ফাইল চিত্র।
এ রাজ্যে বসবাসকারি রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভাবনাচিন্তার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে রাখতে চাইছে না রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের একাধিক এলাকায় আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে তথ্য সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠিয়েছে রাজ্য। এ রাজ্যে ক’জন ‘ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশন অব রিফিউজি’ (ইউএনএইচসিআর) পরিচয়পত্র পাওয়া রোহিঙ্গা আছেন, সেই সংখ্যা কেন্দ্রকে জানিয়েছে রাজ্য।
গত ডিসেম্বর মাসে বারুইপুর এলাকায় রোহিঙ্গাদের উপস্থিতি প্রথম জানা যায়। রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে রোহিঙ্গাদের একটি পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, সেই পরিচয়পত্র তাদের কাছে পাওয়া গিয়েছিল। সেই পরিচয়পত্রের সত্যতা যাচাই করতে গত জানুয়ারি মাসে ইউএনএইচসিআর-এর কাছে চিঠি পাঠায় জেলা পুলিশ। প্রত্যুত্তরে গত মার্চ মাস নাগাদ তারা জেলা পুলিশকে জানায়, ওই পরিচয়পত্রগুলির বৈধতা রয়েছে। এমন কার্ড এ দেশে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গাকে দেওয়া হয়েছে। এক বছরের মেয়াদ থাকে সেই পরিচয়পত্রের। ইউএনএইচসিআর-এর নোডাল অফিসার তা নবীকরণ করেন।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রক্রিয়া শুরুর সময় বারুইপুরের হা়ড়দহ এবং ঘুটিয়ারি শরিফে লাগোয়া একাধিক এলাকায় ১৬৮ জন রোহিঙ্গা ছিলেন। তবে এখন সরকারি ভাবে সেখানে ইউএনএইচসিআর পরিচয়পত্র থাকা রোহিঙ্গার সংখ্যা ৬১। জেলা প্রশাসনের একটি অংশ মনে করছে, বেসরকারি মতে সেই সংখ্যাটা আরও বেশি হতে পারে। তবে বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি জেলা পুলিশের কোনও কর্তাই।
সম্প্রতি এই তথ্যই নবান্নের সর্বোচ্চ মহলে পাঠিয়েছে বারুইপুর জেলা পুলিশ। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, সেই তথ্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের একাংশের ব্যাখ্যা, রোহিঙ্গাদের নিয়ে রাজ্য সরকারের করণীয় কিছু নেই। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ারও সম্পূর্ণ ভাবে কেন্দ্রের রয়েছে। কারণ, সাধারণ ভাবে অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি দেখভাল করে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে থাকা সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। এমনকি, কাকে দেশে রাখা হবে, বা হবে না, তা-ও কেন্দ্রের এক্তিয়ারভুক্ত। সেই কারণে বারুইপুরের শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের নিয়ে কী করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের উপরেই ছেড়েছে রাজ্য। রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘‘বিষয়টি পুরোপুরি কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত। ফলে তারাই সিদ্ধান্ত নেবে কী পদক্ষেপ করা হবে। এখানে রাজ্যের কোনও ভূমিকা সে ভাবে নেই।’’
এ ছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন হোম এবং সংশোধনাগারে প্রায় ৪০ জন রোহিঙ্গা রয়েছেন। তাঁদের নিজেদের দেশে থাকতে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনও ওই মামলার অন্যতম শরিক। বিষয়টি বিচারাধীন হওয়ায় রোহিঙ্গা ‘সমস্যা’র গভীরে ঢুকতে রাজি নয় রাজ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy