাসনের একটি অংশ অবশ্য মনে করে, বাহিনী এলেও তাদের থানায় বসিয়ে রাখা হবে। ভোটের দিন বুথ পাহারার দায়িত্ব থাকবে রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের হাতেই। তাই কয়েক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও অবস্থার বিশেষ হেরফের হবে না।

পুরভোটের জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর আর্জি জানিয়েছে সরকারের কাছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায় ৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর আবেদন জানান। ভোট নিয়ে স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে বৈঠকেও তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রসঙ্গ তোলেন। কমিশন সূত্রের খবর, তখন শাসক দলের সুরেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব। এখন দিল্লির কাছে বাহিনী চাওয়ার কথা তিনিই কমিশনকে জানিয়েছেন।

কেন এই পরিবর্তন? স্বরাষ্ট্র দফতরের ব্যাখ্যা, ৯২টি পুরসভার ১৫ হাজার বুথের জন্য যত কোম্পানি সশস্ত্র বাহিনী প্রয়োজন, তা রাজ্যের হাতেই রয়েছে। সে কথা কমিশনকেও জানানো হয়েছে। তার পরেও কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনীর আর্জি জানিয়ে নবান্নে চিঠি পাঠানোয় নীতিগত কারণে রাজ্য সরকার তার বিরোধিতা করছে না।

কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিয়ে পুর ও পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনা এ রাজ্যে নতুন নয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, শেষ ২০১০ সালের পুর নির্বাচনে রাজ্যে ৭১ কোম্পানি আধাসেনা এসেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE