সিআইএসএফ-এর প্রতিবাদে খোলা চিঠি বিলি ডিএসও-র । ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী, নিজস্ব চিত্র
সিআইএসএফ মোতায়েন নিয়ে গত ক’দিন ধরে চলা বিতর্কের রেশ পড়ল বিশ্বভারতীর সমাবর্তনেও।
সমাবর্তনের আগের দিন, রবিবারই বিশ্বভারতীতে সিআইএসএফ মোতায়েনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাষ্ট্রপতি তথা বিশ্বভারতীর পরিদর্শকের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি ঘুরতে থাকে ছাত্রছাত্রীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। পরে জানা যায়, ওই চিঠিটি হ্যান্ডবিল আকারে ছাপিয়েছে ছাত্র সংগঠন ডিএসও। রবিবার রাতেই বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস ও বাইরে বেশ কিছু জায়গায় রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে খোলা চিঠি পোস্টার আকারে সাঁটিয়েও প্রতিবাদ জানায় ডিএসও। এ দিন ক্যাম্পাসের বাইরে শান্তিনিকেতনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে সেই খোলা চিঠি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়া বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাতে তুলে দেন ডিএসও-র সদস্যেরা।
ডিএসও-র বীরভূম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুদাম সাহার অভিযোগ, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবেই এ দিন রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে লেখা খোলা চিঠি বিলি করছিলাম। হঠাৎ পুলিশ এসে আমাদের ব্যানার, পোস্টার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং আমাদের কর্মসূচি জোর করে বন্ধ করে দেয়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘সকলেরই গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করার অধিকার রয়েছে। অথচ আমাদের সেই অধিকার প্রয়োগে বাধা দেওয়া হল। সংগঠনের পক্ষ থেকে এই ঘটনার নিন্দা করছি ও ধিক্কার জানাচ্ছি।’’ পুলিশ অবশ্য অভিযোগ মানেনি। ডিএসও-র আরও দাবি, সিআইএসএফ মোতায়েনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রী, আশ্রমিক, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছ থেকে সই সংগ্রহ করে একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রী তথা আচার্য, রাজ্যপাল এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকে পাঠানো হবে।
অন্য দিকে, এ দিন সমাবর্তনে ঢুকতে না-পেরে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্বভারতীর কিছু ছাত্রছাত্রী ও প্রাক্তনী। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি ভবন পিছু একশো জনের মতো ছাত্রছাত্রীকে সোমবারের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের জন্য পাস দেওয়া হয়েছিল। অঙ্কিতা দাস, মধুমিতা বাগ, সুইটি মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘সমাবর্তন আসলে বিশ্বভারতী পরিবারের অনুষ্ঠান। সেই পরিবারের আমরাও সদস্য। ভবন থেকে জানানো হয়েছিল আই-কার্ড থাকলে অনুষ্ঠানে ঢুকতে দেওয়া হবে। তা সত্ত্বেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি।’’ কোচবিহার থেকে আসা বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী প্রণব বর্মন, দীপায়ন দাসের দাবি, ‘‘আগের বারের সমাবর্তনে আমরা এসেছিলাম। কিন্তু এ বার পাস থাকা সত্ত্বেও আইডি প্রুফ না নিয়ে আসায় আমাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে ফিরে যেতে হয়।’’ এ দিন সকাল সাড়ে দশটায় বিশ্বভারতী রথীন্দ্র অতিথিগৃহ এবং রতন কুঠি থেকে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কনভয় আসে বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনে। সেখানে কবিগুরুর বাসভবনে শ্রদ্ধা জানানোর পরে তাঁরা চলে যান আম্রকুঞ্জের জহর বেদিতে, সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। তার আগে গাড়ি থেকে নেমে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কাটান রাজ্যপাল। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। হাসিমুখে পড়ুয়াদের সঙ্গে নিজস্বী তোলার আবদারও মেটান। ছাত্রছাত্রীরাও রাজ্যপালকে এমন খোশমেজাজে পেয়ে খুশি। তাঁরা বললেন, ‘‘রাজ্যপাল যে এমন আন্তরিক ভাবে মিশতে পারেন, ভাবিনি। অন্য রকম অভিজ্ঞতা হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy