Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কৃতীদের অ্যাকাউন্টে মুখ্যমন্ত্রীর দশ হাজার

সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম স্টেডিয়ামে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, সিবিএসই, আইসিএসই, আইএসসি এবং জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় কৃতীদের সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল রাজ্য সরকার। হাজির ছিলেন প্রতিটি পরীক্ষার প্রথম দশে থাকা ছাত্রছাত্রীরা।

আলাপচারিতা: এ বছরের পরীক্ষায় কৃতীদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

আলাপচারিতা: এ বছরের পরীক্ষায় কৃতীদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৮ ০৪:৪৯
Share: Save:

গোল গোল টেবিল অর্ধচন্দ্রাকারে ঘিরে রেখেছে মূল মঞ্চ। টেবিল ঘিরে ২৪৮ জন কৃতী ছাত্রছাত্রী। সামনে উপহারের পাহাড়। তার মধ্যে আছে ল্যাপটপ, ঘড়ি, বই, মিষ্টি, আরও অনেক কিছু। তবে শেষ উপহারটি ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, প্রত্যেক কৃতী পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা জমা দেবে সরকার।

সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম স্টেডিয়ামে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, সিবিএসই, আইসিএসই, আইএসসি এবং জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় কৃতীদের সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল রাজ্য সরকার। হাজির ছিলেন প্রতিটি পরীক্ষার প্রথম দশে থাকা ছাত্রছাত্রীরা। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতার আগে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, সরকারের লক্ষ্য মেয়েদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার। এ বারের পরীক্ষায় তার প্রতিফলন ঘটেছে। বিভিন্ন পরীক্ষায় মেয়েদের যোগদানের হার চোখে পড়ার মতো।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁদের সময়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় নম্বর উঠত না। ‘‘থার্ড ডিভিশন নম্বর দেওয়ার জন্যও পরীক্ষকদের হাত চলত না। অথচ অন্য বোর্ডে ভূরি ভূরি নম্বর উঠত। তাই কলেজে ভর্তির সময় অন্য বোর্ডের নম্বর ২০ শতাংশ করে কমিয়ে দেওয়া হত। ‘‘মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকে ঢালাও নম্বরের ব্যবস্থা করাই ছিল আমাদের সরকারের লক্ষ্য,’’ বললেন মমতা। এ বছর ওই দুই পরীক্ষাতেই ছাত্রছাত্রীদের নম্বর বাড়ায় মুখ্যমন্ত্রী খুশি। এর ফলে জাতীয় স্তরে বাংলার ছাত্রছাত্রীরা প্রতিযোগিতায় আর পিছিয়ে পড়বে না বলেই তাঁর বিশ্বাস।

আরও পড়ুন: স্থায়ী নিয়োগের পথে প্রশিক্ষণ সিভিক পুলিশে

মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামোর উন্নয়ন হচ্ছে। আরও ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেশ কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজ তৈরির কাজ চলছে।

ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই স্কুলের পরিকাঠামো এবং গ্রামের উন্নয়নের জন্য এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছেন। বক্তৃতার পরে মঞ্চ থেকে নেমে প্রত্যেক পড়ুয়ার সঙ্গে আলাপ করেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজেদের অভাব-অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও দেয় অনেকে।

মঞ্চে বসেই সেই সব চিঠি পড়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মমতা। তখনই অনীশা মণ্ডল, অমৃতাংশু মাহেশ, কুন্তক বিটের মতো ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের অভাবের কথা জানান। অনীশা জানান, বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে তাঁর স্কুল। গ্রামে পাকা রাস্তা নেই। কুন্তক জানান, তাঁর মা মেদিনীপুর হাসপাতালে কর্মরত। মায়ের বদলি না-হলে তাঁর পড়াশোনায় সুবিধা হবে। অনীশার বাবা প্রান্তিক
চাষি। পড়াশোনার খরচ চালানোর সামর্থ্য নেই।

সকলকেই আশ্বস্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়ে দেন, কৃতী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যাঁদের প্রয়োজন, তাঁদের সকলকে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে দেবে রাজ্য সরকার। অর্থনৈতিক কারণে কারও পড়াশোনা বন্ধ হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE