Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নন্দীগ্রাম মামলায় জামিন তপন-সুকুরের

গড়বেতার ছোট আঙারিয়া গ্রামে হত্যাকাণ্ডের মামলায় সিপিএম নেতা তপন ঘোষ, সুকুর আলি বেকসুর খালাস পেয়েছিলেন ২০০৯ সালে। আর তার বছর ছয়েক পরে, সোমবার নন্দীগ্রাম মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:২৭
Share: Save:

গড়বেতার ছোট আঙারিয়া গ্রামে হত্যাকাণ্ডের মামলায় সিপিএম নেতা তপন ঘোষ, সুকুর আলি বেকসুর খালাস পেয়েছিলেন ২০০৯ সালে। আর তার বছর ছয়েক পরে, সোমবার নন্দীগ্রাম মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন তাঁরা।

বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তাপস মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ তপন-সুকুর ছাড়াও এ দিন সিপিএমের আরও চার জনের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে। ওই চার অভিযুক্ত হলেন মেঘনাদ ভুঁইয়া, বিশ্বনাথ দাস, পরেশ মাহাতো ও যদুনাথ মাহাতো।

সিপিএমের নন্দীগ্রাম ‘পুনর্দখল’ পর্বে ২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর গোকুলনগরে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সমর্থকদের মিছিলে হামলার পরে আহতদের গাড়িতে চাপিয়ে অপহরণের অভিযোগ রয়েছে তপন-সুকুরদের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানায়, সোনাচূড়ার কল্পনা মুনিয়ান, যাদব পাল, ভিকেন গায়েনকে গুরুতর আহত অবস্থায় পশ্চিম মেদিনীপুরের দিকে নিয়ে যাওয়ার পথে, এগরা শহরের কাছে স্থানীয় লোকজন গাড়ি আটকান। তাঁরা আহতদের উদ্ধার করেন এবং সিপিএম নেতা-কর্মীদের তুলে দেন পুলিশের হাতে। তপন, সুকুর-সহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করে এগরা থানার পুলিশ। খুনের জন্য অপহরণ-সহ বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু হয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। পরে তদন্তভার নেয় সিআইডি।

তপন-সুকুরদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় এ দিন জানান, ২০০৮ সালে সিআইডি যে-চার্জশিট দেয়, তাতে তপন ঘোষ, সুকুর আলি, মেঘনাদ ভুঁইয়া, সনাতন মাজি, অভিরাম মাহাতো-সহ ন’জনের নাম ছিল না। বাকি পাঁচ জনও পরে জামিন পান। কিন্তু চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি সরকার পক্ষ চার্জশিট থেকে বাদ যাওয়া ন’জনের নাম ফের মামলায় জোড়ার জন্য তমলুক জেলা আদালতে আবেদন জানায়। ১১ মার্চ সেই আবেদন মঞ্জুর হয়। তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন তপন-সুকুরেরা। গত এপ্রিলে হাইকোর্ট তাঁদের আবেদন নাকচ করে দেয়। পরে অভিযুক্ত ন’জনকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় তমলুক আদালত। কিন্তু তাঁরা হাজির হননি। তখন তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ওই আদালত। গত ২৫ জুন অভিযুক্তেরা তমলুক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (তৃতীয়) সুজয় সেনগুপ্ত ওই ন’জনকে জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে ছোট আঙারিয়া মামলায় জেল খেটেছেন তপন-সুকুর। ২০০১-এ গড়বেতার ছোট আঙারিয়া গ্রামে বক্তার মণ্ডলের বা়ড়িতে বেশ কয়েক জনকে গুম-খুনের অভিযোগ ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। ২০০৯ সালে অবশ্য ওই মামলা থেকে দু’জনই বেকসুর খালাস পান। তপন ও সুকুর দু’জনেই এখন সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সদস্য। নন্দীগ্রামের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত মেঘনাদ ভুঁইয়া ওই দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য।

সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক তরুণ রায় এ দিন বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের ঘটনায় আমাদের জেলার নেতাদের অন্যায় ভাবে জড়ানো হয়েছিল। এটা সাজানো মামলা। প্রথমে তো ওঁদের নাম চার্জশিটেই ছিল না। তৃণমূল ক্ষমতায় এসে ওঁদের নাম মামলায় ঢুকিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tapan Sukur Nandigram CPM High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE