Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ত্যাগ-সেবায় নিবেদিত জীবনকে প্রণাম শহরে

ভগিনী নিবেদিতার জন্মের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে রবিবার বাগবাজার সর্বজনীনের মাঠে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল শ্রী সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশন।

সান্নিধ্য: আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত ব্রায়ান ম্যাকেলডাফের সঙ্গে শ্রী সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রব্রাজিকা অজয়প্রাণা (ডান দিকে বসে) এবং সাধারণ সম্পাদিকা প্রব্রাজিকা অমলপ্রাণা (বাঁ দিকে)। ভগিনী নিবেদিতার জন্মের সার্ধশতবর্ষে রবিবার বাগবাজার সর্বজনীনের মাঠে এক অনুষ্ঠানে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

সান্নিধ্য: আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত ব্রায়ান ম্যাকেলডাফের সঙ্গে শ্রী সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রব্রাজিকা অজয়প্রাণা (ডান দিকে বসে) এবং সাধারণ সম্পাদিকা প্রব্রাজিকা অমলপ্রাণা (বাঁ দিকে)। ভগিনী নিবেদিতার জন্মের সার্ধশতবর্ষে রবিবার বাগবাজার সর্বজনীনের মাঠে এক অনুষ্ঠানে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২৯
Share: Save:

তিনি আদতে আইরিশ কন্যা। কিন্তু তিনিই এক সময়ে হয়ে উঠেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দের মানসকন্যা। ভারতের মেয়েদের শিক্ষিত করে তোলা থেকে পরাধীন ভারতের মুক্তি, শিক্ষার প্রসারে তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। সেই ভগিনী নিবেদিতার জন্মের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে রবিবার বাগবাজার সর্বজনীনের মাঠে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল শ্রী সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশন।

এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বামী বাগীশানন্দ, শ্রী সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রব্রাজিকা অজয়প্রাণা, সাধারণ সম্পাদিকা প্রব্রাজিকা অমলপ্রাণা, রামকৃষ্ণ সারদা মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যাভবনের অধ্যক্ষা প্রব্রাজিকা ভাস্বরপ্রাণা, নিবেদিতা স্কুলের সম্পাদিকা প্রব্রাজিকা দেবপ্রাণা এবং আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত ব্রায়ান ম্যাকেলডাফ, আইআইইএসটি শিবপুরের ডিরেক্টর অজয় রায়। প্রত্যেকেই নিজেদের বক্তব্যে তুলে ধরেন, সুদূর আয়ারল্যান্ডের মিস মার্গারেট নোবেল কী ভাবে ত্যাগ ও সেবার মাধ্যমে হয়ে উঠেছিলেন ভারতের ‘ভগিনী নিবেদিতা’।

এ দিনের অনুষ্ঠানে তাঁর ভাষণে স্বামী বাগীশানন্দ বলেন, ‘‘রামকৃষ্ণদেবের সমস্ত শিক্ষা ও বাণীকে যে দু’টি মাত্র শব্দের মাধ্যমে স্বামী বিবেকানন্দ বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছিলেন, সেই ‘ত্যাগ’ ও ‘সেবা’কেই নিজের জীবনে বাস্তবায়িত করে গিয়েছিলেন ভগিনী নিবেদিতা।’’

লেখাপড়া শেষ করে শিক্ষিকার জীবিকা গ্রহণ করলেও আজীবন ধার্মিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত মার্গারেটের মনে ধর্ম সম্পর্কে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। তিনি ভাবতে শুরু করেন, সত্যিই কি এমন কেউ নেই, যিনি ধর্মের প্রকৃত সত্যকে ব্যাখ্যা করতে পারেন? ঠিক সেই সময়েই স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গে দেখা হয় মার্গারেটের। এর পরে স্বামীজির কাছে স্বদেশে স্ত্রীশিক্ষার প্রসার ও অন্যান্য সেবার কথা শুনে ভারতে আসার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন ওই বিদেশিনি। শেষে তিনি এসে পৌঁছন কলকাতায়। ওঠেন বাগবাজারে।

এ দিন বাগবাজারের বোসপাড়া লেনে সংস্কার হওয়া নিবেদিতার বাড়ি ঘুরে দেখে প্রশংসা করেন আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘‘আমি গর্বিত যে, আমার পূর্বপুরুষ আয়ারল্যান্ডে নিবেদিতার বাড়ির কাছেই থাকতেন। কলকাতার এই বাড়ি দেখে খুব শান্তি পেলাম।’’ নিবেদিতা যে সময়ে পরাধীন ভারতে আসেন, তখন তা ছিল ব্রিটিশদের উপনিবেশ। স্বামী বিবেকানন্দ এবং ভগিনী নিবেদিতা এই পরাধীনতাকে দেশ ও জাতির বিকাশের অন্তরায় মনে করতেন বলে এ দিনের ভাষণে জানান প্রব্রাজিকা ভাস্বরপ্রাণা। তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয়রা নিজেদের অসহায় বলে মনে করতেন। নারী এবং জনসাধারণ ছিলেন সর্বাধিক উৎপীড়িত ও দুর্দশাগ্রস্ত। এঁদের মুক্তির জন্যই নিবেদিতার ভারতে আগমন।’’ অজয়বাবু তাঁর ভাষণে স্বদেশপ্রেম ও ত্যাগের পাশাপাশি ভারত জুড়ে বিজ্ঞানচর্চা ও উচ্চশিক্ষার প্রসারে ভগিনী নিবেদিতার অবদানের কথা বারবার উল্লেখ করেন। সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে নিবেদিতা স্কুলের ১৫০ জন ছাত্রী ওই অনুষ্ঠানে সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE