শহর জুড়ে দেখা যায় এমন চিত্রই। ফাইল চিত্র
নির্বিচারে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে রাজ্যের পুরসভাগুলি যাতে আরও কড়া হতে পারে, এ বার তার ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। এর জন্য প্লাস্টিক নিয়ে জারি থাকা পুরনো আইন সংশোধন করে নতুন আইন লাগু করতে চায় তারা।
জুলাই-অগস্ট মাসে বৃষ্টির পরে কলকাতা-সহ একাধিক শহরের নিকাশি ব্যবস্থা প্লাস্টিকের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। নর্দমায় শুরু করে নিকাশির বিভিন্ন পথে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক জমে থাকায় জল বেরোতে পারেনি। ফলে শহরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন হয়েছে। এর পিছনে অন্যতম প্রধান কারণ যে প্লাস্টিক, তা মেনে নিয়েছে কলকাতা পুর প্রশাসনও।
অথচ এর ব্যবহার বন্ধ করা নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের তরফে তেমন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। কিন্তু প্লাস্টিক বন্ধ করা যে জরুরি, তা স্বীকার করে নিয়েছেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। এ বার তাই রাজ্য জুড়ে প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে কড়া পদক্ষেপ করতে চায় সরকার। এর জন্য পুরনো আইন সংশোধন করে নতুন বিল আনছে রাজ্য। কাল, বুধবার বিধানসভায় ওই বিল পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
কী ছিল পুরনো আইনে?
পুর দফতর সূত্রের খবর, আগে প্লাস্টিক সংক্রান্ত আইনে বলা ছিল, ২০ মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিক ব্যবহার নিষেধ। এবং রাস্তাঘাটে প্লাস্টিকের প্যাকেট ফেলাও আইনত দণ্ডনীয়। কিন্তু ওই আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে পুর প্রশাসনের কোনও প্রচেষ্টা তেমন নজরে পড়েনি (একমাত্র কলকাতা লাগোয়া বাঙুরে কিছুটা হলেও কাজ হয়েছে)। ইতিমধ্যে অবশ্য পরিবেশ দফতর জানিয়েছে, বছরখানেক আগে ২০ মাইক্রন থেকে বেড়ে সেই মাপ ৪০ মাইক্রন হয়েছে। কিন্তু আইনে থেকে গিয়েছে পুরনো মাপই। সেটাই সংশোধনের প্রয়োজন ছিল।
পুরমন্ত্রী জানিয়েছেন, নতুন বিলে প্লাস্টিকের ঘনত্বের মাপকাঠি নির্দিষ্ট করা হচ্ছে না। বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞ কর্তৃপক্ষ (কমপিটেন্ট অথরিটি) যখন যতটা পুরু প্লাস্টিক নিষিদ্ধ বলে জানাবেন, সেই ধরনের প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি পুরনো আইনে বলা ছিল, রাস্তাঘাটে প্লাস্টিকের প্যাকেট ফেলা চলবে না। নতুন আইনে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, নিকাশি নালাতেও প্লাস্টিক ফেলা যাবে না। কেউ আইন না মানলে কড়া শাস্তির কথাও বলা হচ্ছে।
ফিরহাদ জানান, আইন হওয়ার পরে কলকাতা-সহ রাজ্যের সব পুরসভার কর্তৃপক্ষকে তা বলবৎ করার নির্দেশ দেওয়া হবে। তবে আইন হলেও সেটি কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে ধন্দ রয়েই গিয়েছে। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘‘আইন থাকলেও শহরবাসীকে সচেতন করার কাজটাই সবচেয়ে জরুরি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy