স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের নামে যাদবপুর বিশ্বিদ্যালয়ে অধ্যাপক চেয়ারের প্রস্তাব দিলেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। বাংলাদেশ উপদূতাবাসের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে সোমবার কলকাতায় একটি আলোচনাসভায় উপাচার্য বলেন, এই উদ্যোগ দু’দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে মেলবন্ধনের উদাহরণ হয়ে থাকবে।
এর আগে ২০১৪-র অগস্টে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালীন সেখানে শেখ মুজিবের নামে একটি অধ্যাপক চেয়ারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন সুরঞ্জনবাবু। নভেম্বরে রাজ্য সরকার সেই প্রস্তাব মেনে নেয়। তার পরেও নানা কারণে সেটি এখনও চালু হয়নি।
সুরঞ্জনবাবু পরে জানান, দু’টি প্রস্তাবের মধ্যে একটু মৌলিক তফাৎ রয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত চেয়ারটি স্থায়ী। এ’টি পরিচালনার ব্যয়ভার দেওয়ার কথা রাজ্য সরকারের। বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন ও কিছু বিষয়ে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে সেটি এখনও কার্যকর হতে পারেনি। কিন্তু যাদবপুরে তিনি যে চেয়ারের প্রস্তাবটি দিয়েছেন, তা ভিজিটিং অধ্যাপকের। বাংলাদেশ সরকার এই চেয়ারে কোনও বিশিষ্ট অধ্যাপককে মনোনীত করে পাঠালে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁর আসা-যাওয়া ও থাকার ব্যয়ভার বহন করবেন। স্টাইপেন্ড ও অন্যান্য খরচ বাংলাদেশ সরকারের দেওয়ার কথা।
কবে কার্যকর হতে পারে এই প্রস্তাব? উপাচার্য জানান, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুমোদন চাই এ জন্য। তার পরেও কিছু টেকনিক্যাল বিষয় রয়েছে। সোমবার প্রস্তাবটি দেওয়ার পরে তার প্রক্রিয়া শুরু হল। তবে বিষয়টি দ্রুত রূপায়ণের বিষয়ে তিনি আশাবাদী।
এ দিন অনুষ্ঠানে দুই বাংলার শিল্প ও সংস্কৃতির আবহমান যোগাযোগের কথা বলেন লেখক সৈয়দ মুজতবা আলির ভাইপো সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলি। দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এই বর্ষীয়ান কূটনীতিকই ১৯৯৯-এ বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবটি রাষ্ট্রপুঞ্জে উত্থাপন করেছিলেন। তিনি জানান— ভাল ইংরেজি বলেন বলে কেউ তাঁর চাচার প্রশংসা করলে, তিনি জবাব দিতেন, ‘‘ইংরেজি বলতে হয় পেটের দায়ে। আর বাংলাটা বলি প্রাণের টানে!’’
ঢাকার প্রবীণ সম্পাদক আবেদ খান বলেন, শিল্প-সাহিত্যের পণ্যায়ন ও ধর্মের অনুপ্রবেশ দু’দেশের আদান-প্রদানে দেওয়াল তুলছে। এ ক্ষেত্রে দু’দেশেই অসাম্প্রদায়িক সুরটি ধরে রাখায় গুরুত্ব দেন তিনি। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক শিল্প-সাহিত্যের ধারাটির সম্পর্কে বলেন জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শফি আহমদ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্যের প্রধান সামন্তক দাস বলেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাহিত্য অভাবনীয় গতিতে এগিয়ে চলেছে। কিন্তু প্রশ্ন হল— এ বাংলার পাঠকের কাছে তা কতটা পৌঁছচ্ছে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy