Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

তারকা-মুখ নয়, পর্যটনে গুরুত্ব পাবে স্থানমাহাত্ম্য

পর্যটনের প্রচারে কি এ বার তারকা-মুখের ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনতে চলেছে রাজ্য সরকার! জোর জল্পনা শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:০৭
Share: Save:

পর্যটনের প্রচারে কি এ বার তারকা-মুখের ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনতে চলেছে রাজ্য সরকার! জোর জল্পনা শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে।

অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের প্রচারের পরে গুজরাতে বিশেষ প্রজাতির গাধা নিয়ে পর্যটকদের মধ্যে উৎসাহ বেড়েছিল। অসমের পর্যটন প্রচারে নজর টেনেছিলেন অভিনেত্রী প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। ক্রিকেটের প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে নিজেদের পর্যটন প্রচারের ‘মুখ’ করেছিল ঝাড়খণ্ড সরকার। এক সময় পর্যটনের প্রচারে এ রাজ্যের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর শাহরুখ খানকে দিয়ে তথ্যচিত্রের শুটিং করিয়েছিল সরকার। তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, তথ্যচিত্রগুলিকে সে-ভাবে ব্যবহারই করা হয়নি। প্রশাসনের অন্দরের একটি অংশের ধারণা, সেই পরিকল্পনা খুব একটা কার্যকর হয়নি বলেই এই জল্পনা বাড়তি জলবাতাস পেয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্যের পর্যটন শিল্পের প্রচারে নতুন করে তারকা-মুখের ব্যবহারের পরিকল্পনা নেই সরকারের। বিকল্প ভাবনায় স্থানমাহাত্ম্যকেই তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পর্যটন-বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, এ রাজ্যের কৌশলের সঙ্গে রাজস্থানের যথেষ্ট মিল রয়েছে। কারণ ওই রাজ্যের সরকারও স্থানমাহাত্ম্য তুলে ধরেই পর্যটনের প্রচার চালাচ্ছে।

এ রাজ্যের ভাবনা ঠিক কী রকম?

পর্যটন দফতরের কর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, এ রাজ্যে প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক বৈচিত্র অনিঃশেষ। অভিযাত্রীদের কাছে প্রতিটি এলাকার রূপ যথাযথ ভাবে তুলে ধরতে পারলে নিজস্বতা বজায় থাকবে। প্রধানত সেই জন্য দীর্ঘদিনের পরীক্ষানিরীক্ষার পরে স্থানমাহাত্ম্য এবং নিজস্বতার উপরে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দফতরের এক কর্তার কথায়, “একেবারে তারকা-মুখের ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, এটা বলার সময় এখনও আসেনি। তবে আপাতত এলাকার বৈশিষ্ট্যকেই তুলে ধরা হচ্ছে। তার জন্য দেশি-বিদেশি একাধিক মাধ্যমকে ব্যবহার করার চিন্তাভাবনা রয়েছে।”

পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, নতুন কর্মসূচি পুরোপুরি থিম-নির্ভর। যার স্লোগান: ‘পরিবর্তনের পথে নতুন চোখে বাংলা’। প্রাকৃতিক সম্পদে ঠাসা পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে ‘সমুদ্র থেকে আকাশ’ ক্যাটিগরিতে রাখা হয়েছে। চা, বাংলার রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার এবং ঐতিহাসিক কেন্দ্রগুলিকে নিয়ে পৃথক থিম-নির্ভর প্রচারের পথে হাঁটতে চাইছে রাজ্য। তা ছাড়াও থাকছে বাউল-সহ লোকশিল্পকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য পর্যটন-পরিকল্পনা।

এ ছাড়া দুর্গাপুজোকে পৃথক ভাবে ব্র্যান্ডিং করতে চাইছে রাজ্য। পুজোর সময় শহরের নানা বৈচিত্র, রূপ, খাওয়াদাওয়া, রেড রোডের কার্নিভাল ইত্যাদি প্রচারে রাখতে চাইছে দফতর। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, পুজোর আগেই শহরের দূতাবাস এবং তারকা বা বাজেট হোটেলগুলিতে পুজো-টুরিজমের যাবতীয় তথ্য পৌঁছে দেওয়ার কৌশল নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি টেমস উৎসবে যোগ দিতে ইংল্যান্ডে গিয়েছেন মন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্ল এবং পর্যটনসচিব অত্রি ভট্টাচার্য। সাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের পাশাপাশি রাজ্যে পর্যটন-আমন্ত্রণের বার্তাও ওই মঞ্চে দেবেন তাঁরা।

তবে সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে আপাতত কোথাও থাকছে না কোনও তারকা-মুখের ব্যবহার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tourism West Bengal tourism Sharukh Khan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE