ফাইল চিত্র।
রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের মধ্যে কাজ করে দেখানোর প্রতিযোগিতা এখন তীব্র। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সব দফতর পরিসংখ্যান দিয়ে দেখাতে চায় তারাই সেরা। কিন্তু দফতরগুলির সেরার সেরা হওয়ার পরিসংখ্যানে যে জল আছে, তা এ বার ধরে ফেলেছে অর্থ দফতর। তাই উন্নয়নের নামে বরাদ্দ হাজার হাজার কোটি টাকা কী ভাবে বিভিন্ন দফতর পার্সোনাল লেজার অ্যাকাউন্ট(পিএল) বা সেভিংস অ্যাকাউন্টে ফেলে রেখেছে ঘোষণার ফরমান দিয়েছে নবান্ন। অর্থ দফতরের প্রাথমিক হিসাব, ঠিক কত টাকা পড়ে রয়েছে তার সঠিক কোনও হিসাব নেই। তবে ৫ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত এই খাত থেকে বেরিয়ে আসতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।
অর্থ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘উন্নয়নের বরাদ্দ খরচ করতে না পারলে অর্থবর্ষ শেষে তা দফতরগুলির ফেরত দেওয়ার কথা। কিন্তু গত কয়েক বছরে সেই টাকা ফেরত দেয়নি কোনও দফতর। উল্টে পিএল বা সেভিংস অ্যাকাউন্টে তা জমা করে রাখা হয়েছে। সরকারকে দেখানো হয়েছে উন্নয়নের বরাদ্দ সব খরচ হয়ে গিয়েছে।’’
এ বার কোন দফতর কত টাকা এ ভাবে ফেলে রেখেছে তা ১০ দিনের মধ্যে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, প্রত্যেক দফতরের সচিবকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে তাঁরা কোনও পিএল অ্যাকাউন্টে টাকা ফেলে রাখেননি।
কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী? অর্থ কর্তারা জানান, উন্নয়ন বরাদ্দ পাওয়ার পরই দফতরগুলি অধীনস্ত নিগম, সোসাইটি, পঞ্চায়েত, পুরসভা বা নির্দিষ্ট অফিসারের নামে পিএল অ্যাকাউন্টে সরিয়ে রাখে। যা আর্থিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সামিল। এই টাকার অপব্যবহারও হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে তা টেনে বের করা ছাড়া কোনও উপায় নেই।
১৯৯৭ সালে কংগ্রেস সাংসদ থাকাকালীন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে ট্রেজারি কেলেঙ্কারির তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। সেই মামলারও বিষয়বস্তু ছিল পিএল অ্যাকাউন্টে ৫৫ হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা। এ বারও মুখ্যমন্ত্রী জেনেছেন কাজ দেখাতে লোকদেখানো পরিসংখ্যান দিচ্ছে দফতরগুলি। আসলে বড় অঙ্কের টাকা জমে থাকছে পিএল অ্যাকাউন্টে।
অর্থ দফতর টাকা পেয়ে কী করবে? এক অর্থ কর্তা বলেন, ‘‘সরকার প্রয়োজন হলে ওই টাকা সংশ্লিষ্ট দফতরকেই আবার ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু তাদের হাতে কী পরিমাণ টাকা লুকিয়ে রাখা আছে তা জানা প্রয়োজন। যে খাতের টাকা সেই খাতেই ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। উন্নয়নের টাকা কোনও অফিসারের সেভিংস বা পিএল অ্যাকাউন্টে রাখার পক্ষপাতী
নয় সরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy