Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলে পড়াতে অঙ্ক, ব্যাকরণ মোবাইলে

প্রত্যেক শিক্ষকের মোবাইলে ইংরেজি ব্যাকরণ ও গণিতের নানান সমস্যা ও সমাধান-সহ সবিস্তার অডিও-ভিস্যুয়াল তথ্য দেওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুপ্রিয় তরফদার
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৪
Share: Save:

স্কুলে কোনও সহায়িকা বা রেফারেন্স বই নিয়ে ক্লাসে পড়ানো যাবে না বলে কড়া নির্দেশ রয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতরের। আবার ক্লাসে পড়ানোর জন্য পাঠ্যবই যথেষ্ট নয় বলেই মনে করেন অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা।

এই জোড়া সমস্যার সাঁড়াশি চাপে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। ক্লাসে বাড়তি তথ্যের জোগান কোথা থেকে কী ভাবে আসবে, সেই চিন্তায় তাঁরা জেরবার। মুশকিল আসানের পথ খুঁজতে শুরু করেছে স্কুলশিক্ষা দফতর। প্রত্যেক শিক্ষকের মোবাইলে ইংরেজি ব্যাকরণ ও গণিতের নানান সমস্যা ও সমাধান-সহ সবিস্তার অডিও-ভিস্যুয়াল তথ্য দেওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। তবে এই উদ্যোগকে ইতিবাচক মনে করছে না শিক্ষক সংগঠনের একাংশ।

আপাতত প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব ক্লাসের শিক্ষকদের এই সুবিধা দেওয়ার ভাবনা রয়েছে রাজ্য সরকারের। প্রথমে ইংরেজি ও গণিতের মতো বিষয় দিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু করতে চাইছে তারা। পরে এই প্রকল্পের আওতায় আসতে পারে বিজ্ঞানও।

তথ্য জোগানোর গোটা প্রক্রিয়াটি ঠিক কী রকম হবে?

স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, ধরা যাক, ইংরেজির ‘ভয়েস চেঞ্জ’ বা বাচ্য পরিবর্তন পড়ানো হচ্ছে। পাঠ্যবইয়ে যে-সীমিত সংখ্যক উদাহরণ দেওয়া থাকে, পড়ুয়াদের পক্ষে তা হয়তো যথেষ্ট, কিন্তু শিক্ষকদের ক্ষেত্রে নয়। সেই জন্য রেফারেন্স বইয়ের সাহায্য নিতে হয় শিক্ষকদের। কিন্তু স্কুলশিক্ষা দফতর চাইছে, কী ভাবে বাচ্য পরিবর্তনের ব্যাপারটা পড়ুয়াদের কাছে সহজবোধ্য করে তুলতে হবে, দফতরই সেটা বলে দেবে অডিও-ভিস্যুয়াল রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে। ক্লাসে রেফারেন্স বই নিয়ে পড়ানো বারণ। তবে শিক্ষক-শিক্ষিকারা মোবাইলে ওই রেকর্ডিং দেখে পড়াতে পারবেন। স্মার্ট ক্লাসরুমে পড়ুয়াদের সেটি দেখানো-শোনানোর সুযোগও আছে।

পড়াতে পড়াতে গণিতের কোনও সূত্র ভুলে গেলে শিক্ষকেরা একই ভাবে ওই রেকর্ডিংয়ের সাহায্য নিতে পারবেন। গোটা অডিও-ভিস্যুয়াল রেকর্ডিংটিকে প্রথমে একটি ‘চিপ’-এর মধ্যে ভরা হবে। স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, রাজ্য সরকারের প্রধান উদ্দেশ্যই হল ‘টিচিং লার্নিং মেথড’ যথাযথ রাখা। এই রেকর্ডিং তারই একটা অঙ্গ বলে মনে করছেন বিকাশ ভবনের কর্তারা।

প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষকদের কিছু সমস্যার দরুন দফতরকে এই প্রক্রিয়ার কথা ভাবতে হচ্ছে বলে শিক্ষা শিবিরের অনেকের অভিমত। কেননা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের মধ্যে কিছু খামতি থেকে গিয়েছে। পড়ুয়াদের কাছে পাঠ্য বিষয় সহজবোধ্য ও আধুনিক মানের হচ্ছে না বলেই মনে করছেন অনেকে। তাই প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে সমাধানসূত্র খুঁজছে বিকাশ ভবন। তবে নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সমর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ-সব করে কোনও লাভ নেই। এগুলি নেহাতই ‘আইওয়াশ’, চোখে ধুলো দেওয়া। এর থেকে সরকারের উচিত, পঠনপাঠন ঠিকমতো হচ্ছে কি না, সে-দিকে আরও বেশি নজর রাখা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE