Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

মোদীর সভায় দুর্ঘটনার অভিযোগকারী হঠাৎ ‘উধাও’

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সভার পর থেকে তাঁকে আর দেখা যাচ্ছে না।

মেদিনীপুরে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সভার শেষে ভেঙে পড়ে দ্বিতীয় কাঠামোটি।

মেদিনীপুরে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সভার শেষে ভেঙে পড়ে দ্বিতীয় কাঠামোটি।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫৮
Share: Save:

পরিজনেরা বলছেন, দু’সপ্তাহ বাড়িতে নেই তিনি।

এলাকাবাসীর অবশ্য দাবি, গত রবিবারও সেলুন খুলেছিলেন। কিন্তু সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সভার পর থেকে তাঁকে আর দেখা যাচ্ছে না।

হঠাৎ যেন ‘উধাও’ হয়ে গিয়েছেন মেদিনীপুর শহরের গোলকুয়াচকের যুবক ইন্দ্রজিৎ হাজাম। বছর বত্রিশের এই যুবকই নরেন্দ্র মোদীর সভায় শামিয়ানা ভেঙে দুর্ঘটনার অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে পুলিশের এক সূত্রের দাবি। তার ভিত্তিতে সভার আয়োজক বিজেপি এবং ডেকরেটর সংস্থার বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টা-সহ চারটি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে পরে তদন্তভার গিয়েছে সিআইডির হাতে।

প্রধানমন্ত্রীর সভা যেখানে হয়েছে, সেই কলেজ-কলেজিয়েট স্কুল মাঠ থেকে গোলকুয়াচকের দূরত্ব মেরেকেটে আধ কিলোমিটার। গোলকুয়াচকেই সেলুন ইন্দ্রজিতের। বাবা মারা গিয়েছেন। গলির মধ্যে এক চিলতে বাড়িতে বৃহস্পতিবার দুপুরে গিয়ে ইন্দ্রজিতের মা ও বোনের দেখা মিলল। তবে ইন্দ্রজিৎ নেই।

ইন্দ্রজিৎ কোথায়? মা বাসন্তীদেবী জবাব, “ছেলে ঘরে নেই।” কবে থেকে? এ বার এগিয়ে এলেন বোন কবিতা। তাঁর দাবি, “সপ্তাহ দু’য়েক হল দাদা বাড়িতে নেই। কোথায় গিয়েছে জানি না।” ইন্দ্রজিৎ তাহলে মোদীর সভায় যাননি? কবিতার জবাব, “মোদীর সভায় তো আমি নিজে গিয়েছিলাম। ভিড়ের চাপে মাঠে ঢুকতে পারিনি। দাদার সঙ্গে দেখা হয়নি।” দাদা যে পুলিশে অভিযোগ করেছেন জানেন? কবিতা বলেন, ‘‘শুনেছি। কেন যে অভিযোগ করল জানি না।’’

অভিযোগকারীর রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও শুরু হয়েছে চাপানউতোর। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলেন, “ওই যুবক তৃণমূলের কর্মী। পুলিশই ওকে দিয়ে অভিযোগ করিয়েছে।” ইন্দ্রজিতের সেলুনের অদূরে যুব তৃণমূলের কার্যালয়। এলাকাবাসীও জানালেন, ইন্দ্রজিৎ তৃণমূল কর্মী। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সৌরভ বসুর ঘনিষ্ঠ। দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে ইন্দ্রজিৎকে দেখা যায়। প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগের দিন মেদিনীপুরে মোদীর কুশপুতুল যাঁর নেতৃত্বে পোড়ানো হয়েছিল, সেই সৌরভের অবশ্য দাবি, “ওই যুবক দলের কেউ নন। বিজেপির কর্মী।”

তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিও বলেন, “ওই যুবকের সঙ্গে দলের কোনও যোগাযোগ নেই। উনি বিজেপি করেন বলেই জেনেছি।”

কিন্তু বিজেপি কর্মী কেন বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন? সদুত্তর নেই তৃণমূল নেতাদের কাছে। আর বিজেপির জেলা সভাপতির কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূল নেতারা কী বলতে কী বলছেন, নিজেরাই বুঝছেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE