সরকারি প্রকল্পে নতুন ঘর তৈরি হচ্ছে শবরপল্লিতে। লালগড়ে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
পুরনো একফালি মাটির ঘরটা নতুন ত্রিপলে ঘেরা। গায়ে সাঁটানো কাগজে লেখা, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার, দুর্গত মানুষের পাশে।’
এই ঘর মঙ্গল শবরের। লালগড়ের পূর্ণাপাণির জঙ্গলখাসে যে সাত শবরের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের এক জন। মঙ্গলের মৃত্যুর পরে শুধু ত্রিপল নয়, নতুন ঘরও পেতে চলেছে তাঁর পরিবার। সরকারি প্রকল্পের সেই নতুন ঘরের গাঁথনি শুরু হয়েছে পুরনো ঘরের ঠিক সামনেই। মৃত লেবু শবরের ভাইপো কাঞ্চনও বলেন, ‘‘যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের সকলের ঘরে সরকারি ত্রিপল পৌঁছেছে।’’ শবরপল্লির ঘরে ঘরে সরকারি চালও পৌঁছেছে। মৃত সুধীর শবরের বৌমা রেবতী বললেন, ‘‘এখন আর চালের অভাব নেই। ঘরে বস্তা ভর্তি চাল।’’
গত কয়েক দিনে শবরপল্লির চেহারাটাই বদলে গিয়েছে। পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে সরকারি প্রকল্পের বাড়ি তৈরি করতে জঙ্গলখাসে আসা নির্মাণ শ্রমিক সাইদুল বায়েনের গলায় অবশ্য অন্য সুর। তিনি বলেন, ‘‘আমরা অনেক জায়গায় কাজ করতে যাই। কিন্তু এখানে এসে যে সমস্যায় পড়েছি, তা কোথাও নেই।’’ কী সমস্যা? সাইদুলের জবাব, ‘‘জলের প্রচুর সমস্যা। খাবারেরও। কাছাকাছি ভাতের হোটেল নেই। একটা চায়ের দোকান পর্যন্ত নেই।’’ ঘর তৈরির কাজেও সমস্যা। শেখ মাদারি বলছিলেন, ‘‘একটাই কুয়ো। সেখান থেকে জল এনে কাজ করতে হচ্ছে।’’
এ দিনই জামবনির কাপগাড়িতে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, সরকার যে পরিষেবা দেয় তাতে কারও অনাহারে থাকার কথা নয়। জঙ্গলখাসের শবরপল্লি থেকে জনা সত্তর মুখ্যমন্ত্রীর সভায় গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মৃতদের পরিজনেরাও। তৃণমূলের তরফে বাস পাঠানো হয়েছিল। সন্ধ্যায় সভা থেকে গ্রামে ফিরে খ্যাপা শবর বললেন, ‘‘এই প্রথম দিদিকে দেখলাম। ভীষণ ভাল লেগেছে।’’
তৃণমূলের ভাড়া করা বাস কি এ বারই প্রথম শবরপল্লিতে পৌঁছল? ষাটোর্ধ্ব মুচিরাম শবরের জবাব, ‘‘সভা থাকলে পূর্ণাপানিতে বরাবর একটা বাস আসে। তবে এ বার বাসটা আমাদের পাড়ার কাছে দাঁড়িয়েছিল। লোকজনও একটু বেশিই গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy