Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

খুদেদের প্রযুক্তি ভাবনার আলো আইআইটিতে

বাড়ির বারান্দার টবে শৌখিন গাছ লাগিয়েছেন। কিন্তু গাছের যত্ন নেওয়ার সময় পাচ্ছেন না। মুশকিল আসানে হাজির সিঙ্গাপুরের গ্লোবাল ইন্ডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র প্রত্যুষ বানসার ও এইকাস সিংহ গুলতি।

উদ্ভাবনী: গাছে জল দেওয়ার স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের খুঁটিনাটি বোঝাচ্ছে ছাত্ররা। আইআইটিতে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

উদ্ভাবনী: গাছে জল দেওয়ার স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের খুঁটিনাটি বোঝাচ্ছে ছাত্ররা। আইআইটিতে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৪৩
Share: Save:

বাড়ির বারান্দার টবে শৌখিন গাছ লাগিয়েছেন। কিন্তু গাছের যত্ন নেওয়ার সময় পাচ্ছেন না। মুশকিল আসানে হাজির সিঙ্গাপুরের গ্লোবাল ইন্ডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র প্রত্যুষ বানসার ও এইকাস সিংহ গুলতি। তাদের আবিষ্কার— ‘সেলফ ওয়াটারিং প্ল্যান্ট’। মূলত ‘আরডুইনো ইউএনও’ প্রযুক্তির চিপসেট ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে এই যন্ত্র। এতে গাছ বুঝে মাটির আর্দ্রতা যাচাই করে টবে জল দেওয়া যাবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে।

জল দূষণ ঠেকানোর যন্ত্রও বানিয়ে ফেলেছে তিরুচিরাপল্লির মাউন্ট লিটেরা জি স্কুলের দশম শ্রেণির তিন ছাত্র সৈয়দ এস আদেশ, তাহির আলি ও এম কে আপিনয়ন। তারা বানিয়েছে একটি জলযান। স্মার্টফোন থেকে নিয়ন্ত্রিত এই যন্ত্রের সামনে রয়েছে আবর্জনা তোলার ব্লেড-সহ কনভেয়ার বেল্ট। আর পিছনে কার্বন, ছাই-সহ দূষিত সূক্ষ্ম পদার্থ টেনে নেওয়ার ফিল্টার। সৌরশক্তি চালিত ব্যাটারি চার্জ করেই চলছে এই যন্ত্র।

শনিবার খড়্গপুর আইআইটির নালন্দা কমপ্লেক্সে দেখা গেল অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এমনই সব যন্ত্রের মডেল। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের ২৪টি দল নিয়ে ‘ইয়ং ইনোভেটর’ নামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল আইআইটি-র ‘ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন’ বিভাগের অধীন ‘ব্র্যান্ডিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন সেল’। আইআইটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, স্কুল পড়ুয়াদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত ভাবনা-চিন্তার উৎকর্ষতা বাড়াতেই এই আয়োজন। এ বার ছিল দ্বিতীয় বর্ষ। গত অগস্ট থেকেই শুরু হয়েছিল বাছাই পর্ব। প্রাথমিক ভাবে ৩৮০টি স্কুল আবেদন করেছিল। দ্বিতীয় পর্যায়ে জায়গা পায় ১২০টি স্কুল। সেখান থেকে বাছাই করা হয় চূড়ান্ত ২৪টি দলকে। এ দিনের প্রদর্শনী থেকে বিচারকেরা ৬টি দলকে বেছে নিয়েছেন। আজ, রবিবার সেরা তিনটি দলকে পুরস্কৃত করা হবে।

খড়্গপুর আইআইটি-র ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনের অ্যাসোসিয়েট ডিন, মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক আনন্দরূপ ভট্টাচার্য বলেন, “সত্যি বলতে স্কুল পড়ুয়ারা এ ভাবে ভেবে প্রযুক্তির নিত্যনতুন মডেলের আবিষ্কার করতে পারে সেটা বোধহয় এমন অনুষ্ঠানেই জানা সম্ভব। গত বছরও ভাল সাড়া মিলেছিল।” এ দিন সকালে নেতাজি অডিটোরিয়ামে প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। তার নালন্দা কমপ্লেক্সে হয় প্রদর্শনী। প্রতিটি মডেলের খুঁটিনাটি দেখার পাশাপাশি পরামর্শও দেন আইআইটি-র বিশেষ বিচারক মণ্ডলী। উৎসাহ পেয়ে খুশি খুদে বিজ্ঞানীরাও। দ্রুত গতির গাড়িকে দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচাতে কলকাতার বিবেকানন্দ মিশন স্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়া স্পন্দন ভট্টাচার্য, রাজব্রত দাস ও মৃগাঙ্ক মান্না তৈরি করেছে ‘অটো ব্রেকিং সিস্টেম’। আবার রাজস্থানের কেমব্রিজ কোর্ট ওয়ার্ল্ড স্কুলের প্রতীক যাদব, সঙ্কল্প অরোরা তৈরি করেছে স্বয়ংক্রিয় লেভেল ক্রসিং। ওরা সকলেই বলছে, “আমাদের তৈরি যন্ত্রের মডেল আইআইটি-র মতো প্রতিষ্ঠানে প্রদর্শিত হচ্ছে, এটাই মস্ত পাওনা। তার উপর স্যরেদের পরামর্শ আমাদের সমৃদ্ধ করছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE