প্রতীকী ছবি।
সরকারকে চাল দিলে ছ’মাস যাতে তা ভাল থাকে, তার দায়িত্ব নিতে হবে চালকলগুলিকে। সরকারি উদ্যোগে ধান কেনার মরসুম শুরুর আগে এই মর্মে চালকল মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করতে চায় খাদ্য দফতর। কিন্তু তাতে ঘোরতর আপত্তি চালকল মালিকদের। এই নিয়ে বিরোধের জেরে এখনও সরকার-সমবায় সমিতি ও চালকল মালিকদের চুক্তি হয়নি। অথচ সরকারি ভাবে ধান কেনার মরসুম শুরু হয়ে গিয়েছে। মাঝ ডিসেম্বরের থেকেই ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে চাষিদের লাইন পড়তে শুরু করবে বলে খাদ্য ভবনের দাবি।
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘সরকার যে চাল কিনবে তার গুণমান তো দেখে নিতে হবে। ফলে ছ’মাস চাল ভাল থাকবে এই নিশ্চয়তা কেন চালকল মালিকরা দেবেন না?’’ যদিও চালকল মালিকদের সংগঠন বেঙ্গল রাইসমিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশীল চৌধুরীর মন্তব্য, ‘‘চালকল থেকে সরকারি গুদামে চাল যাওয়ার সময় তা পরীক্ষা করে দেখে নেন সরকারি আধিকারিকেরা। এর পর সেই চালের দায়িত্ব সরকারের। সরকারি গুদামে চাল নষ্ট হলে তার দায়িত্ব কেন কল মালিকদের উপর বর্তাবে?’’ যা শুনে খাদ্যমন্ত্রী জানান, খাদ্য দফতর একা এই সিদ্ধান্ত বদলাবে না। চালকল মালিকদের প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিবের কাছে পাঠানো হবে। নবান্ন যা বলবে তাই করা হবে। চালকল মালিকেরা অবশ্য সরকারি এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। তাঁদের যুক্তি, ধান-চাল সংগ্রহে সারা দেশে একই নীতি গ্রহণ করা হয়। কারণ, এর টাকা দেয় কেন্দ্র। ফলে অন্য রাজ্য যে নীতি অনুসরণ করে, এ রাজ্যেরও তা মেনে চলা উচিত।
কেন সরকার এমন কঠোর অবস্থান নিচ্ছে?
খাদ্য দফতর জানাচ্ছে, গত বছর বিভিন্ন জেলায় রেশন এবং মিড-ডে মিলের পচা চাল দেওয়ার অভিযোগ মিলেছে। বীরভূম জেলাতেই ২৬ হাজার মেট্রিক টন পচা চাল ধরা পড়েছিল। সেই চাল অবশ্য সংশ্লিষ্ট চালকল মালিকেরা বদলে দিয়েছিলেন। একই ভাবে খারাপ চাল পাওয়া গিয়েছিল কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদেও। সবমিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার মেট্রিক টন পচা চাল উদ্ধার হয়েছিল। সেই কারণেই এ বার চালকল মালিকদের থেকে ছ’মাস চাল ভাল রাখার নিশ্চয়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানান খাদ্য কর্তারা।
সরকারি সূত্রের খবর, এ বার ৫২ লাখ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে। সরকার প্রতি ব্লকে সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনার জন্য ধান ক্রয় কেন্দ্র খুলবে। এ ছাড়াও ধান কেনা হবে সমবায় সমিতি মারফত। এর পর সেই ধান যাবে চালকলগুলিতে। প্রতি কুইন্টাল ধান ভাঙিয়ে ৬৮ কেজি চাল সরকারি গুদামে পৌঁছে দিতে হবে চালকল মালিকদের। যদিও সেই চুক্তিই এখনও হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy