Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Mid Day Meal

পড়ুয়াদের পুষ্টি জোগাতে স্কুলে ডিম-সয়াবিনের দাবি

অতিমারির দাপটে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে স্কুল বন্ধ। তাই স্কুলে রান্না করা দুপুরের খাবার পাচ্ছে না পড়ুয়ারা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০৩:৫৯
Share: Save:

করোনার থাবা থেকে রক্ষা পেতে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার সঙ্গে সঙ্গে দেহের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে বলছেন চিকিৎসকেরা। তাই স্কুলপড়ুয়াদের মিড-ডে মিলে শুধু চাল-আলু-ডাল যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন শিক্ষকদের একটি বড় অংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় গরিব পড়ুয়াদের পুষ্টির অভাবে ভোগার আশঙ্কা রয়েছে। অপুষ্টিতে ভুগে ভুগে অনেকের পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়াও আশ্চর্য নয়। এই পরিস্থিতিতে মিড-ডে মিলের দৈনিক বরাদ্দের মধ্যে স্কুলে ডিম বা সয়াবিনের মতো পুষ্টিকর কোনও খাবার রাখতেই হবে।

অতিমারির দাপটে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে স্কুল বন্ধ। তাই স্কুলে রান্না করা দুপুরের খাবার পাচ্ছে না পড়ুয়ারা। তাদের জন্য এখন মাসে দু’‌কেজি আলু এবং দু’‌কেজি চাল দেওয়া হচ্ছে অভিভাবকদের হাতে। চলতি মাসে তার সঙ্গে মাথাপিছু ২৫০ গ্রাম ডাল যুক্ত হয়েছে। অধিকাংশ শিক্ষকদের মতে, এটা পড়ুয়াদের পক্ষে যথেষ্ট নয়। রাজ্যে মিড-ডে মিলের আওতায় রয়েছে অন্তত ১৫ লক্ষ পড়ুয়া। তাদের অনেকেই গরিব। শিক্ষকদের একাংশ চান, মিড-ডে মিলের চাল-আলুর সঙ্গে পড়ুয়াদের জন্য ডিম বা সয়াবিনের প্যাকেট দেওয়া হোক। সারা মাসে ২৫০ গ্রাম ডালে পড়ুয়াদের কতটুকু পুষ্টি হবে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেক শিক্ষক।

ওই শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, স্কুল বন্ধ থাকায় মিড-ডে মিলের জন্য সরকারের খরচ কমে গিয়েছে। তাই অনায়াসেই ডিম বা সয়াবিন দেওয়া যেতে পারে। এখন দুপুরের খাবারের জন্য প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের মাথাপিছু বরাদ্দ চার টাকা ৯৭ পয়সা। মাসে স্কুল ২৩ দিন খোলা থাকে, এই হিসেবে পড়ুয়া-পিছু মিড-ডে মিলের মাসিক খরচ ১১৪ টাকা। উচ্চ প্রাথমিকে মাথাপিছু মিড-ডে মিলের বরাদ্দ সাত টাকা ৪৫ পয়সা। সেই হিসেবে পড়ুয়া-পিছু মাসিক খরচ ১৭১ টাকা। শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে এত দিন শুধু চাল-আলু দেওয়া হচ্ছিল। এ বার তার সঙ্গে ২৫০ গ্রাম ডাল যুক্ত হওয়ায় পড়ুয়া-পিছু খরচ হচ্ছে ৬৭ টাকা। অর্থাৎ প্রাথমিকের পড়ুয়ার ক্ষেত্রে ৪৭ টাকা এবং উচ্চ প্রাথমিকের পড়ুয়ার ক্ষেত্রে ১০৪ টাকা বেঁচে যাচ্ছে। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হণ্ডা বলেন, “ক্লাস চললে মিড-ডে মিলের জন্য যে-খরচ হয়, স্কুল বন্ধ থাকায় তা অনেক কমে গিয়েছে। করোনা আবহে পুষ্টিকর খাদ্য জরুরি। তাই খরচ না-কমিয়ে প্রত্যেক পড়ুয়াকে চাল-আলুর সঙ্গে পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। এতে লক্ষ লক্ষ গরিব পড়ুয়া উপকৃত হবে।”

এ বার মিড-ডে মিলের চাল-আলু-ডালের সঙ্গে স্যানিটাইজ়ার বা হাতশুদ্ধিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ২২ টাকার সেই হাতশুদ্ধিকে কেন খাদ্যের বরাদ্দের মধ্যে ধরা হবে, প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকদের একাংশ। আনন্দবাবু বলেন, “মিড-ডে মিল থেকে হাতশুদ্ধির খরচ বাদ দেওয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছি।” মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে মিড-ডে মিলের মাধ্যমে দু’‌বেলা পুষ্টিকর খাদ্য পেলে প্রত্যন্ত এলাকার গরিব পড়ুয়ারা খুবই উপকৃত হবে। আমরা চাই, ক্লাস চলাকালীন পড়ুয়াদের খাবারের জন্য যে-পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ থাকে, স্কুল বন্ধ থাকার সময়েও অন্তত সেটুকু বহাল থাকুক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mid Day Meal Coronavirus Lockdown Egg Soybean
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE