Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জালের কারবারে ঠিক নেই ঠিকানার

যে শংসাপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে সিআইডি, সেগুলির একটি হল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব প্যারামেডিক্যাল সোসাইটি। তারা রামশঙ্করকে ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন মেডিসিন এবং ব্যাচেলর অব সায়েন্স বায়োকেম-এর শংসাপত্র দিয়েছে। শংসাপত্রে ৭৩ ডক্টর্স লেন, কলকাতা ৭০০০১৪-র ঠিকানা রয়েছে।

জাল শংসাপত্র। —নিজস্ব চিত্র।

জাল শংসাপত্র। —নিজস্ব চিত্র।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৭ ০৩:৫৪
Share: Save:

ভুয়ো চিকিৎসক যেখান থেকে জাল শংসাপত্র পেয়েছেন, সেই সংস্থার ঠিকানাটাও জাল।

সোমবার বাউড়িয়া থেকে ধৃত জাল চিকিৎসক রামশঙ্কর সিংহের হেফাজত থেকে যে যে শংসাপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে সিআইডি, সেগুলির একটি হল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব প্যারামেডিক্যাল সোসাইটি। তারা রামশঙ্করকে ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন মেডিসিন এবং ব্যাচেলর অব সায়েন্স বায়োকেম-এর শংসাপত্র দিয়েছে। শংসাপত্রে ৭৩ ডক্টর্স লেন, কলকাতা ৭০০০১৪-র ঠিকানা রয়েছে।

মঙ্গলবার তালতলায় গিয়ে দেখা গেল ৭৩ ডক্টরস লেনের বাড়িতে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব প্যারামেডিক্যাল সোসাইটিস নামে কোনও সংস্থার অফিস নেই। কস্মিনকালে ছিলও না। সেটি একটি একশো বছরের পুরনো দোতলা বাড়ি। ৭২ এবং ৭৩ নম্বর বাড়ি একেবারে গা ঘোঁষাঘেষি। ৭৩ নম্বরের নিচের তলায় গয়না তৈরির কারখানা। উপরের তলায় এক পরিবারের বসবাস। নিচের তলায় এক বৃদ্ধকে জিজ্ঞাসা করায় তিনি বলেন, ‘‘প্যারামেডিক্যাল সোসাইটি বলে এখানে কিছু নেই। পঞ্চাশ বছর ধরে বাস করছি। নামটা প্রথম শুনলাম।’’

রামশঙ্করের আর একটি শংসাপত্র রয়েছে হাওড়া অ্যান্ড সেন্ট্রাল ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজের নামে। ঠিকানা দেওয়া আছে শঙ্করমঠ, রামরাজাতলা হাওড়া এবং কলেজ স্কোয়ার ওয়েস্ট। কোনও বাড়ির নম্বর তাতে নেই। অন্য একটি শংসাপত্রে প্রতিষ্ঠানের ঠিকানাই দেওয়া নেই।

কলেজ স্কোয়ারের ঠিকানায় গিয়ে কিছুই মিলল না। কলেজ স্কোয়ারের পশ্চিম প্রান্তে সার দিয়ে বইয়ের দোকান। একাধিক দোকানে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরাও থ। প্রত্যেকের কথায়, ‘এ রকম নাম প্রথম শুনছি।’ আর হাওড়ার রামরাজাতলা এলাকায় জনে জনে জিজ্ঞাসাবাদ করেও প্রতিষ্ঠানের খোঁজ মেলেনি।

সিআইডি অফিসারেরা জানাচ্ছেন, ঠিকানা জাল হওয়াতে সংস্থাগুলিকে খুঁজে বের করতেও সমস্যা হচ্ছে। ‘‘ধৃতদের কাছে পাওয়া বিভিন্ন ফোন নম্বরের সূত্র ধরে আমরা ওই সব সংস্থার পান্ডাদের কাছে পৌঁছতে চাইছি,’’ মন্তব্য এক অফিসারের।

রামশঙ্করকে এদিন বিধাননগর আদালতে পেশ করা হলে তাঁর গ্রেফতারের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী সৌম্যজিত রাহা। দাবি করেন, শুধু মাত্র সাধারণ ডায়েরির ওপর দাঁড়িয়ে রামশঙ্করকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এফআইআর দায়ের না হলে কাউকে গ্রেফতার করা যায় না। বিচারক সিআইডির ব্যাখ্যা তলব করেন। পরে রামশঙ্করকে আট দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Fake certificate স্বাস্থ্য
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE