শুধু কলকাতা নয়, জেলার বিভিন্ন শহরেও ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে ছেলেমেয়েদের পড়ানোর ঝোঁক বাড়ছে অভিভাবকদের। ফলে পড়ুয়া হারাচ্ছে বাংলা মাধ্যমের স্কুল।
পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার তাগিদে সরকারি স্কুলে প্রাথমিক স্তর থেকে ইংরেজি মাধ্যম চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। শিক্ষা দফতরের খবর, শুরুটা হচ্ছে সরকারি স্কুল দিয়ে। ধীরে ধীরে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলেও বাংলার সঙ্গে সঙ্গে ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠন চালু করার চেষ্টা চলছে।
আপাতত সরকারি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করা হচ্ছে বলে শুক্রবার হেয়ার স্কুলের দ্বিশতবর্ষের অনুষ্ঠানে জানান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা বজায় রেখেই এই নতুন ব্যবস্থা কার্যকর হবে। ‘‘আমরা যদি বাংলার সঙ্গে ইংরেজিও রাখতে পারি, তা হলে শিক্ষার সার্বিক চাহিদা পূরণ করা যাবে,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষা শিবির সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে স্কুলশিক্ষা দফতরে প্রস্তাব পাঠিয়েছে কলকাতা এবং বিভিন্ন জেলার বহু সরকারি স্কুল। ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠন শুরু করার আগে বেশ কয়েকটি সরকারি স্কুলে সমীক্ষাও চালিয়েছে ওই দফতর।
মে মাসে হাওড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে তখন জানানো হয়েছিল, হাওড়ার শহরাঞ্চলে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে। অভিভাবকেরা আশেপাশের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলিতেই সন্তানদের ভর্তি করতে বেশি আগ্রহী। এ কথা শুনেই মুখ্যমন্ত্রী সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে বাংলা মাধ্যমের সঙ্গে ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠন চালু করতে বলেন।
তবে ইংরেজি মাধ্যম চালু করার অন্য একটি কারণেরও উল্লেখ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানান, অনেক ক্ষেত্রেই বাংলা মাধ্যম স্কুলের মান ঠিক থাকছে না। সেই জন্যও ওই সব স্কুল ছেড়ে চলে যাচ্ছে অনেক পড়ুয়া। এ প্রসঙ্গে হেয়ার স্কুলের কথা তোলেন তিনি। হেয়ার স্কুলের পড়ুয়ারা এক সময়ে মেধা-তালিকার প্রথম দিকে থাকলেও এখন পিছিয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
একই সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রচুর ভাল স্কুলও রয়েছে। বাংলা মাধ্যমের সঙ্গে ইংরেজি মাধ্যমের পঠনপাঠনের ব্যবস্থা হলে স্কুল চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে পারবে। প্রতিযোগিতার মুখে পড়ুয়া খুইয়ে পিছু হটবে না।
এখন কয়েকটি সরকারি স্কুলে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে বাংলা মাধ্যমের সঙ্গে ইংরেজি মাধ্যমও চালু রয়েছে। এ বার প্রাথমিক স্তর থেকে চালু হবে ইংরেজি মাধ্যম। তার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী শিক্ষক-পদ পূরণ করা হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
পার্থবাবু এ দিন জানান, খাস কলকাতাতেই এমন সব প্রাথমিক স্কুল রয়েছে, যেখানে শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন, কিন্তু ছাত্রছাত্রীর দেখা নেই! তাদের বিষয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে। তবে নতুন যে-ব্যবস্থাই চালু হোক, সবই হবে বাংলা মাধ্যমকে রেখে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy