কয়েকটি খাওয়ার টেবিল! বদলে দিচ্ছে এত বছরের বঞ্চনার ছবিটা।
এতগুলো বছর ধরে পুরুলিয়া মানসিক হাসপাতালের রোগীরা মেঝেতে বসেই খাবার খেতেন। চারপাশে খাবার ছড়াত। মেঝের নোংরা থেকে সেই খাবার তুলে মুখে ভরতেন ওঁরা। খাবারের থালার পাশ দিয়েই পরিবেশনকারী, নার্স, কখনও বা পর্যবেক্ষণকারী দল যাওয়া-আসা করতেন। অভিযোগ, মানুষগুলোর খারাপ লাগা নিয়ে কোনও ভ্রূক্ষেপই ছিল না কর্তৃপক্ষের। খাবারের থালার সঙ্গে থাকত একটি প্লাস্টিকের মগ। সেই মগে বরাদ্দ হত চা এবং দুধ। আবার সেই মগ নিয়েই শৌচাগারে যেতেন ওঁরা। মানবাধিকার কর্মীদের দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে অবশেষে ছবিটা বদলাল। খাওয়ার টেবিল এল। মগগুলি বরাদ্দ হল শুধু চা-দুধ খাওয়ার জন্য। খাওয়ার পরে সেগুলি ফেরত যাওয়া শুরু হল রান্নাঘরে।
পুরুলিয়া মানসিক হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলাদের মোট চারটি বিভাগ রয়েছে। প্রতি বিভাগে টানা বারান্দার মেঝেতে ১৫০-১৬০ জন রোগীর বসে খাওয়ার ব্যবস্থা হত। মনোরোগীদের নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে সম্প্রতি বদলে গিয়েছে খাওয়ার পুরনো ব্যবস্থা। সংস্থার বারবার তদ্বিরে স্বাস্থ্য ভবন থেকেও পরিদর্শন করে গিয়েছেন আধিকারিকেরা। এর পরেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, আলাদা ডাইনিং হল তৈরি করা হবে রোগীদের জন্য। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সিনিয়র প্রোজেক্ট ম্যানেজার শুক্লা দাস বড়ুয়া বলেন, ‘‘এটা ওঁদের জয়। তবে ডাইনিং হল তৈরি সময় সাপেক্ষ। তাই আপাতত টেবিলের ব্যবস্থা করা হল।’’ ঠান্ডায় আর মাটিতে বসে খেতে হবে না বলে খুশি কৃষ্ণা, জয়া, শান্তিময় এবং দেবাশিসেরা।
মানবাধিকার কর্মী রত্নাবলী রায় জানান, পাভলভ এবং বহরমপুর মানসিক হাসপাতালেও বহু চেষ্টার পরে টেবিলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘এটা শুধু খাওয়ার টেবিল নয়। এটা ওঁদের সম্মানের প্রশ্ন।
সামান্য খাবার টেবিল পেতে এত বছর? পুরুলিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিল দত্ত বললেন, ‘‘উত্তর দিতে পারবেন হাসপাতালের সুপার।’’ পুরুলিয়া মানসিক হাসপাতালের সুপারিনটেন্ডেন্ট রঞ্জিত কর বলেন, ‘‘পুরনো হাসপাতাল ভাঙাচোরা অবস্থায় আছে। ধাপে ধাপে কাজ হচ্ছে। টাকা অনুমোদনে সরকারি তরফে দেরির জন্য এই অবস্থা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy