Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বায়ুদূষণের তথ্য দিতেও গয়ংগচ্ছ পর্ষদ

ওয়েবসাইট জানিয়ে দিল, ওই তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) এবং সোমবারের (২৭ নভেম্বর) তথ্য চাওয়া হল পর্ষদের কাছে

মার্কিন দূতাবাসের দেওয়া তথ্য।

মার্কিন দূতাবাসের দেওয়া তথ্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:০৩
Share: Save:

কলকাতার বাতাসে দূষণের মাত্রা কত ছিল, তা জানতে বুধবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ওয়েবসাইট খুলেছিলেন।

ওয়েবসাইট জানিয়ে দিল, ওই তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) এবং সোমবারের (২৭ নভেম্বর) তথ্য চাওয়া হল পর্ষদের কাছে। ফের সেই জবাব, তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। সর্বশেষ দূষণ মাপা হয়েছে ২৬ নভেম্বর। মহানগরের ন’টি এলাকার মধ্যে মিন্টো পার্ক, পরিবেশ ভবন, ডানলপ ব্রিজ এবং বৈষ্ণবঘাটার বায়ুদূষণের মাত্রা দেওয়া রয়েছে। আর সরাসরি ফুসফুসে চলে যাওয়া সূক্ষ্ম কণার তথ্য মিলেছে শুধু মিন্টো পার্কের ক্ষেত্রে। তথ্য না পেয়ে ক্ষুব্ধ গবেষকের মন্তব্য, ‘‘এ যেন ঢাল-তলোয়ারহীন নিধিরাম সর্দার!’’ বাধ্য হয়ে তিনি মার্কিন দূতাবাসের তথ্যই জোগা়ড় করেছেন।

রাজ্যের সঙ্গে টক্কর দিচ্ছে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও! তারা শেষ কবে কলকাতার দূষণ মেপেছে, তা দেখে আঁতকে উঠেছেন ওই গবেষক।

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র জানান, তাঁদের যন্ত্রগুলি নতুন করে বসানো চলছে। তাই নিয়মিত পরিমাপ হচ্ছে না। একই কথা জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রেও। যদিও প্রশ্ন উঠতেই পারে, পরিমাপ বন্ধ না করে ধাপে ধাপে এই কাজ করলে হত না? মার্কিন দূতাবাসের তথ্য বলছে, এ দিন বেলা তিনটের সময়ে মহানগরীর দূষণ সূচক ছিল ১৯৪। অর্থাৎ, অস্বাস্থ্যকর।

যদিও ওই তথ্যে আপত্তি রয়েছে রাজ্যের পরিবেশ কর্তাদের। তাঁদের যুক্তি, নিয়ম না মেনেই মার্কিন দূতাবাস ওই যন্ত্র বসিয়েছে। তাতে যে তথ্য ধরা পড়ছে, তা ঠিক নয়।

রাজ্যের পরিবেশবিজ্ঞানীদের একাংশ অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, ওই তথ্য ঠিক না হলে পর্ষদ নিয়মিত তথ্য প্রকাশ করছে না কেন?

পর্ষদ সূত্রের খবর, কলকাতার মোট ১৪টি জায়গায় যন্ত্র বসিয়ে দূষণ মাপে তারা। রবীন্দ্রভারতী, ভিক্টোরিয়া এবং তারাতলায় স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র রয়েছে। বাকি ১১টি জায়গায় (শ্যামবাজার, মৌলালি, মিন্টো পার্ক, পরিবেশ ভবন, বেহালা চৌরাস্তা, সল্টলেক, ডানলপ ব্রিজ, তপসিয়া, বৈষ্ণবঘাটা, উল্টোডাঙা ও মোমিনপুর) যে যন্ত্র রয়েছে, সেগুলি কাউকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।

পর্ষদ সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় দূষণ পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী, মানবচালিত যন্ত্রগুলি সপ্তাহে অন্তত দু’দিন চালাতেই হবে। সেই নিয়মই চলছে। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কেন মানবচালিত যন্ত্র নিয়মিত চালানো হবে না, সে প্রশ্নও তুলেছেন গবেষকেরা। শুধু তা-ই নয়, যাঁরা ওই সব যন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করেন, তাঁদের অনেকের দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তাঁদের বক্তব্য, প্রথম যখন ওই সব যন্ত্র বসানো হল, তখন যাঁরা সেগুলির দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠেনি। তাই প্রশ্ন ওঠেনি দূষণ-তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pollution দূষণ Pollution control board
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE