Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

গোড়ালি ভেজা খাদই সরকারি তথ্যে পুকুর!

স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করলেন, পুকুর কাটার কাজ কিন্তু সত্যিই শুরু হয়েছিল। জমি দিয়েছেন পরেশ দাস। তিনি জানালেন, একশো দিনের কাজে পুকুর খোঁড়ার কাজ হওয়ার কথা ছিল।

প্রকল্পের বোর্ড দিয়ে তৈরি শৌচাগারের দরজা। নিজস্ব চিত্র

প্রকল্পের বোর্ড দিয়ে তৈরি শৌচাগারের দরজা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদাদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৯ ০৪:৫১
Share: Save:

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, টলটলে জল ভরা একটি পুকুর রয়েছে। যে পুকুরে মাছ চাষও করা হয়। কিন্তু যেখানে সেই পুকুর থাকার কথা, জলপাইগুড়ি শহর ঘেঁষা সেই মোহিতনগরের মুন্ডাবস্তিতে আসলে রয়েছে একটি অগভীর লম্বাটে খাদ। বৃষ্টির জলে তা এখন ভরে রয়েছে ঠিকই। কিন্তু তাতে পায়ের পাতা, বড় জোর গোড়ালির বেশি ভেজে না। বৃষ্টি না থাকলে শুকনো খটখটে হয়ে থাকে। ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্পে খোঁড়া পুকুরের এমনই হাল জলপাইগুড়িতে।

স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করলেন, পুকুর কাটার কাজ কিন্তু সত্যিই শুরু হয়েছিল। জমি দিয়েছেন পরেশ দাস। তিনি জানালেন, একশো দিনের কাজে পুকুর খোঁড়ার কাজ হওয়ার কথা ছিল। পরেশ বলেন, “কোনও বছর চার দিন, কোনও বছর পাঁচ দিন করে পুকুর খোঁড়ার কাজ হয়েছে। গত বছর এক দিনও কাজ হয়নি।’’ তিনি জানান, হঠাৎ এক দিন প্রশাসন থেকে এসে বোর্ডও লাগিয়ে দিল। তাঁর কথায়, ‘‘ওই বোর্ড দেখে বুঝলাম, কাজ শেষ ধরে নিয়ে বোর্ড লাগানো হয়েছে।“ সেই বোর্ড কই? খোঁজ করতে দেখা গেল, টিনের বোর্ড এখন পাশেই একটি বাড়ির শৌচাগারের দরজা। এক বাসিন্দার কথায়, “পুকুরই তো নেই, বোর্ড রেখে কী হবে?”

জেলা প্রশাসনের দাবি, একশো দিনের কাজে জলপাইগুড়ি জেলায় ১ হাজার ৬৮টি পুকুর খোঁড়া হয়েছে। সাড়ে চার বিঘা জমিতে খোঁড়া মুন্ডাবস্তির পুকুরটি তারই একটি। নিয়ম মতো, এমন গভীর পুকুর খোঁড়ার কথা, যেখানে সারা বছর জল থাকবে। বৃষ্টির জল যাতে পুকুরে এসে জমে, তার ব্যবস্থাও থাকবে। মাছ চাষ হবে। তাতে বাসিন্দাদের আয় হবে। সেখানে এটি সারা বছর খটখটে। বৃষ্টি দু’দিন বন্ধ থাকলেই কাদা জমে যায়।

এখানে মাছ চাষ হয়? পরেশ বললেন, “সরকারি প্রকল্পে তো তাই ছিল। তবে আমাকে মাছের চারা দেওয়া হয়নি।” এলাকার এক বাসিন্দার কথা, ‘‘দিয়েই বা কী হবে? জলই থাকে না।’’ তাঁদের দাবি, সরকারি পরিদর্শন হলে অবস্থাটা ঠিক কী, তা টের পেত প্রশাসন। কিন্তু গত দু’বছরে পুকুর দেখতে কোনও সরকারি দল আসেনি বলে অভিযোগ। সদর ব্লকের বিডিও তাপসী সাহার মন্তব্য, “খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে, ঠিক কী হয়েছে।”

তবে সত্যি যাই হোক না কেন, জেলার একশো দিনের কাজের হিসেবে দেখা যাচ্ছে, পুকুরটিতে সারা বছর জল কানায় কানায় ভরা থাকে, তাতে মাছেদের দিব্যি সংসার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jal Dharo Jal Bharo Govt Project Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE