পশ্চিমবঙ্গের ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি। আজ এই সংক্রান্ত মামলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার তথা রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে প্রবল অস্বস্তিতে ফেলে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র একে ‘শকিং’ বলে ব্যাখ্যা করলেন।
শেক্সপিয়রের ‘হ্যামলেট’ থেকে উদ্ধৃত করে প্রধান বিচারপতি তাঁর নির্দেশে লিখেছেন, ‘এই বিশাল সংখ্যক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হলে ধারণা হয়, ‘সামথিং ইজ রটন ইন দ্য স্টেট অব ডেনমার্ক’।’ পঞ্চায়েত ভোট নিরপেক্ষ ভাবে, নিয়ম মেনে হয়েছে কি না, কার্যত তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে তাঁর মন্তব্য, কয়েকশো আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হওয়াটা বুঝতে পারি। কিন্তু এ তো হাজার হাজার আসনে কোনও বিরোধী প্রার্থীই নেই! তাঁর যুক্তি, গ্রাম পঞ্চায়েতের মতো গণতন্ত্রের একেবারে তৃণমূল স্তরে এত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হওয়া দেখে মনে হয়, কোনও সমস্যা রয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা, মনোনয়নে বাধার অভিযোগ নিয়ে সিপিএম-বিজেপির মামলায় আজ শীর্ষ আদালত রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চায়, মোট কত আসনে ভোট হয়েছে এবং কত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। কমিশন সেই পরিসংখ্যান দেয়নি। কমিশনের সচিব নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্য এজলাসে হাজির ছিলেন। প্রধান বিচারপতি ভর্ৎসনার সুরে বলেন, ‘‘উনি তা হলে সরকারি অর্থ অপচয় করে এখানে এসেছেন কেন?’’ তাঁর নির্দেশ, এক দিনের মধ্যে হলফনামা দিয়ে সব তথ্য জানাতে হবে। বুধবারই ফের শুনানি।
বিজেপির আইনজীবী পি এস পাটওয়ালিয়া জানান, ৫৮,৬৯২টি আসনের মধ্যে ২০,১৫৯টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। কমিশনের কাছে প্রধান বিচারপতি জানতে চান, এই তথ্য সঠিক কি না। কমিশনের আইনজীবী অমরেন্দ্র শরণ জানান, তথ্য জোগাড় করতে হবে। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘মোটামুটি কত আসনে ভোট হয়েছে, কত আসনে ফল ঘোষণা হয়েছে, সেটুকু তো আপনার নখদর্পণে থাকা উচিত!’’
পরে বিজেপির আইনজীবী কবীরশঙ্কর বসু বলেন, ‘‘সচিব তথ্য জানেন না, নাকি ইচ্ছাকৃত ভাবে দিতে চাইলেন না, বোঝা গেল না।’’ সিপিএমের আইনজীবী শুভাশিস ভৌমিকের মন্তব্য, ‘‘কমিশনের উপর যে বিচারপতিরা রুষ্ট, তা স্পষ্ট।’’
আদালতে তৃণমূলের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ভোট না হওয়া আসনগুলি থেকে অভিযোগের সংখ্যা নামমাত্র। রাজ্যের আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরার দাবি, ‘‘অবাধ ও সঠিক প্রক্রিয়াতেই ভোট হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy