দেশ জুড়ে যে ৫১টি সতীপীঠ রয়েছে, সেগুলির আদলে মন্দির তৈরি করতে চায় তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ। এ জন্য তারাপীঠের পাশে ১০০ একর জমি প্রয়োজন। পর্ষদের দাবি, বন দফতরের সেই জমি চিহ্নিত করে ফেলেছে তারা। মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে বীরভূমের জেলাশাসক এখন বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী ও রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিন্তু এই উদ্যোগকে ঘিরে প্রশাসনের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে। একটি মহলের অভিমত, বন দফতরের জমিকে কোনও কাজে লাগাতে গেলে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগে। তাদের বক্তব্য, সাধারণত জাতীয় স্বার্থে বন দফতরের জমি নেওয়ার রীতি আছে। আবার পরিষেবা ও পরিকাঠামো তৈরির জন্যও বন দফতরের জমি নেওয়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে জমি চাওয়ার কারণ কোনওটাই নয়। তাই অনুমতি পাওয়া মুশকিল।
প্রশ্ন আরও। সরকার বা সরকারি সংস্থা কি কোনও একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্য ধর্মীয় স্থান তৈরি করতে উদ্যোগী হতে পারে? প্রশাসনের ওই মহলের বক্তব্য, অতীতে এ রাজ্যে এমন নজির নেই। তা ছাড়া উন্নয়ন পর্ষদের মতো সরকারি সংস্থা এই কাজ করলে কাল অন্য কোনও সম্প্রদায়ও তাদের জন্য ধর্মীয় স্থান তৈরি করতে নবান্নের কাছে জমি চাইতে পারে।
মন্ত্রী আশিসবাবু বলেন, ‘‘১০০ একর জমি চাওয়া হলেও ৫১পীঠের আদলে ৫১টি মন্দির এবং তার লাগোয়া পরিকাঠামো তৈরির জন্য মোটামুটি ৬০ একর জমি লাগবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বন দফতরের জমি পেতে গেলে যা করতে হবে, তার সবটাই দেখছেন জেলাশাসক।’’
কৃষিমন্ত্রী আশিসবাবু সরাসরি এই প্রশ্নের উত্তর না-দিয়ে বলেছেন, ‘‘তারাপীঠে লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী আসেন। আমরা তাই তারাপীঠকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় পর্যটন হাব তৈরি করতে চাইছি। সেই উদ্দেশ্যেই ৫১ পীঠের আদলে মন্দির তৈরির এই পরিকল্পনা।’’
শাসক দলের স্থানীয় এক নেতার কথায়, ‘‘রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতীকে কেন্দ্র করে দেশ-বিদেশের বহু মানুষ শান্তিনিকেতনে আসেন। ৫১ পীঠের আদলে মন্দির তৈরি হলে তারাপীঠ ধর্মীয় স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পাবে।’’
ধর্মীয় পর্যটন হাবের কথা মাথায় রেখে তারাপীঠ মন্দিরকে নতুন করে সাজাচ্ছে উন্নয়ন পর্ষদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy