বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি করার জন্য চলতি শিক্ষাবর্ষে মেডিক্যালের স্নাতকোত্তরে (এমডি, এমএস) রাজ্যের চাহিদার থেকেও বেশি কিছু আসন ‘উপহার’ দিতে চেয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু সময়মতো সাড়া না-দেওয়ায় সেই সব আসন আপাতত হাতছাড়া হচ্ছে রাজ্যের।
এক-দু’টি নয়, মোট ৭৮টি আসন প্রায় হাতে এসে গিয়েছিল রাজ্যের! অর্থাৎ সেখান থেকে ৭৮ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে পাওয়া যেত। কিন্তু অভিযোগ, রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের ‘গড়িমসি’তে সেই আসন আর এখন রাজ্য পাচ্ছে না। মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া-র (এমসিআই) কর্তারা জানিয়েছেন, সময়মতো রাজ্যের উত্তর না-পেয়ে তাঁরা আসনগুলি বাতিল করেছেন এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রককে তা জানিয়েও দিয়েছেন। রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য অবশ্য জানান, ৭৮টি আসনই বাতিল হল না কেন্দ্রের দেওয়া অতিরিক্ত ন’টি, তা জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে উত্তর এখনও আসেনি। এমসিআইয়ের অতিরিক্ত সচিব রিনা নায়ার অবশ্য ফোনে বলেন, ‘‘সবই বাতিল করা হয়েছে।’’
রাজ্যে চিকিৎসক, বিশেষ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের আকালের কথা মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য দফতরের আমলা—সকলের মুখে সম্প্রতি বার বার শোনা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ২০১৮-’১৯ শিক্ষাবর্ষে মেডিক্যালের স্নাতকোত্তরে ৬৯টি আসন বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য। আরও ৯টি আসন বাড়িয়ে ৭৮টি আসন প্রাথমিক ভাবে মঞ্জুর করে এমসিআই। শর্ত ছিল, সময়মতো এই বাড়তি আসনের উপযুক্ত পরিকাঠামো
ও শিক্ষক-চিকিৎসকের ব্যবস্থা রাজ্য করে ফেলবে, এই মর্মে স্বাস্থ্যসচিবকে মুচলেকা দিতে হবে। এমসিআইয়ের পরিদর্শনের সময় যদি দেখা যায়, পরিকাঠামো ঠিক নেই, তা হলে আসন
বৃদ্ধি আটকে যাবে। ৬ মার্চ এমসিআইয়ের তরফে এই কথা জানানো হয়। আবার ১২ মার্চ নির্দেশিকা জারি করে এমসিআই জানায়, পশ্চিমবঙ্গ-সহ কয়েকটি রাজ্য উত্তর দেয়নি। তাদের ১৩ মার্চের মধ্যে অবশ্যই মুচলেকা দিতে হবে। কিন্তু রাজ্য তা দেয়নি। রিনাদেবী বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গকেও ৭৮টি আসনের প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সময়মতো পরিকাঠামো তৈরির মুচলেকা না-দেওয়ায় তা বাতিল করা হয়েছে।’’ এই ৭৮টি আসনের মধ্যে মেদিনীপুর মেডিক্যালের ৪৮টি, নীলরতনের ২টি, আরজিকরের ৬টি, এসএসকেএমের ১২টি, বর্ধমানের ২টি ও ন্যাশনাল মেডিক্যালের ৮টি আসন ছিল। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি আসন ছিল অ্যানাস্থেশিয়া, সার্জারি, পেডিয়াট্রিক্সের মতো জরুরি বিষয়ের।
তবে দেবাশিসবাবুর কথায়, ‘‘আমাদের কোন বিষয়ে বেশি বা কম আসন লাগবে, তা জানতে না-চেয়েই এমসিআই বাড়তি আসন দিয়েছে। এর কারণ জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছি। না বুঝে মুচলেকা তো দিয়ে দেওয়া যায় না। এমন নয় যে চিরকালের মতো আসনগুলো বাতিল হল। সেগুলি ফিরে পেতে কথাবার্তা চালাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy