Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Suvendu Adhikari

সমান্তরাল জনসংযোগে শুভেন্দুর অনুগামীরা

সোমবার দুপুরে জামবনির গিধনি অঞ্চলের চারিচাকা গ্রামে মাধ্যমিকে কৃতী মন্দিরা মুর্মুর বাড়িতে হাজির হন শুভেন্দুর অনুগামীরা। সকলেরই গলায় ঝোলানো ছিল শুভেন্দুর ছবি।

‘দাদা’র ছবি গলায় ঝুলিয়েই কৃতীর বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র

‘দাদা’র ছবি গলায় ঝুলিয়েই কৃতীর বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২০ ০৪:২২
Share: Save:

আশাভঙ্গ হয়েছে। ভার্চুয়াল দেওয়ালে আছড়ে পড়েছে সেই ক্ষোভ। তবে ঝাড়গ্রামে শুভেন্দু-শিবিরের সমান্তরাল জনসংযোগ কিন্তু থেমে নেই। অনুগামীদের আশা মতো শুভেন্দু অধিকারীকে জঙ্গলমহলের তৃণমূলের একক সাংগঠনিক দায়িত্বে ফেরানো হয়নি। উল্টে দলীয় পর্যবেক্ষক পদটাই তুলে দিয়েছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ শুভেন্দু অনুগামীরা সমাজমাধ্যমে সরব হয়েছিলেন আগেই। এ বার মাধ্যমিকে কৃতী এক আদিবাসী পড়ুয়ার বাড়িতে হাজির হয়ে শুভেন্দুর তরফে সংবর্ধনা জানালেন তাঁরা, হাতে তুলে দিলেন উপহার।

সোমবার দুপুরে জামবনির গিধনি অঞ্চলের চারিচাকা গ্রামে মাধ্যমিকে কৃতী মন্দিরা মুর্মুর বাড়িতে হাজির হন শুভেন্দুর অনুগামীরা। সকলেরই গলায় ঝোলানো ছিল শুভেন্দুর ছবি। তাঁরা শুভেন্দুর পাঠানো একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান শাখার যাবতীয় পাঠ্যবই তুলে দেন দরিদ্র চাষি পরিবারের মেয়ে মন্দিরার হাতে। গিধনি এলোকেশী হাইস্কুলের ওই ছাত্রী এ বার মাধ্যমিকে ৬৫১ ‌নম্বর পেয়ে স্কুলের সেরা হয়েছে মন্দিরা।

এই কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন কৃষি দফতরের কর্মী স্নেহাশিস ভকত। শুভেন্দু-অনুগামী স্নেহাশিস, শান্তনু মাহাতো, সৌমেন আচার্য, সুমন দাসরা বলছেন, ‘‘শুভেন্দুদা দলীয় দায়িত্বে থাকলেন কী থাকলেন না সেটা বড় কথা নয়। জঙ্গলমহলে দাদার সামাজিক কাজ বহু আগে থেকে চলছে। জঙ্গলমহলের মানুষ শুভেন্দুদাকে ভালবাসেন‌, বিশ্বাস করেন। ওঁকে ‘জঙ্গলমহলের কুটুম’ নামেও অনেকে ডাকেন।’’ সৌমেনরা জানাচ্ছেন, মানুষের সেই ভালবাসার মর্যাদা দিতে শুভেন্দুর প্রতিনিধি হিসেবে তাঁরা সামাজিক কর্মসূচি করছেন‌। বই পেয়ে মন্দিরা বলছে, ‘‘খুব উপকার হল। একাদশে বিজ্ঞান নিয়েই পড়তে চাই। তবে কোথায় ভর্তি হব এখনও ঠিক করিনি।’’

লোকসভা ভোটে ঝাড়গ্রাম আসনে দলীয় বিপর্যয়ের পরে শুভেন্দুকে ঝাড়গ্রাম জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেন মমতা। শুভেন্দু জেলায় সাংগঠনিক কাজও শুরু করেছিলেন। গত বছর নভেম্বরের শেষ নাগাদ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারপর থেকে শুভেন্দু জেলায় রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। বিধানসভা ভোটের আগে ফের শুভেন্দুকে জেলার একক সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছিল। তা অবশ্য হয়নি।

এই আবহে শুভেন্দু অনুগামীদের ‘সামাজিক কাজ’ আদতে জঙ্গলমহলে সমান্তরাল জনসংযোগ বজায় রাখা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে এ নিয়ে তৃণমূলের নব-নির্বাচিত জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মুর বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। না জেনে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’’ জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান বিরবাহা সরেন অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের দলের সর্বময় নেত্রী একজনই, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেত্রীর নির্দেশে আমরা সবাই মানুষের কাজ করছি। কর্মীরা কেউ নেত্রীর আদর্শে সামাজিক কাজ করতেই পারেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suvendu Adhikari Politics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE