কৃষ্ণগঞ্জে বিজেপির মিছিল।
রাজ্যের আর কোথাও হোক বা না হোক, নদিয়ায় আসন্ন লোকসভা ভোটে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি যে বড় নির্ধারক হতে যাচ্ছে, তা কার্যত স্পষ্ট।
এবং এই লড়াইয়ে মতুয়ারা কার সঙ্গে রয়েছেন, তার প্রমাণ দেওয়ার দ্বৈরথও শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে মতুয়াদের সঙ্গে নিয়ে একাধিক বার রেল ও পথ অবরোধের কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। বুধবার মতুয়াদের একটি অংশকে রাস্তায় নামিয়ে পাল্টা দিল বিজেপিও। কৃষ্ণগঞ্জের ভাজনঘাট মোড়ে মতুয়াদের সঙ্গে নিয়ে মিছিল করল তারা।
এ দিনই কৃষ্ণনগরে মিছিল ও পথসভা করেন টিএমসিপি-র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত। সেখানেও অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জির প্রয়োগ নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক ছিল কেন্দ্রে। করিমপুর বাসস্ট্যান্ডে পথসভায় তৃণমূল বিধায়ক মহুয়া মৈত্র বলেন, ‘‘যারা ও পার থেকে এসে জমি কিনে, মেয়ের বিয়ে দিয়ে, পড়াশোনা করে, চাকরি করে সুস্থ জীবনযাপন করছেন, ওরা তাঁদেরও পাঠিয়ে দিতে চাইছে। প্রত্যেকটি জায়গায় বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।’’
কৃষ্ণনগরে জয়া দত্ত।
পঞ্চায়েত ভোটে ভাল রকম সাফল্য পাওয়ার পরে নদিয়ার দু’টি লোকসভা আসন জিততে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি। বারবার তাদের নেতারা এই জেলায় এসে সভা করছেন। আগের সপ্তাহেই এসেছিলেন দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এ দিন চাকদহে সভা করতে আসার মুখে তৃণমূলের বাধার মুখে পড়েন রাজ্য নেতা শমীক ভট্টাচার্য। ‘ওদের জন্য আবার আমরা দেশছাড়া হব’ বলে চিৎকার করতে থাকেন কেউ-কেউ। ইট মেরে গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
এ দিন বিজেপির মিছিলে এসে কৃষ্ণগঞ্জের মতুয়া সম্প্রদায়ের অন্যতম মাথা গোপাল অধিকারী বলেন, “শুধু মতুয়া কেন, আমরা চাই বাংলাদেশ থেকে আসা সমস্ত হিন্দুকে নাগরিকত্ব দেওয়া হোক। বিজেপি তা-ই বলছে।” কিন্তু অসমে ‘অবৈধ’ তালিকায় যে কয়েক লক্ষ মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরও নাম রয়েছে? জবাব আসে, “রাজনাথ সিংহ তো বলেই দিয়েছেন যে এ ক্ষেত্রে সংশোধন করা হবে। আমাদের কোনও ভয় নেই।”
বিজেপি আপাতত বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষদের ‘শরণার্থী’ ও ‘অনুপ্রবেশকারী’— এই দুই গোত্রে বিভাজন করতে ব্যস্ত। প্রথম গোত্রের লোকেদের থাকতে দিতে তাঁদের আপত্তি নেই। কিন্তু কারা শরণার্থী? যে হিন্দুরা স্রেফ জীবিকার তাগিদে বা অন্য কোনও কারণে চলে এসেছেন? তাঁদের তবে ফিরিয়ে দেওয়া হবে? বিজেপির দক্ষিণ সাংগঠনিক নদিয়া জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকার এ বার উল্টো সুর ধরেন, “হিন্দুরা যে জন্যই আসুক, তাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে। কারণ ভারতই পৃথিবীতে এক মাত্র হিন্দু রাষ্ট্র!” এ তথ্য তিনি কোথায় পেলেন, তা অবশ্য জানা যায়নি।
দুই চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ সহ দক্ষিণবঙ্গের খবর, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা খবর, বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের খবর পেয়ে জান আমাদের রাজ্য বিভাগে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy